তুরস্কের গণতন্ত্রকে যেভাবে বদলে দিয়েছেন এরদোয়ান

২০০৩ সালে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে ক্ষমতায় আরোহণ রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের। ২০১৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এ পদেই দায়িত্ব পালন করছেন। গত রোববার তুরস্কে অনুষ্ঠিত গণভোটে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রস্তাব জিতেছে। এই ভোটে জয়ের মাধ্যমে এরদোয়ান নিজের দেশকে আরও পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন বলে মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞদের।

এরদোয়ানের সমর্থকদের দাবি, গত প্রায় ১৪ বছরে তুরস্কে উল্কার গতিতে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে। দারিদ্র্যের কশাঘাত থেকে মুক্তি পেয়েছে লাখো মানুষ। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, ২০০৩ সালে এরদোয়ান যখন প্রধানমন্ত্রী হন, তখন দেশের মাথাপিছু গড় আয় ছিল ৩ হাজার ৮০০ মার্কিন ডলার। ২০১৭ সালে এসে এ আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজারে।

তবে এই ১৪ বছরে একের পর এক সন্ত্রাসী হামলার শিকার হতে হয়েছে তুরস্ককে। গত বছর ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানও দেখতে হয় দেশটিকে। সব মিলিয়ে এক দশক আগের তুরস্ক আর ২০১৭ সালের তুরস্কের মধ্যে বিস্তর ফারাক।

রোববারের গণভোটের আগে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের কনটেমপোরারি টার্কিশ স্টাডিজের প্রধান এসরা ওজিউরেক বলেছিলেন, তুরস্কে ‘হ্যাঁ’ পক্ষ জয়যুক্ত হলে দেশটির সরকারকে সঠিক পথে রাখতে ভারসাম্য বজায়ের উপায় নষ্ট হয়ে যাবে। পার্লামেন্ট পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে পড়বে। ওজিউরেকের মতে, এরদোয়ান পরিষ্কারভাবে দক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী।

তুরস্ককে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে গত বছরের ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে। ওই বছরের জুলাই মাসে ওই অভ্যুত্থানের চেষ্টা কার্যত শুধু একটা ভিডিও বার্তা দিয়েই ভেস্তে দেন এরদোয়ান। এরপর দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেন প্রেসিডেন্ট। এই জরুরি অবস্থার মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়ানো হয়েছে। অভ্যুত্থানচেষ্টার জেরে স্কুলশিক্ষক থেকে শুরু করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, কর্মকর্তাসহ লাখো লোককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। সাংবাদিক ও নাগরিক অধিকারকর্মীসহ এরদোয়ানের হাজারো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী কারাবন্দী।