আসলে গানটি কে লিখেছেন?

ফেসবুক লাইভে কামরুজ্জামান রাব্বি
ফেসবুক লাইভে কামরুজ্জামান রাব্বি

‘অতীতের কথাগুলো পুরোনো স্মৃতিগুলো
মনে মনে রাইখো
আমি তো ভালা না ভালা লইয়াই থাইকো...’

দারুণ জনপ্রিয় এই গানের শিল্পী কামরুজ্জামান রাব্বি। এ বছর ৭ ফেব্রুয়ারি কমারুজ্জামান রাব্বি তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে প্রথম গানটি প্রকাশ করেন। আজ শনিবার দুপুর পর্যন্ত গানটি ৭৯ লাখ ২৭ হাজার ৯৮৩ বার দেখা হয়েছে। এ ছাড়া ইউটিউবে আরও কয়েকটি চ্যানেলে রয়েছে গানটি। সব মিলিয়ে ইউটিউবে গানটি এরই মধ্যে এক কোটিবার দেখা হয়ে গেছে। এবার গানটি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, আসলে গানটি কে লিখেছেন? কারণ, গানটির গীতিকার হিসেবে কয়েকজন দাবি করেছেন। এদিকে গানের শেষ দিকে কামরুজ্জামান রাব্বি গেয়েছেন,
‘মাহবুব ভেবে বলে মায়ের কোলই ভালা
মায়ের কোল ছেড়ে দেখি সংসারেতে জ্বালা।’

তার মানে গানের মধ্যেই কামরুজ্জামান রাব্বি বলেছেন, গানটির গীতিকার মাহবুব শাহ।

জানা গেছে, গানটি ইউটিউবে দেওয়ার মাসখানেক পর কামরুজ্জামান রাব্বির সঙ্গে দেখা করেন টিটু পাগল। নিজেকে তিনি গানটির গীতিকার হিসেবে দাবি করেন। ওই সময় তিনি বলেন, গানটি তাঁর কাছ থেকে শুনে মাহবুব শাহ নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন। তিনি ইউটিউব থেকে গানটি প্রত্যাহার করার জন্য বলেন কামরুজ্জামান রাব্বিকে।

আজ প্রথম আলোকে কামরুজ্জামান রাব্বি বলেন, ‘এরপরই টিটু পাগলকে মাহবুব শাহর সঙ্গে বসার জন্য অনুরোধ করেছি। এখানে আমি শুধু গানটি গেয়েছি মাত্র। কে গীতিকার আর কে সুরকার, তা নিয়ে গবেষণা করে গান গাওয়া সম্ভব? আমি তাঁকে বলেছি, আপনারা বসে ঠিক করুন আসলে গানটি কার। আপনার দাবি সত্যি হলে অবশ্যই সংবাদ সম্মেলন করে সবাইকে বলব। ব্যাপারটি মীমাংসার জন্য দুটি তারিখ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু টিটু পাগল আসেননি। এখন পরিচিতজনদের কাছ থেকে শুনছি, তিনি নাকি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’

‘আমি তো ভালা না ভালা লইয়াই থাইকো’ গানের ভিডিওতে কামরুজ্জামান রাব্বি
‘আমি তো ভালা না ভালা লইয়াই থাইকো’ গানের ভিডিওতে কামরুজ্জামান রাব্বি

‘অতীতের কথাগুলো পুরোনো স্মৃতিগুলো’ গানটি কামরুজ্জামান রাব্বি কীভাবে পেয়েছেন? তিনি বললেন, ‘একজন বড় ভাইয়ের সঙ্গে আমি বিক্রমপুর গিয়েছিলাম, মাহবুব শাহর বাসায়। সেখানে রাতে অনেক গান শুনেছি। এই গানটি আমার ভালো লাগে। গানটি গাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করি। তখন মাহবুব শাহ বলেছেন, গানটির গীতিকার ও সুরকার তিনি। গানটি গাওয়ার জন্য তিনি আমাকে মৌখিক ও লিখিতভাবে অনুমতি দেন।’

কামরুজ্জামান রাব্বি আরও বলেন, ‘আমি কিন্তু কোথাও কখনো বলিনি, মাহবুব শাহ আমার জন্য গানটি লিখেছেন। কিংবা আমার সামনে বসে গানটি তিনি রচনা করেছেন। আমি শুধু গানটি গেয়েছি। আজ গানটি ভাইরাল হয়েছে, সবাই শুনছেন। অন্য শিল্পীরাও গাইছেন। এটা আমার অপরাধ? গানটি ইউটিউবে দেওয়ার মাসখানেক পর থেকে আমার ওপর দিয়ে অনেক ঝড় বয়ে যাচ্ছে। অনেকেই আমাকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করেন। আমি বলতে বলতে ক্লান্ত। কিন্তু যাঁদের নিয়ে সমস্যা, তাঁরা কেউ বসছেন না।’

এ ব্যাপারে টিটু পাগল ও মাহবুব শাহর সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য তাঁদের মুঠোফোন নম্বর চাওয়া হয় কামরুজ্জামান রাব্বির কাছে। তিনি জানান, সম্প্রতি তাঁর নিজের মুঠোফোনটি হারিয়ে যায়। তাই কারও ফোন নম্বর এখন তাঁর কাছে নেই। এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই, সঠিক মানুষের নামটি সামনে আসুক।’

গতকাল শুক্রবার ফেসবুক লাইভে আসেন কামরুজ্জামান রাব্বি। এখানে তিনি ‘অতীতের কথাগুলো পুরোনো স্মৃতিগুলো’ গান নিয়ে তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন।

এদিকে সময় টিভির একটি অনুষ্ঠানে গানটি গেয়েছেন অবিনাশ বাউল। তাঁর গাওয়া গানটির কথাতে কিছুটা পরিবর্তন দেখা গেছে। সেখানে তিনি গীতিকার হিসেবে টিটু পাগলের কথা বলেছেন। এই অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী দিলরুবা খান। ইউটিউবে সময় মিউজিক চ্যানেল অবিনাশ বাউলের গানটি দেওয়া হয়েছে গত ২৬ এপ্রিল। আজ দুপুর পর্যন্ত এখানে গানটি দেখা হয়েছে ১৩ হাজার ২৯৯ বার।