চলে গেলেন ব্রুস লির সেই আবিষ্কারক

অভিনেতা ব্রুস লি ও প্রযোজক রেমন্ড চৌ
অভিনেতা ব্রুস লি ও প্রযোজক রেমন্ড চৌ

চলে গেলেন হংকংয়ের খ্যাতিমান চলচ্চিত্র প্রযোজক রেমন্ড চৌ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। অবসরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ছয় শতাধিক ছবি প্রযোজনা করেন এই মার্শাল আর্ট চলচ্চিত্র-মুঘল। সিনেমার দর্শকদের উপহার দিয়েছেন ব্রুস লি ও জ্যাকি চ্যানের মতো নায়কদের।

১৯৭১ সালে ‘দ্য বিগ বস’ ছবির মাধ্যমে ব্রুস লিকে তিনি বিশ্বের সামনে তুলে ধরেন। আর সেই ছবিটি তৈরি করে বিশ্ব রেকর্ড। ১৯৮০ সালে তিনি পর্দায় আনেন মার্শাল আর্ট অভিনেতা জ্যাকি চ্যানকে। ১৯৭৩ সালে ব্রুস লি মারা যান। জ্যাকি চ্যান এখনো চলচ্চিত্রের জনপ্রিয়তম নায়কদের একজন।

রেমন্ড চৌ
রেমন্ড চৌ

রেমন্ড চৌ হংকংয়ের চলচ্চিত্রের ‘গডফাদার’ হিসেবে পরিচিত। ২০০৭ সালে অবসরে যাওয়ার আগে অবিরাম ছবি করে গেছেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে সমবেদনা ও শোকবার্তা জানিয়েছেন ব্রুস লির মেয়ে শ্যানন। ব্রুস লির ভ্যারিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্টে তিনি লিখেছেন, ‘রেমন্ডের পরিবারের প্রতি সমবেদনা। তরুণ ব্রুস লিকে সুযোগ করে দেওয়া আর তাঁর স্বপ্ন অনুধাবনে সাহায্য করার জন্য ধন্যবাদ। আপনার আত্মা প্রশান্তি লাভ করুক।’

রেমন্ডের বন্ধু রবার্ট চুয়া সিঙ্গাপুরের এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রেমন্ড বিশ্বের সামনে ব্রুস লিকে এবং হংকংকে তুলে ধরেছেন। হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যাম এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, হংকংয়ের চলচ্চিত্রকে তিনি যে সোনালি দিন উপহার দিয়েছিলেন, সেটা বলা বাহুল্য।

জ্যাকি চ্যান ও রেমন্ড চৌ
জ্যাকি চ্যান ও রেমন্ড চৌ

রেমন্ড চৌ ১৯২৭ সালে হংকংয়ে জন্মগ্রহণ করেন। চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করার আগে তিনি ছিলেন একজন সাংবাদিক। ১৯৭০ সালে লিওনার্ড হো কুন-চিংকে সঙ্গে নিয়ে তিনি গঠন করেন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান গোল্ডেন হারভেস্ট। সেই প্রতিষ্ঠান থেকেই ১৯৭২ সালে মুক্তি পায় ‘ফিস্ট অব ফিউরি’ ও ‘ওয়ে অব দ্য ড্রাগন’ ছবি দুটি। ১৯৭৩ সালে ওয়ার্নার ব্রাদার্সের সঙ্গে যৌথভাবে তাঁরা নির্মাণ করেন ‘এন্টার দ্য ড্রাগন’ ছবিটি। সেটিই ছিল হংকং ও হলিউডের প্রথম যৌথ প্রযোজনার ছবি।

ব্রুস লি
ব্রুস লি

শুধু নিজের দেশই নয়, হলিউডের জন্যও ছবি করেছেন রেমন্ড। ১৯৯০ সালে ‘টিনেজ মিউট্যান্ট নিনজা টার্টলস’ ছবির মধ্য দিয়ে প্রথম কমিক চরিত্রকে পর্দায় নিয়ে আসেন তিনি।

হংকংয়ের চলচ্চিত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৯৮ সালে দেশটির সর্বোচ্চ সম্মান ‘গোল্ড বোহিনিয়া স্টার’ মেডেল লাভ করেন রেমন্ড। এশিয়ার অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়ে রেমন্ডদের প্রতিষ্ঠান ‘গোল্ডেন হারভেস্ট’ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০০৭ সালে তিনি প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করে দিয়ে অবসরে চলে যান। বিবিসি