নায়িকাদের বৈশাখ

>

মম, মিম আর মানতাসা—তিনজনই লাক্স তারকা। অভিনয়েও নিয়মিত। মম আর মিম তো অনেক আগেই নাটক–টেলিছবির পাশাপাশি সিনেমায় নাম লিখিয়েছেন। আর মিম মানতাসা এগোচ্ছেন একটু একটু করে। আমরা এই তিন নায়িকার কাছে এবার কাজ নয়, জানতে চেয়েছি তাঁদের বৈশাখী পরিকল্পনা নিয়ে—

বিদ্যা সিনহা মিম
বিদ্যা সিনহা মিম

বিদ্যা সিনহা মিম
পয়লা বৈশাখ মানেই নতুন পোশাক
লাক্স সুপারস্টার ২০০৭

শৈশবের বৈশাখ

ছোটবেলার পয়লা বৈশাখ কেটেছে ঘরের চার দেয়ালের মধ্যেই—নিজের বাসায়, বন্ধুদের বাসায়। তখন আমরা কুমিল্লা শহরে থাকতাম। পয়লা বৈশাখ শহরজুড়ে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান হতো, সেই সব অনুষ্ঠানে দেখতে প্রচুর মানুষের ভিড় জমত। এ কারণে মা–বাবা বের হতে দিতেন না। বাড়িতেই পয়লা বৈশাখ পালন করতাম। বাসার আশপাশের বন্ধুদের বাসায় যেতাম। বন্ধুরা আমাদের বাসায় আসত।

ছোটবেলায় পয়লা বৈশাখ মানেই নতুন পোশাক। বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই নতুন জামা কেনা বা তৈরির প্রস্তুতি চলত। পয়লা বৈশাখের দিন নতুন জামা পরতেই হবে। তখন লাল-সাদা রঙের সালোয়ার–কামিজ পরতাম। বাসায় ইলিশ, পান্তা ও খিচুড়ির আয়োজন থাকত।

স্কুলজীবনের শেষের দিকে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ঢাকা চলে আসি। লাক্স সুপারস্টার নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে পয়লা বৈশাখ পালনে পরিবর্তন আসে।

ঢাকায় আসার পর

ঢাকায় স্থায়ী হওয়ার পর পয়লা বৈশাখ বিভিন্ন জায়গায় পালন করি। আগে সালোয়ার–কামিজ পরে পয়লা বৈশাখ পালন করলেও ঢাকায় আসার পর থেকে শাড়ি পরে পালন করি। প্রতিবারই চ্যানেল আই, বিনোদন জগতের বন্ধুদের বাসায় গিয়ে পারিবারিকভাবে পালন করি। পয়লা বৈশাখের সবচেয়ে জমজমাট আসর বসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ও রমনার বটমূলে। দুঃখের বিষয়, পয়লা বৈশাখের দিন জায়গা দুটোতে আজও যাওয়া হয়নি। যেতে খুব ইচ্ছা করে।

এবারের বৈশাখ

এবার দিনটিতে একটু ভিন্ন রঙের—লেবু–গোলাপিরঙা শাড়ি পরব। এবারও চ্যানেল আইয়ের বৈশাখ উৎসবে যোগ দেওয়ার কথা আছে। পাশাপাশি বিনোদন জগতের বেশ কয়েকজন বন্ধুর পারিবারিক পয়লা বৈশাখ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা আছে।

জাকিয়া বারী মম
জাকিয়া বারী মম

জাকিয়া বারী মম
খোঁপায় রাখি বেলি ফুল
লাক্স সুপারস্টার ২০০৬

পয়লা বৈশাখ আমাদের সম্প্রীতি বাড়িয়ে দেয়। একে অপরকে জানার, বোঝার সুযোগ দেয়। সেই জায়গা থেকে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর নানা ধরনের আয়োজন হয়। আমার জীবন তার বাইরে নয়।

শুটিং থেকে মুক্তি

আমার ১৩ এপ্রিল অবধি শুটিং। শুধু একটা দিন শুটিং থেকে মুক্তি। পয়লা বৈশাখের পরদিনও শুটিং করার কথা। এদিন শুটিং নেই—এটা ভাবতেই ভালো লাগছে। এ উপলক্ষে অনেকগুলো কাজ করলাম। সেগুলো প্রচারিত হবে। কিছু কাজ দেখারও ইচ্ছা আছে।

উপহারের বৈশাখ

এবারের বৈশাখে কেনাকাটার সুযোগ পাইনি। আমি কেনাকাটা করি মূলত অনলাইনে। যানজট আর শপিং সেন্টারে গিয়ে কেনাকাটার সুযোগ মেলে না। তবে বেশ কিছু জিনিসপত্র উপহার পেয়েছি। শাড়ি, গয়না পেয়েছি। এগুলো দিয়েই এবার নববর্ষ পালন করব। খুবই সুন্দর সবগুলো জিনিস।

সকাল হবে পরিবারের সঙ্গে

পয়লা বৈশাখের যে রীতি, সেটা আমার বাসায় খুব বেশি পালন করা হয় না। তবে আমার মায়ের বাসায় হয়। সকালে পান্তা-ইলিশ ও ভর্তার আয়োজন হয়। সকালে রেডি হয়ে তাই মায়ের বাসায় যাব। সবার সঙ্গে মিলে খাওয়াদাওয়া করব। এই তো। ওই দিন বাসায় গেলে মা-বাবা দুজনই খুব খুশি হন। তাঁদের সঙ্গে সময় কাটাতে আমারও খুব ভালো লাগে।

সাজে-কাজে

বৈশাখের সাজে প্রথম পছন্দ আমার সুতি শাড়ি এবং কাচের চুড়ি। আর খোঁপায় রাখি বেলি ফুল। এটা এমন একটা ফুল, যেটা শুকিয়ে গেলেও গন্ধ বিলায়। আমাদের জীবনটা এমন হওয়া উচিত—বেলি ফুলের মতো। কারণ এ সময় মানুষে মানুষে ভালোবাসা কমে গেছে। আমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও সম্প্রীতি বাড়ানো জরুরি। আশা করছি, নববর্ষ সেই ভালোবাসা বাড়িয়ে দেবে।

মিম মানতাসা
মিম মানতাসা

মিম মানতাসা
বৈশাখে আলপনা আঁকি ক্যাম্পাসে

লাক্স সুপারস্টার ২০১৮

বৈশাখ তো নতুন বছরের আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। এবারও নিশ্চয় তা-ই আনবে। এ কারণে আমাদের প্রস্তুতিও কম নয়। লাক্স সুপারস্টার প্রতিযোগীতায় যাওয়ার আগে থেকেই নববর্ষ পালনের একটা রীতি আমাদের পরিবারের ছিল। এখনো আছে। সেই সঙ্গে আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে ক্যাম্পাসের আয়োজনে ঢুকে গিয়েছি।

খাওয়াদাওয়া

পয়লা বৈশাখের সকালবেলা আমাদের বাসায় ইলিশের কয়েক পদ রান্না হয়—ভাজি, সরষে ইলিশ, ইলিশের ঝোলসহ নানা কিছু। সঙ্গে থাকে আমার মায়ের হাতে বানানো ভর্তা। কত রকমের যে ভর্তা, সেটা না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না। আমরা সকালে উঠে পান্তা–ইলিশ খেয়ে দিন শুরু করি। দুপুরের দিকে অনেক আত্মীয়স্বজন আসে। তাদের সঙ্গে আড্ডা মারতে মারতে সময় কেটে যায়।

সাজ ও কেনাকাটা

পয়লা বৈশাখের কেনাকাটা আগেই করে ফেলি। এবারও যেমন একটি দেশীয় ফ্যাশন হাউস থেকে শাড়ি কিনেছি। বাইরে থেকেও কিনেছি আরেকটা। শাড়ি পরেই বের হব সকালে। সাজটা আমি নিজে করি না। আমার বাড়ির কাছেই একজন আপু আছেন, তাঁর পারলার আছে। তিনি পয়লা বৈশাখের দিন সকালবেলা এসে সাজিয়ে দিয়ে যান। এবারও বলে রেখেছি, তিনি আসবেন।

ঘুরতে যাওয়া

আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই প্রতিবছর বৈশাখে ক্যাম্পাসে যাই। কারণ বৈশাখে আলপনা আঁকি ক্যাম্পাসে। সেখানে সময় দিই। বন্ধুদের সঙ্গে হইহুল্লোড় করে সময় কাটাই। আর বিকেলের দিকে বের হই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে। অনেক কাজিনরা থাকে। তাদের নিয়ে বের হতে হয়। এভাবেই কেটে যায় বৈশাখের পুরো দিন।