যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন অ্যালেন ডিজেনারেস

অ্যালেন ডিজেনারেস
অ্যালেন ডিজেনারেস

#মি টু যদি কোথাও সফল হয়ে থাকে, তবে সেটা হলিউডে। হলিউডের তারকা নারীরাই একে একে লজ্জা, সংকোচ, ভয় ছুড়ে ফেলে মুখ ফুটে বলেছেন যৌন নিপীড়নের কথা। অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, সালমা হায়েক, অ্যাশলে জড, জেনিফার লরেন্স, গিনেথ প্যালট্রো, কারা ডালাভিনেন, কেট বেকিনসেল, লি সিডু, রোজ ম্যাকগোয়ান, হিদার গ্রাহামদের তালিকায় এবার যোগ হয়েছে আরেকটি নতুন নাম। তিনি অ্যালেন ডিজেনারেস।

‘অ্যালেন, দেখলেন, জয় করলেন’ এমনটা ঘটেনি কমেডিয়ান, উপস্থাপক, অভিনেতা, লেখক, প্রযোজক অ্যালেন ডিজেনারেসের ক্ষেত্রে। অস্কারের ইতিহাসের সফলতম উপস্থাপক তিনি। ২০১৪ সালের অস্কারের মঞ্চে তিনি যে ছবিটি তুলে টুইট করেছিলেন, সেই ছবি ৬ ঘণ্টায় ২৩ লাখ ৭০ হাজার বার রিটুইট করা হয়! জীবনে সংগ্রাম ছাড়া যে সফলতার শিখর স্পর্শ করা যায় না, তার আদর্শ উদাহরণ তিনি। তাই ডেভিড লেটারম্যান তাঁর নেটফ্লিক্সের শোতে অ্যালেনকে আমন্ত্রণ জানালেন এভাবে, ‘যে অতিথিকে পরিচিত করিয়ে দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।’ আর এই শোতে অ্যালেন তাঁর সৎবাবা কর্তৃক যৌন নির্যাতনের কথা জানান।

সিএনএনের প্রতিবেদন অনুসারে, ওই সাক্ষাৎকারে অ্যালেন ডিজেনারেস জানান, তিনি কিশোরী বয়সে তাঁর মায়ের তৎকালীন স্বামীর দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হন। তাঁর মা বেটি ডিজেনারেসের স্তন ক্যানসারের ফলে স্তন অপসারণ করার পর এই যৌন নির্যাতন শুরু হয়। এরপর থেকেই যখনই তাঁর মা বাইরে গিয়েছেন, তখনই একা পেয়ে অ্যালেনকে যৌন নির্যাতন করেছেন তাঁর সৎবাবা রয় গ্রুসেনডর্ফ।

ডেভিড লেটারম্যানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অ্যালেন বলেন, ‘যখনই এসব মনে হয়, আমার নিজের ওপর প্রচণ্ড রাগ হয়। আমি কেন এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারিনি, থামাতে পারিনি। এটা একটা ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। তখন আমার বয়স ছিল ১৫ বা ১৬। আমার তখন এসব নিপীড়ন প্রতিরোধ করার মতো ক্ষমতা ছিল না। আর এত দিন পর এসে আমার এই অভিজ্ঞতা বিস্তারিত জানানোর একটাই কারণ, অন্য নারীরা যাতে সচেতন হন। তাঁদের সঙ্গে যেন এ রকম কিছু না ঘটে।’

তাৎক্ষণিকভাবে মাকে জানিয়েছিলেন কি না? এই প্রশ্নের উত্তরে অ্যালেন জানান, তিনি প্রায় এক বছর কাউকে কিছু জানাননি। পরে একদিন সাহস করে মাকে সব খুলে বলেন। কিন্তু সব শুনে তাঁর মা মোটেও বিশ্বাস করেননি। তাঁর স্বামী যে এমন কিছু করতে পারেন, সেটি তাঁর ঘুণাক্ষরেও মনে হয়নি। বরং বেটির মনে হয়েছিল, অ্যালেনের বাবাকে ডিভোর্স করে রয়কে বিয়ে করায় তাঁর ওপর অ্যালেনের ক্ষোভ রয়েছে। অ্যালেনের মা এই ঘটনার পর আরও ১৮ বছর সেই স্বামীর সঙ্গে সংসার করেছিলেন। পরে অনেকবার এ ধরনের ঘটনা ঘটায় একসময় তাঁকে ছেড়ে যেতে বাধ্য হন।

১৯৫২ সালে স্পিচ থেরাপিস্ট বেটি তাঁর বাবা ইলিয়ট ডিজেনারেসকে বিয়ে করেন। ১৯৫৮ সালে সেই দম্পতির সংসারে জন্ম নেন অ্যালেন। ১৯৭৪ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।