এক উৎসবে দুই দেশের আড়াই হাজার শিল্পী

উদ্বোধনী সন্ধ্যায় ভারতের ড্যান্সারস গিল্ড পরিবেশন করবে নৃত্যনাট্য ‘তোমারই মাটির কন্যা’
উদ্বোধনী সন্ধ্যায় ভারতের ড্যান্সারস গিল্ড পরিবেশন করবে নৃত্যনাট্য ‘তোমারই মাটির কন্যা’

দুই দেশের সাংস্কৃতিক দল নিয়ে ১০ দিনের ‘গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব’ শুরু হবে আগামী শুক্রবার। সেদিন বিকেলে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে উৎসব উদ্বোধন করবেন ভারত ও বাংলাদেশের নাট্যজন বিভাস চক্রবর্তী ও মামুনুর রশীদ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এর আগে নাটকের দল নিয়ে ‘গঙ্গা-যমুনা নাট্য উৎসব’ আয়োজন করা হলেও এখন এর পরিধি বেড়েছে। আয়োজকদের মতে, এটি এখন ‘সাংস্কৃতিক উৎসব’। এবার উৎসবের বাজেট ধরা হয়েছে ১৮ লাখ টাকা।

আজ বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে উৎসবের বিস্তারিত জানানো হয়। উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর, নাট্যজন মান্নান হীরা, ঝুনা চৌধুরী, আকতারুজ্জামান, অনন্ত হিরা, মীর জাহিদ হাসান, নৃত্যশিল্পী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শিরিন ইসলামসহ দেশের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি।

ছয় বছর ধরে ঢাকা এবং কলকাতায় গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব পর্ষদ ‘গঙ্গা-যমুনা উৎসব’ আয়োজন করে আসছে। কলকাতায় হয় শুধু নাট্য উৎসব আর ঢাকায় হয় সাংস্কৃতিক উৎসব। উৎসব পর্ষদের আহ্বায়ক সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘আমরা এই উৎসবে দর্শকের কাছে পৌঁছে দেব দুই বাংলার নাট্য, গীত, নৃত্য ও অভিনয়শৈলী। এতে দুই বাংলার শিল্পী ও কলাকুশলীদের পারস্পরিক বন্ধন আরও দৃঢ় করবে। দুই দেশের অভিন্ন সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং জনগণের মৈত্রীর বন্ধন দৃঢ়তর করার লক্ষ্যে মূলত আয়োজনের উদ্দেশ্য।’

সংবাদ সম্মেলনে উৎসব পর্ষদের আহ্বায়ক সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। ছবি: প্রথম আলো
সংবাদ সম্মেলনে উৎসব পর্ষদের আহ্বায়ক সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। ছবি: প্রথম আলো

৫ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তন, পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তন ও স্টুডিও থিয়েটার মিলনায়তনে চলবে এ উৎসব। উৎসবে মঞ্চনাটক, নৃত্য, আবৃত্তি, সংগীত ও পথনাটকে ভারত আর বাংলাদেশের ৯৬টি দল অংশ নেবে। এতে ভারতের চারটি দলের চারটি নাটকের প্রদর্শনী, ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ২৬টি নাট্যদলের ৩০টি নাটকের প্রদর্শনী এবং উন্মুক্ত মঞ্চে ৯টি পথনাটক, ১৮টি আবৃত্তি সংগঠন, ১৮টি সংগীত সংগঠন, ১৮টি নৃত্য সংগঠনের নৃত্যনাট্য, একক আবৃত্তি ও একক সংগীত পরিবেশনা থাকবে। আয়োজকদের ধারণা, আড়াই হাজার শিল্পী অংশ নেবেন এবার গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসবে। উন্মুক্ত মঞ্চের সাংস্কৃতিক পর্ব প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত এবং মঞ্চনাটক প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হবে। ১২ অক্টোবর সকাল ১০টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে ‘গঙ্গা-যমুনা পাড়ের সংস্কৃতি ও একটি অনুসন্ধান’ শীর্ষক সেমিনার।

উৎসব পর্ষদের সদস্যসচিব আকতারুজ্জামান বলেন, ‘উৎসবের উদ্বোধনের জন্য আমরা দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিভিন্ন জাতীয়ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। অর্থাৎ নাটক, কবিতা, নৃত্যসহ সব অঙ্গনের প্রতিনিধি থাকবেন। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালায় ভারতের ড্যান্সারস গিল্ড পরিবেশন করবে জোনাকি সরকারের নির্দেশনায় ও মঞ্জুশ্রী চাকীর কোরিওগ্রাফিতে নৃত্যনাট্য ‘তোমারই মাটির কন্যা’। পাশাপাশি সন্ধ্যা ৭টায় স্টুডিও থিয়েটার মঞ্চস্থ হবে চন্দ্রকলা থিয়েটারের নাটক ‘তন্ত্রমন্ত্র’। শেষ দিন সমাপনী অনুষ্ঠান ছাড়াও তিন মঞ্চে তিনটি নাটক আছে।

উৎসব আয়োজনে সহযোগিতা করছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এবং মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড।