মধ্যরাতে জানা যাবে নতুন নেতৃত্ব

চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির এবারের নির্বাচনে ভোট দিতে আসা চলচ্চিত্র পরিচালকেরা। ছবি-প্রথম আলো
চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির এবারের নির্বাচনে ভোট দিতে আসা চলচ্চিত্র পরিচালকেরা। ছবি-প্রথম আলো

নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি আগামী দুই বছরের নতুন নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছে। ৩৬২ জন সদস্য পরিচালকের মধ্যে ৪৩ জন ছাড়া বাকি সবাই ভোট প্রদান করেছেন। দুপুরে এক ঘণ্টা মধ্যাহ্নভোজের বিরতি ছাড়া আজ শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া এই ভোট গ্রহণ চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। ভোট গ্রহণ শেষে এক ঘণ্টা বিরতির পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবদুল লতিফ বাচ্চুর নেতৃত্বে ভোট গণনা শুরু হয়। জানা গেছে, নতুন নেতৃত্বে কারা আসছেন, জানতে অপেক্ষা করতে হবে মধ্যরাত পর্যন্ত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চলচ্চিত্র পরিচালক প্রথম আলোকে এমনটাই নিশ্চিত করেছেন।

ভোট দিতেন আসেন বাংলা চলচ্চিত্রের মিষ্টিমেয়ে খ্যাত বরেণ্য অভিনেত্রী ও পরিচালক সারাহ বেগম কবরী। ছবি-প্রথম আলো
ভোট দিতেন আসেন বাংলা চলচ্চিত্রের মিষ্টিমেয়ে খ্যাত বরেণ্য অভিনেত্রী ও পরিচালক সারাহ বেগম কবরী। ছবি-প্রথম আলো

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির এবারের নির্বাচনে নতুন নেতৃত্বের জন্য দুটি প্যানেলে লড়েছেন ৩৮ জন প্রার্থী। এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মহাসচিব পদে লড়ছেন পরিচালক সাফিউদ্দিন সাফি। কমিশন সূত্র জানায়, ৩৬২ ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে ৩১৯টি। কোনো রকম বিশৃঙ্খলা ছাড়া চমৎকার পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে ভোট দিয়েছেন পরিচালকেরা। এই নির্বাচন বড় একটা উৎসব মনে করছেন পরিচালক সমিতির সদস্যরা। অনেক দিন পর এই উপলক্ষেই নিজেদের মধ্যে নিয়মিত দেখা হয়। সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির এক অনন্য পরিবেশ তৈরি হয় বলেও জানান পরিচালকেরা।

হুইল চেয়ারে চড়ে ভোট দিতে আসেন গুণী চলচ্চিত্র পরিচালক সাহাউদ্দিন জাকী। ছবি-প্রথম আলো
হুইল চেয়ারে চড়ে ভোট দিতে আসেন গুণী চলচ্চিত্র পরিচালক সাহাউদ্দিন জাকী। ছবি-প্রথম আলো

সন্ধ্যা ছয়টার পর গণনা শুরু হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আছেন আবদুল লতিফ বাচ্চু, আর দুই সহকারী কমিশনার হিসেবে শফিকুর রহমান ও ডি এইচ নিশানের নেতৃত্বে চলছে ভোট গণনার কাজ।

মাত্র ৩১৯টি ভোট গণনা করতে এত সময় লাগার কারণ কী? জানতে চাইলে পরিচালক সমিতির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী কয়েকজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘গণনায় যাতে কোনো ধরনের ভুল না হয়, তাই একটু সময় নিয়ে ভোট গণনা করতে হয়।’

এফডিসি ঘুরে দেখা যায়, ভোটারদের উপস্থিতিও সন্তোষজনক। শুধু তা-ই নয়, অভিনেতা-নির্মাতারাও তাঁদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিয়েছেন। দুপুরের পর ভোট দিতে এফডিসিতে আসেন সারাহ বেগম কবরী, আলমগীর, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, আবু শাহেদ ইমন, সোহেল রানা, রুবেল, অনন্ত জলিল, এ টি এম শামসুজ্জামান, সালাহউদ্দিন লাভলু, তৌকীর আহমেদ, নাদের খান, সুজাতা, মাসুম আজিজ প্রমুখ। এদিকে নির্বাচন নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন প্রার্থীরাও। বিশেষ করে গুলজার-বদি ও বাদল-বজলুর রশিদের প্যানেলের সবাই নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে নিজেদের সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন।

এবার দুই প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার ও মহাসচিব বদিউল আলম খোকন। অন্য প্যানেল থেকে সভাপতি পদে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বাদল খন্দকার এবং মহাসচিব পদে থাকছেন বজলুর রাশেদ চৌধুরী। পরিচালক সাফিউদ্দিন সাফি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মহাসচিব পদে নির্বাচন করছেন।

চলচ্চিত্রের আঁতুড়ঘর এফডিসিতে ছিল উৎসবের আমেজ। সকাল থেকে এফডিসিতে এসে হাজির হন চলচ্চিত্রের অভিনয়শিল্পী আর পরিচালকেরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চলচ্চিত্র অঙ্গনের মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয় এফডিসি চত্বর। তরুণ ও জ্যেষ্ঠ পরিচালকদের আগমনে যেন প্রাণ ফিরে পায় এফডিসি চত্বর।