গ্রেনফেল টাওয়ারে আগুনের কারণ 'অবহেলা'

যুক্তরাজ্যের গ্রেনফেল টাওয়ারের আগুন ‘প্রতিরোধযোগ্য দুর্ঘটনা’ ছিল। স্থানীয় কাউন্সিল ও বিভিন্ন সময়কার সরকারের ‘বহু বছরের অবহেলার’ কারণে তা হয়েছে। লন্ডনের মেয়র সাদিক খান এ অভিযোগ করেন বলে বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়।

আগুনে হতাহত ব্যক্তিদের সেবাদানকারী একটি অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে সাদিক বলেন, এ অগ্নিকাণ্ড একটি জাতীয় দুর্যোগ। তাই এ ক্ষেত্রে জাতীয় পদক্ষেপ প্রয়োজন।

কেনসিংটন ও চেলসি কাউন্সিলের নেতারা বলেন, গত বুধবার এই আগুন লাগার পর থেকে কর্মকর্তারা ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছেন।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যাঁরা বাড়িঘর হারিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকে ৫ হাজার ৫০০ পাউন্ড দেওয়া হবে। প্রত্যেক বাড়ির মালিক নগদ ৫০০ পাউন্ড এবং ৫০০০ পাউন্ড তাঁদের অ্যাকাউন্টে দেওয়া হবে। গত শুক্রবার এই অগ্নিকাণ্ডে সহায়তার জন্য ৫ মিলিয়ন পাউন্ডের জরুরি সহায়তা তহবিল ঘোষণা করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর লন্ডনের নর্থ কেনসিংটন এলাকার গ্রেনফেল টাওয়ারে ২৪ তলা ভবনে আগুন লাগে। ভবনটির ১২০টি ফ্ল্যাটে ছয় শর বেশি লোক বাস করত বলে ধারণা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অন্তত ৫৮ জন নিহত হয়। বিবিসি ধারণা করছে, নিহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে ৭০ হতে পারে। হাসপাতালে এখনো ১৮ জন চিকিৎসাধীন, এর মধ্যে নয়জনের অবস্থা সংকটাপন্ন।

দুর্যোগ মোকাবিলা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে কেনসিংটন ও চেলসি কাউন্সিল। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, সরকারি কর্মীরা তেমন সহায়তা করেননি বা তথ্যও দেননি।

এরই মধ্যে একটি গ্রুপ ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের সঙ্গে দেখা করেছে। এই বেদনাদায়ক ঘটনার পর ভাড়াটে ব্যবস্থাপনা সংস্থার কোনো কর্মকাণ্ড না দেখে তারা এর সমালোচনা করেছে। তাদের ভাষ্য, এস্টেট ব্যবস্থাপনার প্রতি স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেক দিনের যে ক্ষোভ, তা প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। এই ব্যবস্থাপনার অবহেলার কারণে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে।

মেয়র সাদিক খানের কণ্ঠেও একই অভিযোগ। তিনি বলেন, লোকজন ক্ষুব্ধ। এটা শুধু অগ্নিকাণ্ডের পর কাউন্সিল ও সরকারের আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ার জন্য নয়, বরং বছরের পর বছর কাউন্সিলের অবহেলার কারণে। তাদের কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে, সাধারণ জনগণের উদ্বেগের জায়গাটা কাউন্সিল ও সরকার বোঝে না এবং তোয়াক্কাও করে না।

কেনসিংটন ও চেলসি কাউন্সিলের নেতা নিকোলাস পাজিট-ব্রাউন বলেন, তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভের বিষয়টি বুঝতে পারছেন। জনগণের পাশাপাশি কর্তৃপক্ষও জানতে চায়—কেন এই আগুন লাগল এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল।