আলাউদ্দীন আলীর পাশে প্রধানমন্ত্রী

আলাউদ্দীন আলীর স্ত্রী ফারজানা মিমির হাতে ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশে মেয়ে আদ্রিতা আলাউদ্দিন রাজকন্যা। ছবি: সংগৃহীত
আলাউদ্দীন আলীর স্ত্রী ফারজানা মিমির হাতে ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশে মেয়ে আদ্রিতা আলাউদ্দিন রাজকন্যা। ছবি: সংগৃহীত

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বরেণ্য গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক ও বাদ্যযন্ত্রশিল্পী আলাউদ্দীন আলীর পাশে দাঁড়ালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আলাউদ্দীন আলীর চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি তাঁর পরিবারকে সহযোগিতা করার জন্য আর্থিক অনুদান হিসেবে ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দিয়েছেন। আজ রোববার দুপুরে গণভবনে আলাউদ্দীন আলীর স্ত্রী ফারজানা মিমি ও তাঁর ছোট মেয়ে আদ্রিতা আলাউদ্দিন রাজকন্যাকে ডেকে নিয়ে এই অনুদান দেন। প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক অনুদান দেওয়ার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে আর্থিক অনুদান পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন আলাউদ্দীন আলীর স্ত্রী ফারজানা মিমি। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর এই উদারতা ও মহানুভবতায় কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমাদের পরিবারের জানা নেই। প্রধানমন্ত্রী আমার স্বামীর অসুস্থতার খবর শুনে নিজ উদ্যোগে যোগযোগ করেছেন, আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আমাদের অনেকক্ষণ সময় দিয়েছেন। আলাউদ্দিন আলীর শারীরিক অবস্থার সবকিছু মন দিয়ে শুনেছেন। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, কোনো ধরনের চিন্তা না করতে।’

প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন ফারজানা মিমি। তিনি বললেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আজই প্রথম দেখা হলো। তাঁর মমতার অনেক গল্প এত দিন মানুষের মুখে মুখে শুনেছি। আজ আমরা নিজেরা উপলব্ধি করেছি। সত্যিই তাঁর মমতার তুলনা শুধু তিনিই।’

আলাউদ্দীন আলী ফুসফুসের প্রদাহ ও রক্তে সংক্রমণ সমস্যায় ভুগছেন। পাশাপাশি তাঁর ক্যানসারের চিকিৎসাও চলছে। অবস্থা জটিল আকার ধারণ করলে গত ২২ জানুয়ারি তাঁকে রাজধানীর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি এখন এই হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। অবস্থার অবনতি ঘটলে ২৫ জানুয়ারি সকালে তাঁকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।

আদ্রিতা আলাউদ্দীন রাজকন্যা আলাউদ্দীন আলীর বর্তমান স্ত্রীর একমাত্র মেয়ে। তাঁর আগের সংসারে রয়েছে আরও চার সন্তান। তাঁরা হলেন আজমেরী আলী, শওকত আলী রানা, আফরীন আলী এবং আলিফ আলাউদ্দীন। তাঁরা প্রত্যেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বর্তমান সংসারের মেয়ে রাজকন্যার বয়স আট বছর, এখনো স্কুলপড়ুয়া।

আলাউদ্দীন আলী বাংলা গান, বিশেষ করে বাংলা চলচ্চিত্রে অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান তৈরি করেছেন। তিনি একই সঙ্গে সুরকার, সংগীত পরিচালক, বেহালাবাদক ও গীতিকার। গান লিখে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন। লোকজ ও ধ্রুপদি গানের সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা আলাউদ্দীন আলীর সুরের নিজস্ব ধরন বাংলা সংগীতে এক আলাদা ঢং হয়ে উঠেছে প্রায় চার দশক ধরে। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের বহু স্বনামধন্য শিল্পী তাঁর সুরে গান গেয়ে নিজেদের সমৃদ্ধ করেছেন।