'তিনি জোরে আমার হাত ধরেন'

নানা পাটেকার, তনুশ্রী দত্ত ও গণেশ আচার্য
নানা পাটেকার, তনুশ্রী দত্ত ও গণেশ আচার্য

নানা পাটেকারের ওপর থেকে তনুশ্রী দত্তের ক্ষোভ যেন কমছেই না। ২০০৮ সালে ‘হর্ন ওকে প্লিজ’ ছবির একটি আইটেম গানের শুটিংয়ের সময় নানা পাটেকার তাঁর সঙ্গে কী আচরণ করেছিলেন, সে ব্যাপারে কথা বলেই যাচ্ছেন। এনডি টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তনুশ্রী দত্ত বলেন, ‘তিনি জোরে আমার হাত ধরেন। আমাকে তিনি নাচতে শেখাচ্ছিলেন।’ নানা পাটেকারের পাশাপাশি কোরিওগ্রাফার গণেশ আচার্যর ব্যাপারেও অভিযোগ রয়েছে তাঁর। একই সাক্ষাৎকারে তিনি বললেন, ‘সেদিন গণেশ আচার্য ওই নাচে নতুন নতুন স্টেপস দেন, যাতে আরও বেশি করে নানা পাটেকারকে আমি স্পর্শ করি। আমি ওভাবে নাচতে চাইনি। কিন্তু আমাকে ওভাবে নাচার জন্য জোর করা হয়।’ তনুশ্রী দত্ত আরও অভিযোগ করেন, ওভাবে নাচতে অস্বীকার করার পর তাঁর নামে বদনাম রটানোর হুমকি দেন ছবির প্রযোজক সামি সিদ্দিকি। সেদিন বাড়ি যাওয়ার পথে তাঁর গাড়িতে হামলা চালানো হয়। পুলিশের সহায়তায় তিনি রক্ষা পান।

তনুশ্রী বলেন, ‘এ ঘটনার পর আমি গোরেগাঁও থানায় যাই। সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা আমার বক্তব্য রেকর্ড করেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সেই কর্মকর্তা তা অভিযোগ হিসেবে নথিবদ্ধ করেননি। পরে আমার সেই অভিযোগের অনেক অংশ মুছে ফেলা হয়, বাদ দেওয়া হয়।’

তনুশ্রী দত্ত
তনুশ্রী দত্ত

এত বছর পর আবারও নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন ২০০৪ সালের ‘মিস ইন্ডিয়া’ ও একসময়ের বলিউড তারকা তনুশ্রী দত্ত। এবার মুম্বাইয়ের ওশিওয়ারা পুলিশ স্টেশনে তিনি এই অভিযোগ করেছেন। তাঁর অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিবদ্ধ করা হয়েছে। সেই অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন, গানটির শুটিংয়ের আগেই তিনি জানিয়েছিলেন অশ্লীল বা অস্বস্তিকর নাচ তিনি করবেন না। কিন্তু শুটিংয়ের চতুর্থ দিনেই নানা পাটেকারের আচরণ অভব্য হয়ে ওঠে।

নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ নিয়ে এবার মহারাষ্ট্র মহিলা কমিশনে গেছেন তনুশ্রী দত্ত। এ বিষয়ে তিনি মহিলা কমিশনের হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন। একই সঙ্গে তিনি নানা পাটেকার, গণেশ আচার্য, প্রযোজক সামি সিদ্দিকি, পরিচালক রাকেশ সারং এবং অনেক মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করেছেন। তনুশ্রী দত্তের আইনজীবী নীতিন সাতপুতে গতকাল মঙ্গলবার বলেছেন, ‘মহারাষ্ট্র মহিলা কমিশনের কাছে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। আর ওশিওয়ারা পুলিশ এরই মধ্যে তনুশ্রী দত্তের বিবৃতি রেকর্ড করেছে। এর জন্য একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।’

তনুশ্রী দত্ত
তনুশ্রী দত্ত

মহারাষ্ট্র মহিলা কমিশনের চেয়ারপারসন বিজয়া রাহাতকার আজ বুধবার জানিয়েছেন, তনুশ্রী দত্তের অভিযোগের ভিত্তিতে ছবির অভিনেতা নানা পাটেকার, প্রযোজক সামি সিদ্দিকি, পরিচালক রাকেশ সারং ও কোরিওগ্রাফার গণেশ আচার্যকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তাঁদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এই জবাব দিতে হবে।

বিজয়া রাহাতকার আরও জানিয়েছেন, তনুশ্রী দত্ত যে অভিযোগ করেছেন, সে ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা অনতিবিলম্বে জানানোর জন্য মুম্বাই পুলিশকে চিঠি দিয়েছে মহারাষ্ট্র মহিলা কমিশন।

তনুশ্রী দত্ত
তনুশ্রী দত্ত

তনুশ্রী দত্তের অভিযোগের ব্যাপারে নানা পাটেকার সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এ ব্যাপারে আমি ১০ বছর আগেই কথা বলেছি। যেটা মিথ্যা, সেটা মিথ্যাই।’ আর ওশিওয়ারা পুলিশ স্টেশনে ‘হর্ন ওকে প্লিজ’ ছবির প্রযোজক সামি সিদ্দিকি লিখিতভাবে জানিয়েছেন, ওই সময় তাঁর ছবির সেটে কোনো যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেনি। তিনি দাবি করেন, অনেক আগেই গোরেগাঁও পুলিশ স্টেশন এই ঘটনার তদন্ত করেছে। তখন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। সেটা ছিল প্রচারণার একটি কৌশল। একই দাবি করেছেন কোরিওগ্রাফার গণেশ আচার্যও।