থমকে গেল ব্রেক্সিট সমঝোতা

ব্রেক্সিট বিল হিসেবে যুক্তরাজ্য কী পরিমাণ অর্থ প্রদান করবে এমন প্রশ্নের কোনো সুরাহা না হওয়ায় থমকে গেছে ব্রেক্সিট সমঝোতা। পঞ্চম দফা বৈঠক শেষে গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পক্ষে প্রধান সমঝোতাকারী মিশেল বার্নিয়ে এ কথা জানান।

ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের সদস্যপদ প্রত্যাহার করে নেওয়ার বিষয়টি ব্রেক্সিট নামে পরিচিত। আর যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত থাকা ইইউ কর্মীদের পেনশন (অবসর ভাতা), যুক্তরাজ্য থেকে ইইউর বিভিন্ন এজেন্সির কার্যালয় সরিয়ে নেওয়ার খরচ এবং ইইউর বিভিন্ন প্রকল্পে যুক্তরাজ্যের ওয়াদাকৃত অর্থসহ ইইউর পাওনাকেই বলা হচ্ছে ব্রেক্সিট বিল বা বিচ্ছেদ বিল। যার পরিমাণ ৫০ থেকে ১০০ বিলিয়ন ইউরো পর্যন্ত হতে পারে বলে ধারণা।

আলোচনার শুরু থেকে যুক্তরাজ্য চেয়েছিল ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য সম্পর্ক নির্ধারণে আলোচনা করতে। কিন্তু ইইউর পক্ষ থেকে শর্ত দেওয়া হয়, যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত ইইউ নাগরিকদের অধিকার, ইইউর সদস্যদেশ স্বাধীন আয়ারল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যের অংশ নর্দান আয়ারল্যান্ড সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং ব্রেক্সিট বিল—এই তিনটি বিষয়ের সমঝোতায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হলেই কেবল ভবিষ্যৎ বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা শুরু হবে। উভয় পক্ষের প্রত্যাশা ছিল, ১৯ অক্টোবর থেকে অনুষ্ঠেয় দুই দিনের ইইউ সম্মেলনে ভবিষ্যৎ বাণিজ্য সম্পর্ক বিষয়ে আলোচনার অনুমোদন পাওয়া যাবে।

মিশেল বার্নিয়ে বলেন, ব্রেক্সিট বিলের পরিমাণ প্রকাশ করতে এখনো প্রস্তুত নয় যুক্তরাজ্য। যে কারণে ভবিষ্যৎ বাণিজ্য সম্পর্ক বিষয়ে আলোচনা শুরুর সুপারিশ করতে পারবেন না তিনি। আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় ইইউর পরবর্তী সম্মেলনের আগে যুক্তরাজ্য ব্রেক্সিট বিলের বিষয়ে সুস্পষ্ট সমঝোতায় আসতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। যুক্তরাজ্যের পক্ষে প্রধান সমঝোতাকারী দেশটির বেক্সিটবিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস ওই সংবাদ সম্মেলনে আলোচনা পরবর্তী ধাপে নিতে ইইউ বাকি ২৭ দেশের প্রতি আহ্বান জানান। ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা দূর করতে আসন্ন সম্মেলনে ইইউ ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

এদিকে ইইউর গোপন এক নথির বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আসন্ন সম্মেলনেই যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার রূপরেখা তৈরির বিষয়ে আলোচনা করবে ইইউ। তবে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেল, তারপর আলোচনা শুরু হবে।

বিবিসির ইউরোপ সংবাদদাতা কেভিন কনোলি বলেন, ব্রেক্সিট বিলের পরিমাণ প্রকাশের বিষয়টি সমঝোতার ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী কার্ড। সর্বোচ্চ অপেক্ষার পর এ কার্ড খেলতে চায় যুক্তরাজ্য।