২৭ জুলাই নির্বাচন, তফসিল ঘোষণা

বিএফডিসিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির কার্যালয়ে হবে নির্বাচন
বিএফডিসিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির কার্যালয়ে হবে নির্বাচন

জটিলতা কাটিয়ে দীর্ঘ আট বছর পর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির নির্বাচন হতে যাচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এফবিসিসিআইয়ের অঙ্গসংগঠন প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির নির্বাচন আগামী ২৭ জুলাই। শনিবার সকাল ১১টার দিকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) জহির রায়হান কালার ল্যাব মিলনায়তনে ২০১৯-২১ মেয়াদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। প্রশাসক ও প্রযোজকদের উপস্থিতিতে তফসিল ঘোষণা করেন এই নির্বাচনের জন্য গঠিত আপিল বোর্ডের সদস্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সৈয়দা নাহিদা হাবিবা। সঙ্গে ছিলেন নির্বাচন বোর্ডের সদস্য ও একই মন্ত্রণালয়ের সহকারী প্রোগ্রামার খাদেমুল ইসলাম।

তফসিলে বলা হয়, আগামী ২৯ মে পর্যন্ত সাধারণ সদস্যদের চাঁদা আদায় শেষে ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। ১৭ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রদান ও জমা নেওয়া হবে। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৬ জুলাই।

সবশেষ নির্বাচন হয় ২০১১ সালের ১৮ আগস্ট। ২০১১-১২ মেয়াদে সভাপতি ছিলেন সোহেল রানা, সাধারণ সম্পাদক ডিপজল। এরপর থেকে নির্বাচন না হওয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে উপসচিব পদমর্যাদার একজনকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে চালানো হচ্ছে সমিতি।

নতুন নির্বাচনের ব্যাপারে প্রশাসক সেলিম হোসেন বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির নির্বাচন আটকে আছে। চলচ্চিত্রের অভিভাবকই হলো প্রযোজকেরা। তাই নির্বাচনটা তাড়াতাড়ি হলে চলচ্চিত্র গতিশীল হবে।’ তার আগে গত মার্চ মাসের মাঝামাঝিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্বাচন বোর্ড ও আপিল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। প্রশাসক জানান, প্রতি বোর্ডে তিন জন করে কর্মকর্তা আছেন।

এর আগে ২০১৬-১৮ মেয়াদি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিলেন প্রশাসক। কিন্তু ওই সময় প্রযোজক সমিতির গঠনতন্ত্রের ৯গ ধারা দেখিয়ে সাইফুল ইসলাম নামের একজন প্রযোজক হাইকোর্টে মামলা করলে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। ওই ধারা অনুযায়ী, কেউ যদি পরপর তিনবার অর্থাৎ ছয় বছর টানা নির্বাচিত হন, তাহলে পরের এক নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হতে পারবেন না। কিন্তু ওই নির্বাচনে এমন সাতজন প্রার্থী ছিলেন।

সেই জটিলতা কি এবার মিটল? প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির প্রশাসক সেলিম হোসেন বলেন, ‘আমরা উচ্চ আদালত থেকে রায় নিয়েই নির্বাচনে যাচ্ছি। নির্বাচনে কোনো বাধা নেই, কোনো জটিলতা নেই।’

যে সাতজন প্রার্থীর কারণে হাইকোর্টের রিটে নির্বাচন স্থগিত হয়েছিল, তাঁদের একজন সাবেক প্রযোজক নেতা খোরশেদ আলম খসরু। এবারের নির্বাচনে এ নিয়ে আবার সমস্যা হবে কি না—এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যদি পরপর তিনবার নির্বাচিত প্রার্থী নিয়ে আবার ঝামেলা হয়, তাহলে আদালতে আপিল করব। যদি অনুমতি পাই, নির্বাচন করব, না পেলে করব না। যেকোনোভাবেই এবার নির্বাচন হোক, এটাই আমার চাওয়া।’

এদিকে তফসিল ঘোষণার পর থেকেই বিএফডিসিতে অবস্থিত প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির কার্যালয় ঘিরে প্রযোজকদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। রোববার দুপুরে কার্যালয়ের সামনে দেখা মিলল সাবেক প্রযোজক নেতা কামাল মোহাম্মদ কিবরিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সমিতি নিষ্ক্রিয়। বর্তমানে চলচ্চিত্রশিল্প গভীর সংকটে। এই অবস্থায় সমিতি সক্রিয় হলে চলচ্চিত্রের অবস্থা উন্নতি হবে বলে আমার বিশ্বাস।’