খুন-ধর্ষণ-লুট করেনি মিয়ানমারের সেনারা!

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের হত্যা, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া, ধর্ষণ ও লুটের সঙ্গে সেনাবাহিনীর কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। এসব অভিযোগ নিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্তের প্রতিবেদনে এ দাবি করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।

আজ মঙ্গলবার বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, গত ২৫ আগস্ট রাখাইনের বিভিন্ন পুলিশ তল্লাশিচৌকিতে একযোগে হামলার ঘটনার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ‘শুদ্ধি অভিযান’ শুরু করে। ব্যাপক দমন-পীড়নের মুখে লাখো রোহিঙ্গা যে পালিয়ে বাংলাদেশে গেছে, সে তথ্য-প্রমাণ বিবিসির কাছে আছে। জাতিসংঘও এটাকে ‘জাতিগত নিধনের প্রামাণ্য উদাহরণ’ বলেছে।

সেনাবাহিনীর এই প্রতিবেদনকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ‘দোষ ঢাকার চেষ্টা’ বলে অভিহিত করেছে। তারা সত্য যাচাইয়ে জাতিসংঘের কমিটিকে দেশটিতে অবাধে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।

রোহিঙ্গাদের প্রতি চরম দমন-পীড়নের অভিযোগের মধ্যে কড়া নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে নিয়ে যায় মিয়ানমার সরকার। তখন বিবিসির দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক প্রতিনিধি জনাথন হেড চারপাশে ধ্বংসযজ্ঞ দেখতে পান। দেশটি থেকে পালিয়ে এখন পর্যন্ত ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ফেসবুকে তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, কয়েক হাজার গ্রামবাসীর সাক্ষাৎকার নিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় সেনাসদস্যদের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ তারা পায়নি। বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরাই বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করেছে এবং তাদের হুমকিতেই হাজার হাজার মানুষ গ্রাম ছেড়ে চলে গেছে।

এ ছাড়া তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—
* সেনাবাহিনী কোনো নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেনি।
* কোনো নারীকে ধর্ষণ করা হয়নি, যৌন নিপীড়নের কোনো ঘটনাও ঘটেনি।
* গ্রামবাসীদের গ্রেপ্তার করে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি।
* বাড়িঘরে লুটপাট চালিয়ে মূল্যবান সামগ্রী লুট করার অভিযোগ সঠিক নয়।
* সেনাবাহিনী কোনো মসজিদে আগুন দেয়নি।
* কাউকে গ্রাম ছাড়তে বলা হয়নি, সেনাসদস্যরা কাউকে হুমকিও দেয়নি।
* বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার সঙ্গেও সেনাবাহিনী জড়িত নয়।