নিয়ম মানার প্রবণতা কম শুটিংবাড়িতে

উত্তরার একটি শুটিংবাড়ি
উত্তরার একটি শুটিংবাড়ি

টেলিভিশন নাটকের শুটিংবাড়ি ও শিল্পীদের জন্য সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো বেশ কিছু নিয়মকানুন তৈরি করলেও সেগুলো মানা হচ্ছে না। বেশ কিছু শুটিংবাড়ি ঘুরে পাওয়া গেছে এমন তথ্য। উত্তরা ও ইস্কাটনের শুটিংবাড়িগুলোর তত্ত্বাবধায়ক ও মালিকেরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন সংগঠন মিলে নিয়ম তৈরি করলেও অভিনয়শিল্পী, পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সেটা মানার প্রবণতা কম।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শুটিংবাড়ির মালিক বলেন, ‘ডিরেক্টরস গিল্ডস, অভিনয় শিল্পী সংঘসহ সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, রাত ১১টার পর কোনো শুটিংবাড়িতে আর শুটিং হবে না। কিন্তু সেই নিয়ম কেউই মানে না। যাদের মানার কথা, তারা না মানলে আমরা কী করতে পারি?’

শুটিংবাড়ি মূলত দিনে দুটি শিফটে ভাড়া হয়। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা এবং এক ঘণ্টার বিরতি দিয়ে বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১ টা। তবে এই শিফট শুধু নামে। শুটিংবাড়ির মালিকেরা জানিয়েছেন, পরিচালক, প্রযোজকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা শিফট অনুযায়ী শুটিং করেন না।

শুটিং হাউস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই নিয়ম শিল্পী–পরিচালকদেরই তৈরি করা। ১১টার পর শুটিং করা যাবে না। কিন্তু তাঁরাই নিয়ম মানেন না। অনেক সময় রাত ১২-১টা অবধি শুটিং গড়িয়ে যায়। শুটিংবাড়ির আলো বন্ধ করার সময় হয়ে গেলে পরিচালক ও শিল্পীরা মিলে অনুরোধ করেন। বাধ্য হয়ে আমরা আলো নেভাতে পারি না। শুটিং চালাতে দিতে হয়।’

আবদুল আলীম জানান, এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য আগে আগে শুটিং শুরু করতে হবে। কিন্তু অনেক সময় শুটিং শুরুই হয় দেরিতে। এ কারণে শেষ হতে সময় লেগে যায়।

দেরিতে শুটিং শেষ হলে কী সমস্যা দেখা দেয়, এর বাস্তব অবস্থা ব্যাখ্যা করলেন শুটিং হাউস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খলিলুর রহমান। তিনি জানান, দেরিতে শুটিং শেষ হলে শুটিংবাড়ির কর্মীরা পুরো বাড়ি পরিষ্কারের সুযোগ পান না। একই সঙ্গে তাঁদের বিশ্রামেরও সুযোগ নেই। রাতে না ঘুমালে তাঁরা পরদিন কাজের প্রতি অনীহা দেখান। এসব অনিয়মের কারণে শুটিংবাড়িতে দেখাশোনার কর্মী পাওয়া যায় না। অনেকে কিছুদিন চাকরি করে চলে যান। আর শুটিংবাড়িগুলো আবাসিক এলাকায়। তাই রাত গভীর হলে আশপাশের বাড়িওয়ালারা অভিযোগ করেন। সব মিলিয়ে একটা বাজে অবস্থার সৃষ্টি হয়।

খলিলুর রহমান বলেন, এই সমস্যা থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় ঠিক সময়ে শুটিং শুরু করা। না হলে দ্রুত শেষ করা যাবে না। আর সবার আগে দরকার সদিচ্ছা।

বিষয়গুলো নিয়ে কথা হয় ডিরেক্টর গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে বসে নিয়ম তৈরি করেছি। সেটা মানা সবার দায়িত্ব। এ জন্য আমরা আন্তরিকতা আশা করছি। শুধু পরিচালকেরা চাইলেও হবে না। এটা অভিনয়শিল্পীসহ সবারই চাইতে হবে। তবে এ ধরনের অনিয়ম হলে আমাদের জানানো উচিত। জানালেই আমরা সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেব।’