'অনার কিলিং'-এর শিকার পাকিস্তানের নব দম্পতি

পাকিস্তান
পাকিস্তান

পাকিস্তানের করাচিতে পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে (অনার কিলিং) স্বজনেরা এক নব দম্পতিকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ মঙ্গলবার ব্রিটিশ অনলাইন ইনডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিবারের সম্মতি না নিয়ে বিয়ে করার অভিযোগে গত ২২ নভেম্বর আবদুল হাদি (২৪) ও হাসিনা বিবি (১৯) নামের এক দম্পতিকে তাঁদের স্বজনেরা হত্যা করেন।

করাচির পুলিশ কর্মকর্তা কাশিম হামিদ বলেন, করাচির মমিনাবাদ এলাকার আবদুল হাদি ও হাসিনা তাঁদের পরিবারের সম্মতি না নিয়ে বিয়ে করেন। এতে তাঁদের পরিবার ক্ষুব্ধ হয়। পরে ২২ নভেম্বর পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে দুই পরিবারের লোকজন তাঁদের হত্যা করে গোপনে কবর দিয়ে দেন। গত রোববার স্থানীয় একটি কবরস্থান থেকে ওই দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে আবদুল হাদির বাবাসহ দুই পরিবারের ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হাসিনার বাবা পলাতক রয়েছেন।

পুলিশ কর্মকর্তা কাশিম হামিদ আরও বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা নব দম্পতিকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, ওই নব দম্পতি পরিবারের সম্মতি না নিয়ে বিয়ে করায় পশতু সংস্কৃতির অমর্যাদা করেছেন। এ কারণে ‘জিরগা’ বা তাঁদের স্থানীয় কাউন্সিলের নির্দেশে ছুরি দিয়ে তাঁরা ওই নব দম্পতিকে হত্যা করেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানে প্রতিবছর পরিবারের তথাকথিত সম্মান রক্ষার্থে প্রায় এক হাজার নারী স্বজনদের হাতে নিহত হন।

গত বছরের অক্টোবরে ‘অনার কিলিং’ (পরিবারের সম্মান রক্ষার নামে হত্যা) বিরোধী আইন পাস করেছে পাকিস্তান। এ ধরনের ঘটনায় আইনের যেসব ফাঁক গলে অপরাধী পার পেয়ে যেত, তা বন্ধ করে দেশটির জাতীয় পরিষদে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ওই আইন পাস হয়। এতে হত্যাকারীর যাবজ্জীবন সাজার বিধান রাখা হয়েছে। হত্যার শিকার হওয়া ব্যক্তির পরিবার ক্ষমা করে দিলেও হত্যাকারী ওই সাজা থেকে মুক্তি পাবে না। দেশটির এক ফেসবুক তারকা তাঁর ভাইয়ের হাতে খুন হওয়ার তিন মাস পর ‘অনার কিলিং’ (পরিবারের সম্মান রক্ষার নামে হত্যা) বিরোধী আইন হলো। ওই হত্যাকাণ্ডের পর বিশ্বব্যাপী বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।