সংসার নিয়ে মুখ খুললেন অর্পিতা

দেব, অর্পিতা ও প্রসেনজিৎ
দেব, অর্পিতা ও প্রসেনজিৎ

ভারতের বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক প্রসেনজিতের প্রথম স্ত্রী ছিলেন চিত্রনায়িকা দেবশ্রী রায়। ১৯৯৩ সালে তাঁরা বিয়ে করেন। বিয়েটা ভেঙে যায় ১৯৯৫ সালে। এরপর ১৯৯৭ সালে তিনি অপর্ণা গুহঠাকুরতাকে বিয়ে করেন। ২০০২ সালে এই বিয়েটাও ভেঙে যায়। চিত্রনায়িকা অর্পিতাকে তিনি বিয়ে করেন ২০০২ সালে। এই দম্পতির একমাত্র সন্তান ত্রিসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় মিশুক। কিন্তু প্রসেনজিৎ আর অর্পিতার দাম্পত্যজীবন কেমন চলছে? কারণ এই দুজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লোকজনের কাছ থেকে জানা গেছে, তাঁদের দাম্পত্য ও সংসারজীবন মোটেই সুখের নয়। অনেক দিন থেকেই চলছে টানাপোড়েন। আরও জানা গেছে, তাঁরা একসঙ্গেও থাকছেন না।

তবে নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে প্রসেনজিৎ কিংবা অর্পিতা কেউই সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলেননি। এদিকে অনেক দিন পর আবার চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন অর্পিতা। এবার তিনি অভিনয় করবেন দেবের সঙ্গে। ছবির নাম ‘সাঁঝবাতি’। এখানেই বিপত্তি ঘটেছে। দেবের সঙ্গে প্রসেনজিতের সম্পর্ক কয়েক বছর ধরে মোটেই ভালো নেই। দুজনের মাঝেই চলছে ঠান্ডা লড়াই। জানা গেছে, ২০১৭ সালে দুর্গাপূজা উপলক্ষে ২২ সেপ্টেম্বর দেব তাঁর ‘ককপিট’ ছবিটি মুক্তি দেন। কিন্তু অনেক আগে থেকেই এই দিনে প্রসেনজিৎ তাঁর ‘কাকাবাবু’ সিরিজের ‘ইয়েতি অভিযান’ ছবিটি মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন। এদিকে হুট করে একই দিনে দেব তাঁর ‘ককপিট’ ছবিটি মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারটি সহজভাবে নিতে পারেননি প্রসেনজিৎ। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও তিনি যে দেবের ওপর খুব খেপেছেন, তা সংশ্লিষ্ট সবাই জানেন।

যার ওপর প্রসেনজিৎ খেপে আছেন, সেই দেবের ছবিতেই অভিনয় করবেন অর্পিতা। বোঝা যাচ্ছে, এত দিন চার দেয়ালের মাঝে যে ক্ষোভ জমে ছিল, এবার তা প্রকাশ্যে এসেছে। ‘সাঁঝবাতি’ ছবি নিয়ে সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। এখানে উপস্থিত ছিলেন দেব ও অর্পিতা। সাংবাদিকেরা এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি। সুপারস্টারের সঙ্গে কাজ ও সংসার নিয়ে ছিল প্রশ্নটি। জবাবে অর্পিতা বললেন, ‘একজন সুপারস্টারের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা খুব একটা ভালো নয়, সংসার করার অভিজ্ঞতা আরও খারাপ। আবার একজন সুপারস্টারের সঙ্গে কাজ করতে যাচ্ছি। সামনে কী হবে, আমার কোনো ধারণা নেই।’

প্রসেনজিৎ আর অর্পিতা বিয়ে করেছেন ১৬ বছর হলো। প্রসেনজিৎ ব্যস্ত চলচ্চিত্রে অভিনয় আর প্রযোজনা নিয়ে। অর্পিতা অভিনয়ের পাশাপাশি ব্যবসা করছেন। সম্প্রতি অর্পিতা আরেকটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘পাশাপাশি দুটো মানুষ থাকলেই ঘষা লাগে। সেই ঘষা থেকেই সংঘর্ষ। যদি মানুষ দুটো আলাদা থাকে, তা হলে সংঘর্ষের সম্ভাবনা কমে যায়। জার্নিটা মসৃণ হয়। চার বছর হয়ে গেল আমি অধিকাংশ সময়ই দিল্লিতে থাকি। মিশুক (ছেলে) বাইরে পড়াশোনা করছে। ছুটিতে ও বাড়ি এলে কলকাতায় এসে থাকি।’

জার্নি মসৃণ হবে বলে আলাদা থাকা শুরু করলেন? হেসে অর্পিতা বললেন, ‘না না! আমরা দুজনই একে অপরকে স্পেস দেওয়ায় বিশ্বাস করি। টু মাচ ওভারল্যাপিং, টু মাচ ইন্টারফেয়ারিংয়ে কোনো সম্পর্ক ভালো থাকে না। এটা অন্যের পক্ষে বোঝা হয়তো সম্ভব নয়। আমাকে অনেক বন্ধু আর আত্মীয় এটা নিয়ে প্রশ্ন করেন। আমি বলতে বলতে ক্লান্ত, একসঙ্গে থাকাটা দাম্পত্য জীবনের সব নয়। সারা জীবন পাশাপাশি থেকেও স্বামী-স্ত্রীর খারাপ সম্পর্ক আমি দেখেছি। দূরত্বটাও জরুরি। তাতে পারস্পরিক প্রয়োজন অনুভব করা যায়। আমার আর বুম্বার জীবনে যা-ই থাকুক না কেন, আমি যদি কোনো সমস্যায় পড়ি, ও সবার আগে এগিয়ে আসবে। আমার দিক থেকেও তা-ই।’