মডেল ও অভিনয়শিল্পীর আত্মহত্যার চেষ্টা

পিজি হেলেন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
পিজি হেলেন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

‘কিছুক্ষণের মধ্যে ফেসবুক লাইভে আসছি। এটাই সম্ভবত শেষ। আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন কারও মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে।’ গতকাল শুক্রবার রাতে নিজের ফেসবুকে এই পোস্ট দেন মডেল ও অভিনয়শিল্পী পিজি হেলেন। এই পোস্ট দেওয়ার কিছুক্ষণ পর সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না ঝোলানো একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘বাই বাই।’ বিষয়টি টের পাওয়া মাত্রই মা জেবি ঝরনা দরজা ভেঙে মেয়ে হেলেনকে তাঁর নিজ কক্ষ থেকে উদ্ধার করেন।

আজ শনিবার দুপুরে মগবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে মুঠোফোনে মেয়েকে উদ্ধারের ঘটনা জানাতে গিয়ে জেবি ঝরনা বলেন, ‘ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার আগে মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খায় হেলেন। এরপর ঘরের সিলিং ফ্যানে ফাঁস দেওয়ার দেওয়ার চেষ্টা করে। তাঁর বন্ধুদের মধ্য থেকে কেউ একজন ফোন করে আমাকে খবরটি জানায়। আমি দ্রুত ওর রুমে যাই। দরজা ভেতর থেকে বন্ধ দেখে ভাঙতে বাধ্য হই। এরপর মেয়েকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে ওকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়। আজ শনিবার সকালে তাঁকে মগবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এনেছি। এখানে চিকিৎসক তাঁকে কয়েক দিন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।’

বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হিসেবে হেলেন যাত্রা শুরু করেন ২০১৫ সালে। অনেকগুলো বিজ্ঞাপনচিত্রের পাশাপাশি তিনি নাটকেও অভিনয় করছেন। চিত্রনায়ক নিরবের ‘গেম রিটার্নস’ ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হলেও শেষ পর্যন্ত তাঁর অভিনয় করা হয়নি। গত কয়েক বছরে কয়েকটি গানের ভিডিওতে মডেল হয়েছেন হেলেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য বিজ্ঞাপনচিত্রের মধ্যে রয়েছে গ্রামীণফোন, ইস্পাহানি চা, অলিম্পিক টুইংকেল বিস্কুট, প্রাণ পিকল, মোজো, সহজ ডটকম, আরএফএল ফ্রেসকো কনটেইনার, আরএফএল টিউবওয়েল। উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হলো ‘ব্ল্যাক হোল’, ‘ডেইলি ফ্রাইট নাইট’, ‘লাইন ইন আ মেট্রো’, ‘সহযাত্রী’ ও নাইন অ্যান্ড হাফ’।

মেয়ের এমন অবস্থার কারণ প্রসঙ্গে মা জেবি ঝরনা বলেন, ‘বয়সের তুলনায় আমার মেয়েটা বেশি দায়িত্বের ভার কাঁধে তুলে নিয়েছে। কাজ করে অনেক। এর মধ্যে কিছু বিষয় তাঁকে কষ্ট দিয়েছে, এমনটাই শুনলাম। আমি সমস্যার বিষয়গুলো বোঝার চেষ্টা করছি।’

আজ শনিবার দুপুরে প্রথম আলোকে হেলেন বললেন, ‘অনেক দিন ধরে হতাশার মধ্যে আছি। কাউকে কিছুই বলতে পারি না। আবার আমার সঙ্গে যা হচ্ছে, তাও সহ্য করতে পারছি না। এসব হতাশা কোনো কাজ নিয়ে নয়। একেবারে ব্যক্তিগত সমস্যা। কোনো কিছু ভেবে না পেয়ে, নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এমন একটি সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। আমার মাথা কাজ করছিল না। এখন বুঝতে পারছি, এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া আমার মোটেও উচিত হয়নি।’