বকেয়া আদায়ে আলটিমেটাম, কেঁদেছেন প্রযোজকেরা

সংবাদ সম্মেলনে মামুনুর রশীদ
সংবাদ সম্মেলনে মামুনুর রশীদ

কয়েকটি টেলিভিশনের কাছে প্রযোজকদের পাওনা রয়েছে এক শ কোটি টাকারও বেশি। অনেক দিন ধরে নানাভাবে চেষ্টা করার পরও এ ব্যাপারে কোনো সাড়া দিচ্ছে না টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর কর্তৃপক্ষরা। পাওনা আদায়ে টেলিভিশন চ্যানেলের কার্যালয়ে গেলে উল্টো হুমকি দেওয়া হয় প্রযোজকদের। সেই ক্ষোভ আর সংশয় প্রকাশের জন্য আজ বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। সংবাদ সম্মেলনের একপর্যায়ে কেঁদে ফেলেন টেলিভিশন নাটকের কয়েকজন প্রযোজক।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সভাপতি নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক অভিনেতা ইরেশ যাকেরসহ ভুক্তভোগী প্রযোজকেরা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর কাছে নাটকের প্রযোজকদের প্রায় শত কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও তাঁরা বকেয়ার অর্থ আদায় করতে পারছেন না। ইদানীং লক্ষ করা যাচ্ছে, কিছু কিছু টেলিভিশন চ্যানেলের মালিক বেসরকারি অনুষ্ঠান প্রযোজকদের কাছ থেকে অনুষ্ঠান সংগ্রহ করে প্রচারের ব্যাপারে যতটা আগ্রহী, ঠিক ততটাই অনাগ্রহী চুক্তি মোতাবেক অনুষ্ঠান প্রযোজকদের বকেয়া অর্থ পরিশোধের। আবার কেউ কেউ বকেয়ার অর্থ চাইতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ও হয়রানির শিকার হন। প্রযোজকদের বিপুল পরিমাণ অর্থ বকেয়া হয়ে যাওয়ার কারণে এবং নাটকের প্রকৃত নির্মাণ ব্যয়ের বাজেট বৃদ্ধি না হওয়ার ফলে অনেক প্রযোজক নতুন করে অনুষ্ঠান নির্মাণ করতে পারছেন না।

টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সদস্যদের সঙ্গে ভুক্তভোগী প্রযোজকেরা
টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সদস্যদের সঙ্গে ভুক্তভোগী প্রযোজকেরা

ইরেশ যাকের জানান, একুশে টেলিভিশন, এশিয়ান টিভি, চ্যানেল নাইন, দেশ টিভি, এসএ টিভি, মোহনা টিভিসহ এমন আরও কয়েকটি টিভি চ্যানেল থেকে নাটক বাবদ শত কোটি টাকার মতো বকেয়া পড়েছে। এই হিসাব তিনি পেয়েছেন সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে।

এদিকে সম্মেলনে উপস্থিত ভুক্তভোগী প্রযোজকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, এই শত কোটি টাকা বকেয়ার অর্ধেকেরও বেশি পাওনা একুশে টেলিভিশনের কাছে। সংগঠনের সভাপতি ও নাট্যজন মামুনুর রশীদ বলেন, ‘বকেয়া টাকা পরিশোধের বিষয়ে আগামী সাত দিনের মধ্যে কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত চ্যানেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া না গেলে আমরা কঠোর পদক্ষেপে যাব। কারণ, আমাদের আর চুপ করে থাকার সুযোগ নেই।’

ইরেশ যাকের জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বকেয়া আদায়ে কোনো অগ্রগতি না হলে একুশে টেলিভিশনসহ অভিযুক্ত অন্য চ্যানেলগুলোতে নাটক সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে। করা হবে মানববন্ধন। দেওয়া হবে কঠিন আলটিমেটাম। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী প্রযোজকেরা বিষয়টি সমাধানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।