ছিঃ ছিঃ, কী লজ্জার!

ফারহান আখতার ও সাজিদ খান
ফারহান আখতার ও সাজিদ খান

বলিউডে ‘#মি টু’ ইস্যুর শুরুর দিকের সোচ্চার পুরুষদের অন্যতম চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অভিনেতা ফারহান আখতার। নারীদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তিনিও। অবস্থান নিয়েছিলেন যৌন নিপীড়কদের বিরুদ্ধে। কিন্তু হায়, এখন এই ইস্যুতে লজ্জায় পড়তে হয়েছে তাঁকেও। কেননা তাঁর ঘরের ভেতরে বসে আছেন যৌন নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত এক পুরুষ!

খালাতো ভাই সাজিদ খানের কারণে লজ্জায় মাথা নিচু হয়ে গেছে ফারহান আখতারের। তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের কথা বিশ্বাস করতেই চাননি তিনি। কিন্তু ফারহানের পরিচিত কয়েকজন নারী গোপনে তাঁকে জানিয়েছেন, ওঁর ব্যবহার আসলেই খারাপ। এখন এ নিয়ে রীতিমতো অপরাধবোধে ভুগছেন ফারহান আখতার।

পরিচালক সাজিদ খানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছিলেন অভিনেত্রী সালোনি চোপড়া এবং এক নারী সাংবাদিক। এতে বন্ধ হয়ে যায় তাঁর ‘হাউসফুল ফোর’ ছবির শুটিং। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ভীষণ মর্মাহত হন ফারহান আখতার। ‘#মি টু’ আন্দোলনে তিনি এক সক্রিয় কণ্ঠস্বর। অথচ তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধেই কিনা সেই অভিযোগ। এখন কী করবেন তিনি? এ প্রসঙ্গে ফারহান আখতার বলেন, ‘এত দিন আমি এসব ঘটনার প্রতিবাদ করে এসেছি। এখন ঘরের মানুষদের বিরুদ্ধে অভিযোগের ক্ষেত্রে যদি মুখ বন্ধ রাখি, সেটা হবে চূড়ান্ত ভন্ডামো।’

সম্প্রতি সাংবাদিক বারখা দত্তের সঙ্গে ‘উই দ্য উইমেন’ শিরোনামের এক অনুষ্ঠানের প্যানেল আলোচক ছিলেন ফারহান আখতার। বারখা প্রশ্ন করেন, যৌন হয়রানি যখন একটি অপরাধ তখন কেবল ক্ষমা প্রার্থনাই কি যথেষ্ট? ফারহান বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনা আদালত পর্যন্ত গড়ানো উচিত। আর সাজিদের এসবের মুখোমুখি হওয়ার দরকার আছে।’

ফারহান বলেন, ‘সাজিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা শুনে আমার মন খারাপ হয়ে গেছে। আমি বিস্মিত ও হতাশ হয়েছি। কারণ সে আমার পরিবারের লোক। অন্তত তিনজন নারী আমাকে সাজিদের ব্যাপারে নেতিবাচক কথা বলেছেন। তাঁরা বলেছিলেন, আপনার ভাইয়ের সম্পর্কে যা শোনা যাচ্ছে, সেসব সত্য। কারণ সে আমাদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করেছে। সেই নারীদের কাউকে আমি ১২, ১৫ বা ২০ বছর ধরে চিনি। তাঁদের আমি অবিশ্বাস করতে পারিনি। অবশ্য বলেছিলাম, এসব কেন আমাকে তাঁরা আগে জানায়নি।’

ফারহান বলেন, ‘একজন নারীর সঙ্গে যদি কেউ খারাপ আচরণ করে আর তাঁরা সেটা গোপন রাখতে চায়, সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আবার কেউ যদি গোপনে বিষয়টি কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করে, যেমন ওই তিন নারী করেছিলেন, আমি কি তাঁদের কথা কাউকে বলে দেব? না। কারণ তাতে সারা জীবন তাঁকে মানুষের প্রশ্নবাণ সইতে হবে। বরং নারী যাতে খোলাখুলি তাদের যাতনার কথা প্রকাশ করতে পারে, তাদের জন্য সেই পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে।’

ওই আলোচনায় প্যানেল আলোচক হিসেবে আরও ছিলেন রাজনীতিক মিলিন্দ দেওরা এবং কমেডিয়ান সাইরাস ব্রচা। ডেকান ক্রনিকল