ফেলুদা ঘুরছেন ঢাকা ও চট্টগ্রামে

ধানমন্ডির একটি বাড়িতে শুটিং হচ্ছে ফেলুদার
ধানমন্ডির একটি বাড়িতে শুটিং হচ্ছে ফেলুদার

ধানমন্ডিতে এমন সুনসান বাড়ি পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু ফেলুদার ঢাকার বাড়ি জোগাড় করে ফেলেছেন পরিচালক তৌকীর আহমেদ। গত বৃহস্পতিবার শুটিংবাড়িতে প্রতিবেদকের দেখা পেতেই রসিকতা করে বললেন তৌকীর, ‘এই বাড়িও খুঁজে বের করে ফেলেছেন? ফেলুদার মতোই গোয়েন্দাগিরি করছেন।’

বাড়িটার শরীরজুড়ে সাদা রং। সামনে বেশ বড় লন। লনে সবুজ ঘাস। ঘাসের ওপর চারটা বেতের চেয়ার পাতা। সামনে টেবিল। এক পাশে বসেছেন ফেলুদা। হ্যাঁ, ফেলুদাই। পরিচালক তৌকীর আহমেদ তাঁকে ফেলুদা হিসেবেই চেনালেন। এক ফাঁকে বললেনও, ‘ফেলুদা, চেয়ারটা একটু সরিয়ে নিন।’

তৌকীরের কথামতো চেয়ার নিয়ে একটু সরলেন ‘ফেলুদা’ আহমেদ রুবেল। ক্যামেরায় ঠিকঠাক তুলে আনার জন্যই এই চেষ্টা। ‘রোলিং, থ্রি, টু, ওয়ান, জিরো, অ্যাকশন’ বলে মনিটরে চোখ রাখলেন তৌকীর। ফেলুদা হয়ে চেয়ারে বসা আহমেদ রুবেল সংলাপ আওড়ালেন। তাঁর পাশে জটায়ু ও তোপসে। এই দুটি চরিত্রে অভিনয় করছেন আজাদ আবুল কালাম ও মীর নওফেল আশরাফি।

সত্যজিৎ রায়ের ‘নয়ন রহস্য’ গল্প থেকে বাংলাদেশে নির্মিত হচ্ছে এই ফেলুদা। নয়নের রহস্য উন্মোচন করতেই পুরো দলবল নিয়ে ফেলুদা এসেছেন এই বাড়িতে। কী হবে সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। এই রহস্য উন্মোচন করতে ২১ এপ্রিল থেকে ঢাকার নানা প্রান্তে শুটিংয়ে নেমেছে ফেলুদার দল।

কয়েক ধাপে শেষ হলো দৃশ্যটি। কড়া রোদের ঘামকে নিয়ন্ত্রণ করতে লনে রাখা ফ্যান চালু করতে হলো কয়েকবার। এই ফাঁকে কথা হলো পরিচালক তৌকীর আহমেদের সঙ্গে। প্রশ্ন ছিল, এই কয়েক দিন যে শুটিং হলো, পাঠক হিসেবে কি আপনি ফেলুদা নিয়ে সন্তুষ্ট? উত্তরটা যেন প্রস্তুতই ছিল। তৌকীর বললেন, ‘বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথের পাঁচালী আর সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালী কিন্তু এক নয়। আবার ফেলুদা এর আগে যাঁরা বানিয়েছেন, সবারটা কিন্তু এক রকম হয়নি। সত্যজিৎ ও তাঁর ছেলের নির্মাণেও পার্থক্য আছে। তাই আমারটাও আমার মতোই হবে। তবে চেষ্টা থাকবে পাঠকের চিন্তার কাছাকাছি নির্মাণ করার।’

আবার দৃশ্য ধারণ শুরু হয়। সেটি শেষ হলে তৌকীর নির্দেশ দেন ভেতরের সেটটি তৈরি করতে। এই ফাঁকে কথা হয় ফেলুদার চরিত্রে অভিনয় করা আহমেদ রুবেলের সঙ্গে। বললেন, ‘আমরা সময় খুব কম পেয়েছি। যতটুকু পেয়েছি, চেষ্টা করছি ঠিকঠাক গল্পটা তুলে আনতে। কতটা হবে, সেটা বলতে পারবেন দর্শকেরা। কারণ, গল্পটা তো আমরা সবাই জানি। এখন অভিনয়টা ঠিকমতো হলো কি না, দেখবেন দর্শক।’

প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল অবশ্য আগেই জানিয়েছেন, আগামী মে মাসে ভিডিও স্ট্রিমিং সাইট বায়স্কোপে ধারাবাহিকটি দেখা যাবে। তিন পর্বের এই ধারাবাহিকটির শুটিং ঢাকার পাশাপাশি চলবে চট্টগ্রামেও।