মঞ্চে নতুন নাটক 'রাজরক্ত'
‘শোষক রাজা সাহেবের নিজের ভাষায়, তাঁর আঙুলগুলো যেমন শক্ত তেমনি কোমল। মিষ্টি করে ধরতে জানে, আবার দম বন্ধ করে দিতে জানে। মিষ্টি কথায় নরম আঙুলের ছোঁয়ায় যাদের তিনি বশে আনতে পারেন না, তাদের রক্তে কী থাকে, সেই কারণটা তিনি খুঁজে বের করতে চান। এর জন্য তাদের সমস্ত রক্ত সংগ্রহ করে ঘেঁটেঘুঁটে দেখেন, কোথায় রোগের জীবাণু লুকিয়ে থাকে। এই রক্তই তাড়া করে রাজা সাহেবকে।’ নতুন নাটক ‘রাজরক্ত’র গল্প এভাবেই জানালেন প্রদ্যুৎ কুমার ঘোষ। মঞ্চের জন্য এই নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। নাটকটির নাট্যকার মোহিত চট্টোপাধ্যায়। সার্বিক তত্ত্বাবধানে আছেন সাইফুল ইসলাম জার্নাল।
ঢাকার মঞ্চে আসছে নতুন নাটক ‘রাজরক্ত’। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে এই নাটকের প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এই নাটকে অভিনয় করছেন প্রাচ্যনাট স্কুল অব অ্যাক্টিং অ্যান্ড ডিজাইনের ৩৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। নাটকটি তাঁদের শিক্ষা সমাপনী প্রযোজনা। এই শিক্ষার্থীদের হাতে সনদপত্র তুলে দেবেন নাট্যজন কেরামত মওলা আর জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ, তেমনটাই জানানো হয়েছে আয়োজকদের পক্ষ থেকে।
‘রাজরক্ত’ নাটক নিয়ে প্রদ্যুৎ কুমার ঘোষ জানান, মোহিত চট্টোপাধ্যায়ের ‘রাজরক্ত’ নাটকটি সফল রাজনৈতিক নাটকের এক অনবদ্য মাইলফলক। রাজনীতির ভেতরের সারবস্তু নিয়ে তিনি মনুষ্যত্বের কথা বলেছেন। রূপকধর্মী এই নাটক তিনি লিখেছেন ১৯৭১ সালে। এই নাটকের ভেতর খুঁজে পাওয়া যায় বর্তমান জীবন আর সমাজের চিত্র। রাজা সাহেবরা যেমন কালে কালে ফিরে আসে, সেই সঙ্গে ফিরে আসে শৃঙ্খল ভেঙে বেরিয়ে আসতে চাওয়া মানুষগুলো। এসব মানুষ সব ভেস্তে আবার মনের মতো করে সাজানোর স্বপ্ন দেখে। যুগে যুগে যেমন রয়েছে রাজা সাহেবের বুলেট, বন্দুক, চাবুক, তেমনি রয়েছে তার বিপক্ষে লাল হয়ে ওঠা চোখ।
প্রদ্যুৎ কুমার ঘোষ বলেন, ‘প্রাচ্যনাট স্কুল সমাপনী নাটকের নির্দেশনায় এটি আমার প্রথম কাজ। অভিনয়ে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য সংলাপ আর দৃশ্যে কিছু সংযোজন এবং বিয়োজন করা হয়েছে। এটি অবশ্যই একটি দলগত প্রচেষ্টা।’