এক নজরে কাতালোনিয়া সংকট

স্পেন থেকে পুরোপুরি পৃথক হতে স্বাধীনতা ঘোষণার পর কাতালোনিয়াবাসীর আনন্দ-উল্লাস। ছবি: রয়টার্স
স্পেন থেকে পুরোপুরি পৃথক হতে স্বাধীনতা ঘোষণার পর কাতালোনিয়াবাসীর আনন্দ-উল্লাস। ছবি: রয়টার্স

স্পেন থেকে পুরোপুরি পৃথক হতে আজ শুক্রবার স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে কাতালোনিয়া। পাল্টা জবাবে কাতালোনিয়ায় প্রত্যক্ষ শাসন জারি করেছে স্পেন। এর মধ্য দিয়ে কাতালোনিয়া সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে।

দেখে নেওয়া যাক কাতালোনিয়া সংকটের পূর্বাপর—

কাতালোনিয়া কোথায়?
স্পেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিত্তশালী একটি অঞ্চল কাতালোনিয়া। জনসংখ্যা ৭৫ লাখ। এর রাজধানী বার্সেলোনা। কাতালোনিয়ার নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, পার্লামেন্ট, জাতীয় পতাকা ও সংগীত আছে। এমনকি কাতালোনিয়ার নিজস্ব পুলিশ বাহিনী আছে এবং স্কুল ও স্বাস্থ্যসেবার মতো জন পরিষেবাগুলোও এই অঞ্চল নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করে। এই অঞ্চলের ইতিহাস প্রায় এক হাজার বছরের পুরোনো।

বিতর্ক কেন?
কেন্দ্রের বাধা উপেক্ষা করে ১ অক্টোবর গণভোটের আয়োজন করে কাতালোনিয়া। এতে ৯০ শতাংশ ভোটার কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার পক্ষে রায় দেন। এটি অনুমোদন করে কাতালোনিয়ার পার্লামেন্ট। স্পেনের সাংবিধানিক আদালত এই পার্লামেন্টকে বরখাস্ত করেছিল। স্পেন সরকার এই গণভোটকে বেআইনি ও অসাংবিধানিক হিসেবে অভিহিত করে এসেছে। এ থেকেই সংকটের শুরু।
ভোট দেওয়ার জন্য কাতালোনিয়ার অধিবাসীরা ভোটকেন্দ্রে যাওয়া চেষ্টা করলে তাতে বাধা দিয়েছিল স্পেনের জাতীয় পুলিশ বাহিনী। কাতালান কর্তৃপক্ষের দাবি, গণভোটে অংশ নেওয়া ভোটারদের মধ্যে ৯০ শতাংশের কিছু কম মানুষ স্বাধীনতার পক্ষে রায় দিয়েছে। যদিও মোট জনসংখ্যার মাত্র ৪৩ শতাংশ গণভোটে অংশ নিয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ কাতালান পার্লামেন্ট স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে। পার্লামেন্টে স্বাধীনতার পক্ষে ৭০টি ভোট পড়ে, বিপক্ষে পড়ে ১০ টি।

স্পেনের প্রতিক্রিয়া
স্পেনের সরকার বারবারই বলছে যে, কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার পক্ষে আয়োজিত ১ অক্টোবরের গণভোট অবৈধ ছিল। আজ শুক্রবার কাতালান পার্লামেন্টে স্বাধীনতা ঘোষণার প্রশ্নে ভোট হওয়ার কয়েক মিনিট আগে কাতালোনিয়া অঞ্চলে প্রত্যক্ষ শাসন জারি করার বিষয়টি স্পেনের সিনেট অনুমোদন করে। দেশটির সংবিধানের ১৫৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে জারিও করা হয় প্রত্যক্ষ শাসন।

এখন কী হবে?
এই সংকট সহিংস রূপ নেবে কি না—তা সময়ই বলে দেবে। কিন্তু এটি যে সংশ্লিষ্ট অঞ্চল ও সামগ্রিকভাবে স্পেনকে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, সেটি নির্দ্বিধায় বলে দেওয়া যায়। এতে করে ইউরোভুক্ত অঞ্চলে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। আর ব্রেক্সিটের (ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়া) পর আঞ্চলিক জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) আরেক সংকটের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। কারণ ইইউ চায় না স্পেন থেকে বেরিয়ে স্বাধীন হোক কাতালোনিয়া।

তথ্যসূত্র: বিবিসি