পরিচালক উধাও হওয়ায় আটকে রাখা হয় নাটকের দলকে

‘মেঘমায়া’ নাটকের শুটিংয়ে প্রসূন আজাদ ও শ্যামল মাওলা
‘মেঘমায়া’ নাটকের শুটিংয়ে প্রসূন আজাদ ও শ্যামল মাওলা

শুটিংবাড়ির ভাড়া, শুটিংয়ে ব্যবহৃত গাড়ির ভাড়া, শুটিংয়ে খাবারের খরচের টাকা, এমনকি শিল্পীদের সম্মানী না দিয়ে উধাও হয়ে যান পরিচালক আজাদ কালাম। কিন্তু এসবের জের টানতে হয় প্রসূন আজাদ, শ্যামল মাওলাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে। হোটেলে আটকে রাখা হয় তাঁদের। ঘটনাটি ঘটেছে নেত্রকোনার দুর্গাপুর এলাকায়। গতকাল রোববার রাত দেড়টার দিকে প্রথম আলোর কাছে নিজেদের এই অবস্থার কথা তুলে ধরেন প্রসূন আজাদ।

‘মেঘমায়া’ নাটকের শুটিং করতে ২৫ মে নেত্রকোনার বিরিশিরিতে যায় ২৬ জনের একটি ইউনিট। সেখানে প্রসূন আজাদ, শ্যামল মাওলাসহ কয়েকজন অভিনয়শিল্পী অংশ নেন। তিন দিন শুটিংয়ের পর আজ সোমবার সবার ঢাকায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু পরিচালকের উধাও হয়ে যাওয়ার কারণে অভিনেত্রীসহ পুরো ইউনিটকে দুর্গাপুরের একটি বাংলোতে জিম্মি হয়ে থাকতে হয়।

গতকাল মধ্যরাতে প্রসূন আজাদ বলেন, ‘আজই আমার ঢাকায় ফেরার কথা। কিন্তু এখানে কেউ তাঁদের পাওনা বুঝে না পেলে আমাদের যেতে দেবে না। কী আর করা। এত দিন ধরে অভিনয় করছি, এমন অবস্থায় পড়ব, কখনো কল্পনাও করিনি। এরই মধ্যে পুলিশেরও মুখোমুখি হতে হয়েছে, যা খুব অসম্মানজনক।’

গভীর রাতে দেওয়া ফেসবুক পোস্টে প্রসূন লিখেছেন, ‘রাগে কান্না আসছে। তিন দিন ধরে শুটিং—হোটেল, ট্রান্সপোর্ট, শিল্পী সম্মানী কিছুই দেওয়া হয়নি। পরিচালক কই, কেউ পাচ্ছে না। খুব অসহায় অবস্থায় আছি। আমার শরীরও ভালো না। গুগল করে অ্যাম্বুলেন্সও পাচ্ছি না। আমি আসলে জানি না, কী হচ্ছে। কোনো নিরাপত্তা নেই।’

এদিকে ঘটনাটি সম্পর্কে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া, খাবার আর কটেজের ভাড়া বাবদ এই দলটির বকেয়া ছিল ২৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে পরিচালককেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিষয়টি আমাদের কাছে জানায়। শুনেছি, ওয়াইএমসি ও ওয়াইডব্লিউসি কটেজে নাটকের ইউনিটকে আটকে রাখা হয়েছে। এরপর সকালে টাকা পরিশোধের পর তারা সবাই ছাড়া পেয়েছেন।’

ওয়াইএমসি ও ওয়াইডব্লিউসি কটেজের দায়িত্বে থাকা বিপ্লব রেমা ও লুদিয়া রুমা সাংমা জানান, পরিচালকের খোঁজ নেই। প্রতিষ্ঠানের টাকা বকেয়া রেখে সবাই যখন চলে যেতে চায়, তখন আমরা বলেছি, টাকা না দেওয়া পর্যন্ত কাউকে যেতে দেওয়া সম্ভব না।

পুরো বিষয়টি সম্পর্কে জানতে আজ সোমবার দুপুরে প্রথম আলো যোগাযোগ করে নির্মাতা আজাদ কালামের সঙ্গে। তখন তিনি দুর্গাপুর থেকে ঢাকার পথে। বললেন, ‘যিনি আমার এই নাটকের প্রযোজক, তিনি টাকা পাঠাতে দেরি করায় এত সমস্যার সৃষ্টি হয়। অপ্রীতিকর এই ঘটনার দায় আমার। আমি পুরো ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।’