আইয়ুব বাচ্চুর জন্য কনসার্টে কাঁদলেন জেমস

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বরগুনা জেলা স্টেডিয়ামের এক কনসার্টে সদ্যপ্রয়াত শিল্পী আইয়ুব বাচ্চুকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন জেমস। ছবি: ফেসবুক থেকে
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বরগুনা জেলা স্টেডিয়ামের এক কনসার্টে সদ্যপ্রয়াত শিল্পী আইয়ুব বাচ্চুকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন জেমস। ছবি: ফেসবুক থেকে

উপমহাদেশের অন্যতম সেরা গিটারিস্ট আইয়ুব বাচ্চুকে হারিয়ে শোকে বিহ্বল দেশ। শোকে মুহ্যমান দেশের সংগীত অঙ্গনও। বাংলা ব্যান্ড সংগীতের কিংবদন্তি এই শিল্পী একাধারে গায়ক, লিড গিটারিস্ট, গীতিকার, সুরকার, প্লেব্যাক শিল্পী। বাংলা ব্যান্ডকে জনপ্রিয় করার কারিগরদের অন্যতম ছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। তুমুল জনপ্রিয় আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুতে সমসাময়িক শিল্পী ও ব্যান্ড তারকা জেমসও শোকে মুহ্যমান।

বরগুনায় একটি কনসার্টে জেমস আইয়ুব বাচ্চুর সঙ্গে তার স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বসেন। মঞ্চে উঠেই ভারাক্রান্ত জেমস বলেন, ‘কিংবদন্তি গায়ক আইয়ুব বাচ্চু আর নেই। আজকের অনুষ্ঠানটি করার একদম ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু ১৫ বছর আগের একটা গল্প বলি। আমি আর বাচ্চু ভাই আড্ডা মারি; একদিন আসতে আসতে বাচ্চু ভাইকে বললাম, আমাদের শিল্পীদের জন্য ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে, দ্যা শো মাস্ট গো অন (The Show Must Go On)। তাই চেষ্টা করব...’। এ কথাগুলো যখন বলছিলেন গলা ধরে আসছিল জেমসের। কনসার্টে কান্নাজড়িত কণ্ঠে গান গেয়ে শোনান তিনি।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বরগুনা জেলা স্টেডিয়ামের সেই কনসার্টটি অনুষ্ঠিত হয়। জেমস কনসার্টটি উৎসর্গ করেন সদ্যপ্রয়াত শিল্পী আইয়ুব বাচ্চুকে।

আইয়ুব বাচ্চুর সঙ্গে জেমসের পরিচয় ১৯৮০ সালের শুরুর দিকে। এরপর দীর্ঘ ৪০ বছরের সম্পর্ক। কনসার্টে যোগ দেওয়ার আগে বিকেলে জেমস মোবাইলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই দীর্ঘ সময় আমরা একে অপরের সুখে-দুঃখে, মানে-অভিমানে কাটিয়েছি। একসঙ্গে প্রচুর শো করেছি, গান করেছি, দেশ-বিদেশে ঘুরেছি। তিনি অকস্মাৎ এভাবে আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে যাবেন, খবরটা মানতে পারছি না। রকসংগীতে তাঁর যে অবদান, সেটা এই জাতি চিরদিন মনে রাখবে বলেই বিশ্বাস করি।’

ব্যক্তি আইয়ুব বাচ্চুর সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে জেমস বলেন, ‘বাচ্চু ভাই অত্যন্ত উদার মনের মানুষ ছিলেন। তাঁর সঙ্গে আমার যে সম্পর্ক, সেটা আসলে বলে বোঝানো যাবে না। বিভিন্ন সময়ে কারণে-অকারণে আমরা একজন আরেকজনের পাশে সব সময় ছিলাম। সম্পর্কের এই গভীরতার কথা কখনো বোঝাতে পারব না। কেউ হয়তো জানবেও না যে আমাদের একের হৃদয়ে অপরের জন্য কতটা জায়গা রাখা আছে। আমাদের মধ্যে একটা সুস্থ প্রতিযোগিতা ছিল। সেটা ভালো গান তৈরির প্রতিযোগিতা। সেখানে কোনো ঈর্ষা ছিল না। যখন যেখানে দেখা হতো, একে অপরকে জড়িয়ে ধরেছি পরম ভালোবাসায়।’