‘নন্দিত নরকে’ উপন্যাসের মধ্য দিয়ে লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ । পরের চার দশক বহুমাত্রিক সৃষ্টিশীলতায় আচ্ছন্ন করে রেখেছেন কোটি বাঙালি পাঠককে। তিনি বরেণ্য কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। বাংলা সাহিত্যের বরপুত্র হিসেবে তাঁকে আখ্যায়িত করেছেন সাহিত্য সমালোচকেরা। আজ ১৩ নভেম্বর হুমায়ূন আহমেদের ৭০তম জন্মবার্ষিকী। আপন দ্যুতিতে উদ্ভাসিত এই লেখকের স্মরণে আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হবে নাটক ‘দেবী’। নাট্যদল বহুবচন প্রযোজিত, হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে মো. ইকবাল হোসেনের নাট্যরূপে নাটক ‘দেবী’র আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ১১৫তম প্রদর্শনী হবে। নির্দেশনা দিয়েছেন আরহাম আলো।
হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস ‘দেবী’ অবলম্বনে এ নাটক। চেতনা-অবচেতন মনের দ্বন্দ্বের চিরায়ত নাটকীয় উপস্থাপনা ‘দেবী’। গল্পে রানুর বয়স ষোলো-সতেরো। বিয়ের আগে ছোটবেলায় ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা ওর মনের মধ্যে গেঁথে যায়। তা থেকে বেরিয়ে আসতে নিজেকে অতিমানবীয় মনে করে এবং নিজেকে ‘দেবী’ বলে উপস্থাপন করে। কিন্তু মিসির আলী, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক, তিনি রানুর ছোটবেলার ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর ব্যাখ্যা করেন, তুলে ধরেন কার্যকরণ সূত্র। এরপরই প্রমাণিত হয় ঘটনাগুলো অতিপ্রকৃত নয়, বাস্তব। কিন্তু রানু তা বিশ্বাস করে না। সে নিজেকে ‘দেবী’ বলেই মনে করে। এ রকম অবস্থা প্রত্যেকের জীবনে ঘটে। চেতনা-অবচেতন মনের দ্বন্দ্বের এই ক্রিয়া চিরকালীন।
‘দেবী’ নাটকে অভিনয় করেছেন সালাউদ্দিন, হ্যাপী, মাহমুদ, মনি, সাহিত্য, তাপস, আলো, তৌফিকুর রহমান, আরহাম আলো, তাপস, ডলি, কবিতাসহ আরও অনেক।
নাট্যদল বহুবচনের দলপ্রধান এবং প্রযোজনা অধিকর্তা তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘গত শতকের নব্বই দশকে হুমায়ূন আহমেদের কাছে তাঁর জনপ্রিয় উপন্যাস “দেবী” মঞ্চায়নের জন্য অনুমতি নিতে গেলে তিনি উদারভাবে সম্মতি দেন। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, “আমার যেকোনো নাটক আপনারা নাট্যরূপ দিয়ে মঞ্চস্থ করতে পারেন। আপনাদের প্রতি আমার আন্তরিক বিশ্বাস আছে।” দলের সদস্য মো. ইকবাল হোসেন, “দেবী” উপন্যাসটির নাট্যরূপ দেন এবং ১৯৯৪ সালে প্রথম প্রদর্শনী হয়। নাটকটি দেখে লেখক হুমায়ূন আহমেদ প্রশংসা করেছিলেন।’
তৌফিকুর রহমান জানান, গত ২১ বছরে ১১৪টি শো হয় এবং তার মধ্যে ভারতে তিনটি শো হয়। তিনি বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের মঞ্চনাটকের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় ধরে রেখেছি আমরা। আজকের মঞ্চায়নেও দর্শকদের উপস্থিতি এবং আমাদের অভিনয় প্রচেষ্টা উদ্বুদ্ধ করবে একই ধারা অব্যাহত রাখতে।’