ক্যাটরিনাকে ভক্তদের অপমান!

‘দা-বাং: দ্য ট্যুর-রিলোডেড’ সফরের একটি অনুষ্ঠানে সালমান খান ও ক্যাটরিনা কাইফ
‘দা-বাং: দ্য ট্যুর-রিলোডেড’ সফরের একটি অনুষ্ঠানে সালমান খান ও ক্যাটরিনা কাইফ

কানাডার টরন্টোর রাস্তায় গত সপ্তাহে ভক্তদের কাছ থেকে অপমানসূচক মন্তব্য শুনতে হয়েছে ক্যাটরিনা কাইফকে। জানা গেছে, একদিন সকালে নিজের ম্যানেজার আর দেহরক্ষীদের সঙ্গে নিয়ে টরন্টোতে ফার্স্ট অন্টারিও সেন্টারের পাশের রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলেন ক্যাটরিনা৷ বলিউডের এই জনপ্রিয় নায়িকাকে কাছ থেকে দেখতে পেয়ে তখন সেখানে মুহূর্তেই অনেকে জড়ো হন। ক্যাটরিনা কাইফের সঙ্গে সেলফি তোলার জন্য সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন৷ ধাক্কাধাক্কিও হয়। অনেকেই তাঁকে অনুরোধ করেন, ‘তোমার সঙ্গে একটা ছবি তুলতে চাই ক্যাটরিনা৷’ ‘একটা সেলফি প্লিজ৷’

সেদিন সকালে কাউকে পাত্তা না দিয়ে হেঁটে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন ক্যাটরিনা কাইফ৷ নিজেদের পছন্দের এই নায়িকার কাছ থেকে এমন ব্যবহার পেয়ে সবাই কষ্ট পান। এ সময় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একদল মেয়ে চিৎকার করে বলেন, ‘ক্যাটরিনা, আমরা তোমার সঙ্গে কোনো ছবি তুলতে চাই না, বুঝলে!’

ততক্ষণে নিজের গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে যান ক্যাটরিনা কাইফ। কিন্তু গাড়িতে না উঠে এই অপমানের জবাব দিতে তিনি ফিরে যান সেই মেয়েদের কাছে৷ দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েরাও তাঁকে ছেড়ে দেননি। ক্যাটরিনা তাঁদের কাছে যেতেই মেয়েরা ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘একটু ভালো আচরণ করতে শেখো। তোমার সঙ্গে তাঁরা শুধু ছবি তুলতে চেয়েছে। আর তুমি তাঁদের সবাইকে তুচ্ছ মনে করে এড়িয়ে চলে যাচ্ছ৷ এটা তুমি মোটেই ঠিক করোনি।’

ক্যাটরিনা কাইফ তাঁদের বলেন, ‘তোমাদের বোঝা উচিত, আমি টানা শো করে ক্লান্ত।’

এরপর ক্যাটরিনা কাইফ পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা অন্য ভক্তদের সঙ্গে ছবি তোলেন৷ এ সময় তিনি অটোগ্রাফও দিয়েছেন৷

এ সময় ক্যাটারিনা কাইফকে শুনিয়ে ওই মেয়েরা আরও বলেন, ‘আমরা এখানে তোমার জন্য আসিনি৷ শুধু সালমান খানের জন্য এসেছি৷’

গত ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয় ‘দা-বাং: দ্য ট্যুর-রিলোডেড’ সফর। এই সফরে অংশ নিয়েছেন সালমান খান, ক্যাটরিনা কাইফ, জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ, সোনাক্ষী সিনহা, প্রভু দেবা, ডেইজি শাহ, মনীষ পলসহ আরও অনেকে। সফরের প্রথম শো হয়েছে ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার ইনফিনিট এনার্জি অ্যারেনায়। এরপর সফরের অন্য শোগুলো হয়েছে ২৩ জুন শিকাগোর সিয়ার্স সেন্টার অ্যারেনায়, ২৪ জুন লস অ্যাঞ্জেলেসের দ্য ফোরামে, ২৯ জুন ডালাসে আমেরিকান এয়ারলাইনস সেন্টারে, ৩০ জুন স্যান জোসের স্যাপ সেন্টারে, ১ জুলাই ভ্যাঙ্কুভারে পেন কলোসিয়ামে, ৬ জুলাই ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটাল ওয়ান অ্যারেনায় এবং ৭ জুলাই নিউ জার্সির প্রুডেন্সিয়াল সেন্টারে। এই সফরের শেষ শো অনুষ্ঠিত হয় ৮ জুলাই কানাডার টরন্টোতে ফার্স্ট অন্টারিও সেন্টারে।

কানাডার টরন্টোতে ফার্স্ট অন্টারিও সেন্টারের অনুষ্ঠানে ক্যাটরিনা কাইফ
কানাডার টরন্টোতে ফার্স্ট অন্টারিও সেন্টারের অনুষ্ঠানে ক্যাটরিনা কাইফ

এদিকে এই সফরের শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ক্যাটরিনা কাইফ আর জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজের মধ্যে ঝগড়া হয়। ঝগড়া এমন রূপ নেয় যে একসময় তাঁদের মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনা গুরুতর বুঝতে পেরে এই ঝগড়ার মাঝে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হন সালমান খান। তিনি ছিলেন এই সফরের মূল আকর্ষণ।

ঝগড়ার কারণ, ‘দা-বাং: দ্য ট্যুর-রিলোডেড’ সফরে সালমান খানের পর সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পেয়েছেন ক্যাটরিনা কাইফ। তিনি পান ১২ কোটি রুপি। জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ পেয়েছেন ৮ কোটি রুপি আর সোনাক্ষী সিনহা ৬ কোটি রুপি। ঝামেলার শুরুটা এখানেই। ক্যাটরিনার সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়ার ব্যাপারটি কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ।

একসময় প্রকাশ্যেই তাঁরা ঝগড়া শুরু করেন। খবর পেয়ে সালমান খান সেখানে আসেন। ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয়। বলিউডের জনপ্রিয় এই দুই তারকার মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে যায়। যখনই তাঁরা একে অপরের সামনে আসেন, তখনই তাঁদের ঝগড়া শুরু হয়। তাঁরা প্রত্যেকেই চিৎকার করে কথা বলেন। এ সময় তাঁরা আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করেন। একপর্যায়ে সালমান খানের অনুরোধে এই দুই তারকাকে আলাদা দুই হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। এমনকি শোর সময় তাঁদের যাতে মুখোমুখি হতে না হয়, আয়োজকদের সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য বলেন সালমান খান।

সবকিছু মিলিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয় আয়োজকদের। ক্যাটরিনা কাইফ আর জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজের এই ঝগড়া যাতে এই সফরে কোনোভাবেই প্রভাব না ফেলে, সেদিকটাই ছিল তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।