জিম্বাবুয়েতে 'অভ্যুত্থান' মন্ত্রিসভা!

সেনা হস্তক্ষেপে রবার্ট মুগাবেকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর জিম্বাবুয়ের নতুন প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগওয়া তাঁর মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছেন জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের। এটিকে ‘অভ্যুত্থান’ মন্ত্রিসভা বলে সমালোচনা করছে দেশটির বিরোধী দলগুলো।

শপথ নেওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় শুক্রবার নিজের মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেন নানগাগওয়া। এতে জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের রাখা হয়েছে। মুগাবেকে হটিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখার পুরস্কার হিসেবে সেনা কর্মকর্তাদের মন্ত্রিসভায় রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ১৫ নভেম্বর টেলিভিশনে সেনাবাহিনী জিম্বাবুয়ের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল সিবুসিসো ময়ো। তাঁকে নতুন মন্ত্রিসভায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কৃষি এবং ভূমিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এয়ার মার্শাল পেরান্স সিরিকে।
আগে সমালোচিত হওয়ার পরও সাবেক অর্থমন্ত্রী প্যাট্রিক চিনামাসাকে পুনরায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

পেরান্স সিরি জিম্বাবুয়েতে ব্যাপক সমালোচিত এবং অনেকের কাছে আতঙ্কের নাম। উত্তর কোরিয়ায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ‘৫ ব্রিগেডের’ সাবেক কমান্ডার তিনি। ১৯৮৩ সালে দেশটির মাতাবেলেল্যান্ডে গণহত্যার জন্য অনেকে তাঁকে দায়ী করেন। তখন ওই এলাকায় ২০ হাজার লোককে হত্যা করা হয়েছিল।
সাবেক ফার্স্ট লেডি গ্রেস মুগাবের অনুগত ব্যক্তিদের নতুন মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি। তবে ক্ষমতাসীন দল জানু-পিএফের অনেক নেতাকে মন্ত্রিসভায় রাখা হয়েছে, যাঁরা সাবেক প্রেসিডেন্ট মুগাবের অনুগত।

এমারসন নানগাগওয়া প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর অনেকে নতুন করে শুরুর প্রত্যাশা করলেও মন্ত্রিসভার মুখগুলো দেখে তাঁরা হতাশ।
লন্ডনভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক অ্যালেক্স মাগাইসা টুইটারে তাঁর অ্যাকাউন্টে লেখেন, অধিকাংশ পর্যবেক্ষকের ধারণা, মন্ত্রিসভা গঠনের মাধ্যমে সেনা কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে কিংবা দেশের ক্ষমতাকাঠামোতে কর্তৃপক্ষ আরও সুসংহত অবস্থান নিয়েছে।

১৫ নভেম্বর সেনাবাহিনী দেশের ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে মুগাবের ওপর পদত্যাগে চাপ বাড়তে থাকে। পরে ২১ নভেম্বর অভিশংসনের মুখে পদত্যাগ করেন মুগাবে। তাঁকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ২৪ নভেম্বর নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন নানগাগওয়া।