ফের সন্ত্রাসী হামলায় লন্ডনে নিহত ৬

লন্ডন ব্রিজে সন্ত্রাসী হামলার পর ঘটনাস্থলে জরুরি সেবা বিভাগের সদস্যরা। ছবি: এএফপি
লন্ডন ব্রিজে সন্ত্রাসী হামলার পর ঘটনাস্থলে জরুরি সেবা বিভাগের সদস্যরা। ছবি: এএফপি

ম্যানচেস্টারের পর এবার লন্ডন ব্রিজ এলাকায় সন্ত্রাসী হামলা হলো। স্থানীয় সময় শনিবার রাতের এই হামলায় নিহত হয়েছেন ছয়জন। পুলিশের গুলিতে সন্দেহভাজন তিন হামলাকারী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪৮ জন।

বিবিসির খবরে জানা যায়, লন্ডন ব্রিজে সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীরা একটি ভ্যান দ্রুতগতিতে ভিড়ের মধ্যে চালিয়ে দেয়। এ ছাড়া কাছাকাছি বারা মার্কেট এলাকায় সন্দেহভাজন কয়েকজন সন্ত্রাসী ছুরি নিয়ে সাধারণ লোকজনের ওপর হামলা চালায়।ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁ ও বার রয়েছে।

লন্ডনের অ্যাম্বুলেন্স সেবা সূত্রে জানা গেছে, কমপক্ষে ২০ জন আহতকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। যারা কম আহত তাঁদের ঘটনাস্থলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

লন্ডন ব্রিজ থেকে পালাচ্ছে আতঙ্কিত মানুষ। ছবি: রয়টার্স
লন্ডন ব্রিজ থেকে পালাচ্ছে আতঙ্কিত মানুষ। ছবি: রয়টার্স

দ্য ব্রিটিশ ট্রান্সপোর্ট পুলিশ বলছে, তাঁদের একজন কর্মকর্তা গুরুতর আহত হয়েছেন। মেট্রোপলিটন পুলিশ টুইটে লন্ডন ব্রিজ ও বারা মার্কেটের হামলাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বিবিসিকে জানান, লন্ডন ব্রিজে হামলার পর তাঁরা ভ্যান থেকে কয়েকজনকে বের হয়ে বারা মার্কেটের দিকে যেতে দেখেছেন। পরে ওই এলাকায় গুলির শব্দ শোনা যায়। কাছাকাছি সময়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে হামলাকারীর একটি ছবি পোস্ট করা হয়। তাতে দেখা যায়, একটি পানশালার বাইরে সন্দেহভাজন এক হামলাকারী মাটিতে পড়ে আছেন।

লন্ডন ব্রিজ এলাকার পানশালাগুলোর এক নিরাপত্তাকর্মী জানান, তিনি তিনজন হামলাকারীকে চারজনকে ছুরিকাঘাত করতে দেখেছেন।

হামলার পর মাথার ওপর হাত তুলে লন্ডন ব্রিজ এলাকা ছাড়ছে মানুষ। ছবি: রয়টার্স
হামলার পর মাথার ওপর হাত তুলে লন্ডন ব্রিজ এলাকা ছাড়ছে মানুষ। ছবি: রয়টার্স

হামলার সময় লন্ডন ব্রিজে অবস্থান করছিলেন বিবিসির সাংবাদিক হলি জোনস। তিনি বলেন, দ্রুতগতিতে একটি ভ্যান এসে কয়েকজনকে আঘাত করে। জোনস আরও বলেন, ভ্যানের চালক ডানদিকে ঘুরে যায়। এরপর পাঁচ থেকে ছয়জনকে ধাক্কা দেয়। আমার সামনে ভ্যানটি দুজনকে এবং পেছনে তিনজনকে ধাক্কা দেয়।

জোনস আরও বলেন, তিনি দেখেছেন পুলিশ একজনকে হাতকড়া পরিয়ে আটক করছে। আহতদের মধ্যে ফরাসি এক নারীও রয়েছেন বলে তিনি জানান।

হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তিনি এটিকে ভয়ংকর হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে জরুরি কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমবের রাড বলেন, এই হামলা ‘ভয়ংকর’। পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে যারা শনিবারের সন্ধ্যা উপভোগ করছিলেন তাঁদের লক্ষ্য করেই এই হামলা চালানো হয়েছে।

হামলার পর নিরাপত্তার জন্য বিশেষ চাদরে মুড়ে লন্ডন ব্রিজ এলাকা ছাড়ছেন দুই নারী। ছবি: রয়টার্স
হামলার পর নিরাপত্তার জন্য বিশেষ চাদরে মুড়ে লন্ডন ব্রিজ এলাকা ছাড়ছেন দুই নারী। ছবি: রয়টার্স

লন্ডনের মেয়র সাদিক খান বলেন, আমরা বিস্তারিত জানি না। তবে লন্ডনের সাধারণ জনগণ ও পর্যটকদের ওপর এটি কাপুরুষোচিত হামলা। শনিবার সন্ধ্যায় আনন্দ করার সময় তাঁদের ওপর এই হামলা চলে। তিনি এই হামলার নিন্দা জানান।

ম্যানচেস্টারে কনসার্টে আত্মঘাতী হামলার দুই সপ্তাহ পরেই আবার এই হামলার ঘটনা ঘটল। ম্যানচেস্টারের ওই হামলায় ২২ জন নিহত হন।

এর আগে মার্চ মাসে ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজে পথচারীদের ওপর গাড়ি চালিয়ে দেওয়ায় পাঁচজন নিহত হন। এ ছাড়া পার্লামেন্টের বাইরে পুলিশের এক কর্মকর্তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়।

থেরেসাকে ট্রাম্পের ফোন
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মেকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হামলার ঘটনা তদন্তে ও হামলাকারীদের বিচারে সব ধরনের সহায়তা দেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

noname
noname

লন্ডন হামলার কথা নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না করে ট্রাম্প টুইটে বলেন, আমাদের বুদ্ধিমান, সতর্ক ও কঠোর হতে হবে। বাড়তি নিরাপত্তার জন্য মুসলিম প্রধান দেশগুলোর যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন।