পূজা বেদির 'মেন টু' আন্দোলন

পূজা বেদি ও করণ ওবেরয়
পূজা বেদি ও করণ ওবেরয়

১৯৯২ সালে মুক্তি পাওয়া আমির খানের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ‘যো জিতা ওহি সিকানদার’-এর কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। এই ছবিতে ‘দেবিকা’ চরিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি পান পূজা বেদি। এই ছবির জন্য তিনি ‘সেরা সহ–অভিনেত্রী’ বিভাগে ফিল্মফেয়ারে মনোনয়ন পান। তাঁকে বড় পর্দায় সর্বশেষ দেখা গেছে ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘শক্তি’ সিনেমায়। সেই ২০১১ সালেই তাঁকে সর্বশেষ দেখা গেছে ছোট পর্দায়, ‘বিগ বস’–এর পঞ্চম সিজনে, একজন প্রতিযোগী হিসেবে। এ ছাড়া অসংখ্য বিজ্ঞাপনচিত্রেও দেখা গেছে তাঁকে। এবার একেবারে অন্যভাবে আলোচনায় এসেছেন পূজা বেদি।

৬ মে ভারতের ছোট পর্দার জনপ্রিয় তারকা করণ ওবেরয়কে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে মুম্বাই পুলিশ। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পূজা বেদি বলেন, ‘সবাই জানে করণ কেমন। সে পুরোদস্তুর একজন ভদ্রলোক। তার ওপর যে অভিযোগ আরোপ করা হয়েছে, তা গুরুতর।’

গণ্যমাধ্যমে প্রকাশিত ঘটনা উল্লেখ করে বললেন, ‘অভিযোগকারী নারীর সঙ্গে করণের পরিচয় ২০১৬ সালের শেষ দিকে, একটা ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে। এটি ২০১৭ সালের ঘটনা। তখন কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কোনো নিউজ হয়নি। ২০১৮ সালের অক্টোবরে করণ নিজেই ওই নারীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে হয়রানির অভিযোগ দায়ের করেন। ২০১৮ সালে ওই নারী এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, তাঁর আর করণের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ সময় সে তাঁর বক্তব্যের পক্ষে কিছু উপহার ছাড়া অন্যান্য কিছু দেখান। আর ২০১৯ সালে এসে দেখা গেল, সেই নারী করণের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন। এই নারীর ২০১৮ সালের বক্তব্য আর ২০১৯ সালের মামলা সম্পূর্ণ বিপরীত। সে একজন নারী এবং পুলিশ ওই মামলা নিতে বাধ্য। করণ যতই নিরপরাধ হোক না কেন, সব প্রমাণ করণের পক্ষে থাকলেও আইন অনুযায়ী পুলিশকে এখন সব আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।’

পূজা বেদি আরও বলেন, তিনি ১৫ বছর ধরে করণকে একজন ভদ্র, দয়ালু ও চমৎকার ভদ্রলোক হিসেবেই চেনেন। নারীদের সম্মান করেন করণ। তাঁকে সবচেয়ে কাছের বন্ধু বলে উল্লেখ করেন পূজা বেদি। কয়েক বছর ধরে নারী অধিকারের জন্য লড়াই করছেন।

পূজা বেদি আরও বলেন, ‘একজন নারীর কোনো অধিকার নেই একটা পুরুষের জীবন ধ্বংস করার। ধর্ষণ মারাত্মক অপরাধ। এই আইন নারীকে রক্ষা করার জন্য। কিন্তু সেই আইনকে ব্যবহার করে মিথ্যা মামলায় যদি তা একজন পুরুষকে ফাঁসানো হয়, তা জঘন্য অপরাধ। করণকে ধর্ষক বিবেচনায় তাঁর কর্মক্ষেত্রে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা “মেন টু” আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটিয়েছি। কাল যদি সব মিথ্যা প্রমাণিত হয়, সেটা খুব ছোট্ট করে গণমাধ্যমে আসবে। আর করণের ধর্ষক ট্যাগ থেকেই যাবে। করণের পেশা, নাম, সম্মান নষ্ট করার জন্য এবং করণ আর তাঁর পরিবারের মানহানির জন্য ওই নারীর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। একজন নারীর আইনের অপব্যবহারের জন্য করণ এখন জেলে।’

অভিনয়শিল্পী, উপস্থাপক এবং কলাম লেখক পূজা বেদি জনপ্রিয় টিভি ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব কবির বেদি ও শাস্ত্রীয় নৃত্যশিল্পী প্রতিমা বেদির মেয়ে। ৪৮ বছর বয়সী পূজা বেদি প্রথম বিয়ে করেন ১৯৯৪ সালে, ফারহান ইব্রাহিম ফার্নিচারওয়ালাকে। এই দম্পতির দুই সন্তান—মেয়ে আলিয়া ফার্নিচারওয়ালা আর ছেলে ওমর ইব্রাহিম। ২০০৩ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। এই বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রেমিক মানেক কন্ট্রাক্টরের সঙ্গে বাগদান করে আলোচনায় এসেছিলেন। মেয়ের শুটিং আর ছেলের কলেজের ছুটির ওপর নির্ভর করছে তাঁর আর মানেক কন্ট্রাক্টরের বিয়ে। তবে তা এই বছরেই। এর আগে ২০১৬ সালে ৭০ বছর বয়সে কবির বেদি দীর্ঘদিনের প্রেমিকা পারভিন দুসাঞ্জের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন।

অন্যদিকে, করণ ওবেরয় ‘জেসি জ্যায়সি কোয়ি নেহি’ টিভি সিরিয়াল দিয়ে জনপ্রিয়তা পান। করণের আইনজীবী ৯ মে জামিনের জন্য আবেদন করবেন। ই টাইমস