সেনারা ব্যবস্থা নিচ্ছে না উত্তেজনায় ইসলামাবাদ

কট্টরপন্থীদের অবস্থান ধর্মঘটে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ এবং অন্যতম শহর রাওয়ালপিন্ডি কার্যত অচল হয়ে রয়েছে ১৯ দিন ধরে। তাদের সরাতে নিরাপত্তা বাহিনী পদক্ষেপ নিলে গত শনিবারের সংঘর্ষ বাধে। এতে নিহত হন ছয়জন। এই অবস্থায় শনিবার রাতেই ডাকা হয়েছিল সেনাবাহিনী। কিন্তু গতকাল রোববার পর্যন্ত তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এর মধ্যে গতকালও বড় বিক্ষোভ করেছে ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দল। সব মিলিয়ে উত্তেজনাকর এক পরিস্থিতির মধ্যে আছে ইসলামাবাদ।

ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ এবং এর জের ধরে আইনমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে চলছে এই বিক্ষোভ। ইসলামাবাদে প্রবেশের প্রধান পথ ফাইজাবাদ মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছেন ধর্মীয় দল তেহরিক-ই-লাব্বায়িকের সমর্থকেরা। বছর দুই আগে প্রতিষ্ঠিত প্রায় অপরিচিত এই দলটির সঙ্গে যোগ দিয়েছে আরও কয়েকটি দল।

শনিবার নিরাপত্তা বাহিনী ধর্মীয় কট্টরপন্থীদের হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বাধে। এতে কমপক্ষে ছয়জন নিহত হন। আহত হন ২০০ লোক। আটক করা হয় দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে। কিন্তু সরে যাননি ধর্মীয় দলগুলোর সমর্থকেরা। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে অন্য বড় শহর করাচি, লাহোর ও পেশোয়ারে।

বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়, সম্প্রতি নির্বাচনী আইন সংশোধনের সময় জনপ্রতিনিধিদের শপথের একটি অংশে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (স.)-এর উল্লেখ বাদ পড়ার পর ধর্মীয় অবমাননার (ব্লাসফেমি) অভিযোগে আইনমন্ত্রী জাহিদ হামিদের অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ শুরু করে কট্টরপন্থীরা। যদিও এ ঘটনা একজন ক্লার্কের ভুলে হয়েছে জানিয়ে ক্ষমা প্রার্থনাও করেছিলেন মন্ত্রী।

ডন জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শনিবার রাতে ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডিতে সেনাবাহিনী তলব করা হয়। গতকাল সকালে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা সরকারকে সাহায্য করার জন্য ‘সম্পূর্ণ প্রস্তুত’। তবে তার আগে সুপ্রিম কোর্ট ও ইসলামাবাদ হাইকোর্টের গত সপ্তাহের নির্দেশনার আলোকে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি পরিষ্কার করতে হবে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া গতকাল প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহসান ইকবাল এবং আইএসআইয়ের মহাপরিচালক নাভিদ মুখতারের সঙ্গে বৈঠক করেন। এক সূত্র জানায়, সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, বিক্ষোভকারীদের সরাতে বল প্রয়োগ করা হবে না, বরং রাজনৈতিক সমঝোতার চেষ্টা করা হবে।