সংগীতাঙ্গনে বিশাল এক বেকারত্ব অপেক্ষা করছে
যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হওয়া বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন নিয়ে একটি গান বেঁধেছেন আগুন। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে গানটি। এ ছাড়াও ঈদের একটি টিভি অনুষ্ঠানের জন্য শেষ করলেন গানের রেকর্ডিং। মহামারিতে কেমন কাটছে তাঁর, তা নিয়ে কথা হলো প্রথম আলোর সঙ্গে।
বর্তমানে কাজের ব্যস্ততা কেমন?
এখন কাজ সেভাবে নেই। কয়েক দিন আগে করোনার ওপর একটি গান করেছি। নতুন একটা গানের রেকর্ডিং চলছে। বাসায় থেকেই অনলাইনে গানের কিছু কাজ করছি। ঈদের জন্য বৈশাখী টিভির রেকর্ডিং শেষ করলাম। আরও কিছু কাজের কথা হচ্ছে।
করোনা নিয়ে গান করার বিশেষ কোনো কারণ আছে?
হ্যাঁ, আছে। শিল্পীর দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে মানুষকে সচেতন করতেই গানটি রেকর্ডিং করেছি। চারপাশের মানুষ অসচেতন। বিভিন্ন এলাকা লকডাউন থাকার পরও মানুষ কিছুই মানতে চাইছে না। বাইরে অনেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। মাস্ক ব্যবহার করে না, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে না। এই অসচেতনতা আমাকে কষ্ট দেয়। সে জন্য আমি গান দিয়ে মানুষকে সচেতন করতে চেয়েছি। গানই আমার প্রতিবাদের ভাষা। একইভাবে বর্ণবাদ নিয়েও গান গেয়েছি।
সাম্প্রতিক সময়ের আমেরিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন নিয়ে?
হ্যাঁ। ইউএসএ পুলিশ যাঁকে মেরে ফেলেছে, তাঁকে নিয়ে গান করেছি। বর্ণবাদ নিয়েই পুরো গান। শুধু শরীরের রঙের জন্য মানুষকে হত্যা করা বিশাল অপরাধ।
করোনার এই সময়ে মানসিক অবস্থা কেমন?
মানসিকভাবে ভালো নেই। আমি ডিপ্রেসড হয়ে গেছি। কাজের মানুষ আমরা, কাজ করে বেড়াই। সেসব এখন প্রায়ই বন্ধ। বাসায় বসেও কোনো কাজ হয় না। যতই পত্রিকা, টিভির নিউজ দেখি; ততই মন খারাপ হচ্ছে। আমি খুবই কম বের হই। আর কত দিন এভাবে ঘরে থাকব? আমাদের পরিণতি কোন দিকে যাচ্ছে কিছুই জানি না। এসব চিন্তায় দিন দিন ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছি। ভালো নেই, ভালো থাকার চেষ্টা করছি।
কাজের ক্ষেত্রে বের হতে হয়?
কাজ এখন সেভাবে নেই। তারপরও সচেতনভাবে বের হয়েছিলাম। মাস্ক-চশমা ছিল। যতক্ষণ বাইরে ছিলাম, ততক্ষণই ভয়ে ছিলাম। এ রোগে আক্রান্ত হওয়া নিয়ে ভয়ে আছি। তারপরও মানুষ সচেতন হওয়া নিয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছে। এসব মিলিয়ে আমি বেশ আপসেট।
কর্মক্ষেত্রে করোনা কী ধরনের প্রভাব ফেলেছে?
একদম স্থির হয়ে আছে কাজকর্ম। কাজের মানুষ আমরা। কাজ ছাড়া ভালো লাগে না। দিন যত যাচ্ছে, ততই খারাপ লাগছে। আমাদের সংগীতাঙ্গনে বিশাল এক বেকারত্ব অপেক্ষা করছে। মানুষের মনে আনন্দ না থাকলে কে গান শুনবে।
সংগীতাঙ্গনে কী ধরনের পরিবর্তন দেখছেন?
এ অঙ্গনে বিভিন্ন রকম পরিবর্তন চলে এসেছে। কিন্তু ডিজাস্টার এখনো শুরু হয়নি। করোনা আরেকটু স্তিমিত অবস্থায় যখন যাবে, তখন বোঝা যাবে এর প্রভাব কতটা। আমাদের বিশাল ক্ষতি ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। এই প্রভাব শিল্পীর ওপর পড়বে। যেসব শিল্পীর জমানো টাকা নেই, তাঁরা মহাবিপদের মধ্যে পড়তে যাচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে।