মহেঞ্জোদারোকে চেনাতে নতুন চেষ্টা

.
.

পাকিস্তানে সিন্ধু নদীর তীরে খাঁ খাঁ রোদে পোড়ে প্রাচীন নগর মহেঞ্জোদারোর ধ্বংসাবশেষ। এ প্রত্নস্থানে কর্মরত জার্মান গবেষক মাইকেল জ্যানসেন বলেন, ‘মিসরের কথা সবাই জানে। কিন্তু মহেঞ্জোদারো চেনে না। এই বাস্তবতা বদলানো দরকার।’
মহেঞ্জোদারোকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সবার মধ্যে পরিচিত করে তোলার চেষ্টায় জ্যানসেন সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চলে ওই প্রাচীন সমৃদ্ধ সভ্যতার যেটুকু নিদর্শন টিকে আছে, তা সংরক্ষণের উপায় খুঁজছেন তাঁরা।
সিরিয়ার প্রাচীন নগর পালমিরার ধ্বংসাবশেষ ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিরা যেভাবে গুঁড়িয়ে দিয়েছে, মহেঞ্জোদারোর ওপরও একই ধরনের হামলার আশঙ্কা আছে। সবচেয়ে হতাশার ব্যাপার হলো, পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ এর গুরুত্বের বিষয়ে অমনোযোগী। অথচ মহেঞ্জোদারো এক উন্নত সভ্যতার কেন্দ্রস্থল, বিশ্বের প্রাচীনতম শহরগুলোর একটি। সেখানকার মানুষ ফ্ল্যাশযুক্ত টয়লেট ব্যবহার করত। আর তাদের পানি সরবরাহ ও আবর্জনা নিষ্কাশনের এমন চমৎকার ব্যবস্থা ছিল, যা আধুনিক পাকিস্তানের অনেক শহরকেও টেক্কা দিতে পারে।
খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ অব্দের কাছাকাছি সময়ে সিন্ধু নদীর অববাহিকায় এখনকার ভারত ও পাকিস্তানের ভূখণ্ডে সিন্ধু সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল। মহেঞ্জোদারো সে সভ্যতারই অবদান। একসময় তারা রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যায়। প্রায় পাঁচ হাজার বছর পর আজকের প্রত্নতত্ত্ববিদেরা মনে করেন, ধ্বংসাবশেষ নিয়ে আরও বিশদ গবেষণায় সিন্ধু উপত্যকার মানুষের রহস্য উন্মোচন হতে পারে। তাঁরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, মহেঞ্জোদারোর ধ্বংসাবশেষ সংরক্ষণের ব্যবস্থা না করলে তা চিরতরে হারিয়ে যাবে। অবহেলা ও কালস্রোতে ইতিমধ্যে এর অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে।
এত উন্নত সভ্যতা ঠিক কী কারণে খ্রিষ্টপূর্ব ১৯০০ অব্দের দিকে আকস্মিকভাবে হারিয়ে গেল, তা এখনো রহস্য।