শ্বেতা আর তাঁর স্বামী আলাদা থাকছেন?

অভিনব কোহলি ও শ্বেতা তিওয়ারি
অভিনব কোহলি ও শ্বেতা তিওয়ারি

বিতর্কিত রিয়েলিটি শো ‘বিগ বস ফোর’-এ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন শ্বেতা তিওয়ারি। একই প্রতিযোগিতার অন্যতম প্রতিযোগী ছিলেন ভোজপুরি চলচ্চিত্রের তারকা রাজা চৌধুরী। ১৯৯৮ সালে তাঁরা বিয়ে করেন। ২০০৭ সাল থেকে তাঁরা আলাদা থাকতে শুরু করেন। রাজা চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি শ্বেতা তিওয়ারিকে মারধর করতেন। তাঁর আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে প্রতিবেশীরা মুম্বাই পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। এরপর পুলিশ রাজা চৌধুরীকে মুম্বাই ছাড়ার নির্দেশ দেয়। তখন রাজা চৌধুরীর বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের মামলাও করেছিলেন শ্বেতা। ২০১২ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। ওই সময় থেকে মেয়ে পলককে নিজের কাছেই রেখেছেন শ্বেতা।

রাজা চৌধুরীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর হতাশা গ্রাস করে শ্বেতা তিওয়ারিকে। অভিনয় ছেড়ে দিতে চেয়েছেন। শোনা যায়, ওই সময় তিনি মাদকাসক্তও হয়ে পড়েন। মেয়ের কঠিন সময়ে তাঁর পাশে থেকেছেন শ্বেতার মা। মেয়েকে আগলে রেখেছেন সব ঝামেলা থেকে, সহযোগিতা করেছেন।

মেয়ে পলকের সঙ্গে শ্বেতা তিওয়ারি
মেয়ে পলকের সঙ্গে শ্বেতা তিওয়ারি

‘কসৌটি জিন্দেগি কে’ সিরিয়ালের ‘প্রেরণা’কে এখনো অনেক দর্শক মনে রেখেছেন। ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ভারতের টিভি চ্যানেলের জনপ্রিয় এই সিরিয়ালে অভিনয় করেন তিনি। ছোট পর্দার পাশাপাশি তিনি হিন্দি, পাঞ্জাবি, মারাঠা, কানাড়া আর নেপালি ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।

রাজা চৌধুরীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের ধাক্কা সামলে ধীরে ধীরে আবার জীবনের মূল স্রোতে ফিরে আসেন শ্বেতা। ২০১৩ সালে অভিনেতা অভিনব কোহলিকে বিয়ে করেন। ‘বিগ বস ফোর’-এর সেটেই পরিচয় হয় তাঁদের। বিয়ের আগে তাঁরা তিন বছর প্রেম করেছেন। ২০১৬ সালে আবার মা হন শ্বেতা। তাঁর ছেলের নাম রেয়ানশ।

অভিনব কোহলি, শ্বেতা তিওয়ারি, পলক ও রেয়ানশ
অভিনব কোহলি, শ্বেতা তিওয়ারি, পলক ও রেয়ানশ

এদিকে বছর খানেক ধরেই শোনা যাচ্ছে, অভিনব কোহলি আর শ্বেতা একসঙ্গে থাকছেন না। আরও শোনা যাচ্ছে, তাঁদের বিয়েটা এরই মধ্যে ভেঙে গেছে। এবার শ্বেতা তিওয়ারি জানালেন, অনেক দিন থেকে তা শুনতে শুনতে তিনি বিরক্ত। এবার নিজের সংসার নিয়ে মুখ খুলেছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমি যখন মা হব, তখন অভিনবর বাবা মারা যান। অভিনবর বাবা-মা বেঙ্গালুরুতে থাকেন। তাই অভিনবকে অনেকটা সময় তাঁর মায়ের সঙ্গে বেঙ্গালুরুতেই থাকতে হয়েছে। আমার শাশুড়ি একটা প্রকাশনা সংস্থার মালিক। তাই তিনি মুম্বাই চলে আসতে পারেননি। সবকিছু গুটিয়ে আসতে একটু সময়ের দরকার। অভিনবকে প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় সেখানেই থাকতে হচ্ছে। এমনকি রেয়ানশের জন্মের পরও অভিনব খুব কম সময়ের জন্য মুম্বাই এসেছে। যেহেতু এই সময়টাতে আমি একা সব জায়গায় গিয়েছি, বিভিন্ন পার্টিতেও সবাই আমাকে একা দেখেছেন; তাই অনেকেই ভাবছেন, আমরা আর একসঙ্গে থাকছি না।’

অভিনব কোহলির সঙ্গে তাঁর বিয়ে ভাঙা কিংবা তাঁদের একসঙ্গে না থাকার বিষয়টিকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন শ্বেতা। জানালেন, স্বামী অভিনব, ছেলে রেয়ানশ আর মেয়ে পলককে নিয়ে তিনি খুব ভালো আছেন। পলকের বয়স এখন ১৮।

নিজেদের একান্ত মুহূর্তে অভিনব কোহলি ও শ্বেতা তিওয়ারি
নিজেদের একান্ত মুহূর্তে অভিনব কোহলি ও শ্বেতা তিওয়ারি

গত বছর মে মাসে পিটিআইকে শ্বেতা জানান, পলক বড় পর্দায় আসছেন। ‘তারে জমিন পর’ ছবির তারকা দারশিল সাফারির সঙ্গে ‘কুইকি’ ছবিতে তাঁর অভিষেক হচ্ছে। তিনি নিজে দারশিল সাফারির সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে এবার সংবাদমাধ্যমকে জানালেন, মেয়ে পড়াশোনা শেষ করুক, এটা তাঁর একান্ত চাওয়া। তারপর চলচ্চিত্রে অভিনয়ের ব্যাপারে ভাবা যাবে। এখন পলকের দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস চলছে। পড়াশোনায় ও যথেষ্ট ভালো। মায়ের ভাবনা, বলিউডে ব্যস্ত হয়ে গেলে মেয়ের পড়া আর শেষ হবে না। ছবির কাজ পড়াশোনায় বাধা হয়ে দাঁড়াক, এটা তিনি চান না। কারণ, বলিউডের সেই রুপালি জগতের আকর্ষণ অন্য সবকিছু থেকে নিজেকে আলাদা করে ফেলে। আর ছবির কাজের জন্য অনেক সময় দিতে হয়। সবকিছু মিলিয়ে মেয়ের ভালোর জন্য এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।