ভেঙে দেওয়া 'কাপুর হাভেলি' এবার সংগ্রহশালা

‘কাপুর হাভেলি’ ও রাজ কাপুর
‘কাপুর হাভেলি’ ও রাজ কাপুর

পাকিস্তানের পেশোয়ারে কিস্যা খাউনি বাজারে ১৯২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন ভারতের কিংবদন্তি অভিনেতা রাজ কাপুর। তাঁদের সেই বাড়িটির নাম ছিল ‘কাপুর হাভেলি’। ১৯৩০ সালে তাঁর বাবা বলিউডের আরেক কিংবদন্তি অভিনেতা পৃথ্বীরাজ কাপুর মুম্বাই চলে আসেন। সেই থেকে ভারতেই আছেন তাঁদের বংশধরেরা। কিন্তু কিস্যা খাউনি বাজারের সেই ‘কাপুর হাভেলি’তে কাপুর পরিবারের অন্যরাও ছিলেন। জি নিউজ জানিয়েছে, ২০১৬ সালের ১৬ জানুয়ারি ৯৮ বছরের পুরোনো চারতলা বাড়িটি ভেঙে ফেলে স্থানীয় প্রশাসন। ভারতের বলিউডের বিখ্যাত কাপুর পরিবারের পক্ষ থেকে তখন বাড়িটি সংরক্ষণের জন্য বারবার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু এসব অনুরোধ কানে তোলেনি পেশোয়ারের স্থানীয় প্রশাসন।

এবার পাকিস্তানের সরকার ‘কাপুর হাভেলি’র সেই জায়গায় জাদুঘর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে তা ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি। করতারপুর করিডরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যাওয়া সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ঋষি কাপুর ফোন করেছিলেন। পেশোয়ারে তাঁদের পূর্বপুরুষের যে ভিটা আছে, সেখানে জাদুঘর নির্মাণের অনুরোধ করেন তিনি। সরকার তাঁর অনুরোধ বিবেচনা করেছে। সেখানে জাদুঘর নির্মাণ করা হবে।’

জানা গেছে, পাক অভ্যন্তরীণমন্ত্রী শেহরিয়ার খান আফ্রিদিকে ফোন করেছিলেন ঋষি কাপুর। তিনি ‘কাপুর হাভেলি’ বাড়িটিকে সংরক্ষণের জন্য অনুরোধ করেছিলেন। শেহরিয়ার খান আফ্রিদি তখন খাইবার-পাখতুনখাওয়া প্রদেশের সাংসদ ছিলেন। এখন মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি ঋষি কাপুরের সেই অনুরোধ রক্ষা করার সুযোগ পেয়েছেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ‘স্থানীয় প্রশাসন এরই মধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছে। শিগগিরই সেখানে জাদুঘর নির্মাণ করা হবে। কারণ পেশোয়ারকে আগের মর্যাদায় ফিরিয়ে আনতে আগ্রহী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।’

পাকিস্তানের পেশোয়ারে কিস্যা খাউনি বাজারে রাজ কাপুরের পৈতৃক বাড়ি ‘কাপুর হাভেলি’
পাকিস্তানের পেশোয়ারে কিস্যা খাউনি বাজারে রাজ কাপুরের পৈতৃক বাড়ি ‘কাপুর হাভেলি’

এদিকে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারেই ‘কাপুর হাভেলি’ থেকে একটু দূরে মহল্লা খুদাদাদের দোমা গলিতে ছিল দিলীপ কুমারের বাড়ি। সেই বাড়িটি সংরক্ষণের জন্য পাকিস্তান সরকারকে অনেক অনুরোধ করেন বলিউডের এই কিংবদন্তি অভিনেতা। পাকিস্তান সরকার তাঁকে আশ্বাসও দেয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শতাধিক বছরের পুরোনো বাড়িটির ব্যাপারে আর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। তখন স্থানীয় প্রশাসন থেকে সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়, দিলীপ কুমারের বাড়িটি জাতীয় ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে ধরে রাখতে চেষ্টা করেছিল ইসলামাবাদ। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি।

এরপর খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশ সরকার ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানায়, দিলীপ কুমারের ভেঙে পড়া বাড়ি সরিয়ে সেখানে নতুন করে সেটি গড়ে তোলা হবে৷ এই বাড়িতে দিলীপ কুমারের নামে একটি সংগ্রহশালা করা হবে৷ কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন তা এখনো নির্মাণ করতে পারেনি৷