একটি অনন্য কবিতাসন্ধ্যা

বেঙ্গল শিল্পালয়ে প্রাণের জয়বার্তা অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করছেন ইকবাল বাহার চৌধুরী l প্রথম আলো
বেঙ্গল শিল্পালয়ে প্রাণের জয়বার্তা অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করছেন ইকবাল বাহার চৌধুরী l প্রথম আলো

সাউন্ড বক্সের ভেতর থেকে ভেসে আসছিল তাঁর ভরাট গমগমে কণ্ঠ। ‘ভালোবেসে সখী নিভৃতে যতনে, আমার নামটি লিখ, তোমার মনের মন্দিরে’—রবীন্দ্রনাথের এ গানটির আবৃত্তি। যারা ভয়েজ অব আমেরিকা শোনেন, তাঁদের কাছে পরিচিত এই কণ্ঠ। দীর্ঘ ৩৮ বছর ভয়েজ অব আমেরিকায় খবর পড়ে তিনি এখন অবসরে। তিনি ইকবাল বাহার চৌধুরী। ঢাকায় আবৃত্তি, নাটক কত কিছুই না করেছেন তিনি। এখন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী।
গতকাল সন্ধ্যায় ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ের গ্যালারিতে ছিল তাঁর একক আবৃত্তিসন্ধ্যা ‘প্রাণের জয়বার্তা’। এ মাসেই বাংলার দুই গুরুত্বপূর্ণ কবির জন্মদিন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা নিয়ে তাঁর একটি আবৃত্তির সিডি প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। সেই সিডির কবিতাগুলোই আবৃত্তি করলেন তিনি। অনুষ্ঠানের শুরুতে বেঙ্গল শিল্পালয়ের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী বলেন, ‘অনিবার্য কারণবশত সিডিটি এখনো তৈরি হয়নি। আবৃত্তিকারকে আবারও পাড়ি জমাতে হবে আমেরিকায়। যাওয়ার আগে তাঁর কণ্ঠে কবিতা শোনার সুযোগটি ছাড়তে চাইনি আমরা।’
ইকবাল বাহার চৌধুরী জানালেন, ১৯২৬ ও ১৯২৯ সালে তাঁর বাবা হাবিবুল্লাহ বাহার চৌধুরীর আমন্ত্রণে চট্টগ্রামে তাঁর দাদাবাড়িতে যান কাজী নজরুল ইসলাম। সেখানকার নারকেলবীথিতে বসে সারা রাত কবিতা লিখতেন তিনি। কবির জন্য চা তৈরি করে দিতেন ইকবাল বাহারের দাদি। সকালে অসম্ভব সুন্দর কিছু কবিতা উপহার দিতেন কবি। সেখানে বসেই নজরুল লিখেছিলেন ‘বাতায়ন পাশে গুবাক তরুর সারি’ কবিতাটি। ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, তাঁদের পরিবারের চার সদস্যকে নিয়ে কবিতা লিখেছিলেন কাজী নজরুল। তিনি ওই কবিতাগুলোও আবৃত্তি করেন।
অনুষ্ঠানে সিডির মোড়কের প্রচ্ছদটি মেলে দাঁড়ান অতিথি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘আমি বরাবরই তাঁর আবৃত্তির অনুরাগী। তিনি বুঝে কবিতা আবৃত্তি করেন।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আবুল হাসনাত, ম. হামিদ, মালেকা বেগম, শবনম মুশতারী, মুনিরা মিঠুসহ আরও অনেকে।