ঠেকানো যেত ম্যানচেস্টার হামলা!

যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার অ্যারেনায় মে মাসে হামলার পর সেখান থেকে বেরিয়ে আসা আতঙ্কিত কয়েকজন কিশোরীর সঙ্গে কথা বলছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। ছবি: রয়টার্স
যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার অ্যারেনায় মে মাসে হামলার পর সেখান থেকে বেরিয়ে আসা আতঙ্কিত কয়েকজন কিশোরীর সঙ্গে কথা বলছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। ছবি: রয়টার্স

গত মে মাসে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারের একটি কনসার্ট হলে যে আত্মঘাতী সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে, সেটি ঠেকানো যেত বলে এক তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

আজ মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলাকারী সালমান আবেদি (২২) গোয়েন্দাদের নজরে ছিলেন। কিন্তু তাঁর সম্পর্কে তথ্যগুলো ভিন্নভাবে বিবেচনা করা হলে ওই হামলার আগেই তাকে আটকে দেওয়া যেত। আবেদিকে ঠেকানোর সুযোগ নষ্ট করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

চলতি বছরের ২২ মে ম্যানচেস্টার অ্যারিনায় লিবিয়ান বংশোদ্ভূত সালমান আবেদি আত্মঘাতী হামলা চালালে ২২ জন নিহত হয়। মার্কিন সংগীত শিল্পী আরিয়ানা গ্রান্ডি ওই দিন সেখানে গান করছিলেন। ২০০৫ সালে লন্ডনের পাতাল রেলে হামলার পর ম্যানচেস্টারের হামলা যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী ঘটনা ছিল সেটি।

চলতি বছর যুক্তরাজ্যে চারটি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। ওয়েস্টমিনস্টার, ম্যানচেস্টার, লন্ডন ব্রিজ এবং ফিন্সব্যারি পার্কে এসব হামলার ঘটনা ঘটে। একের পর এক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা এম আই ফাইভ ও পুলিশ বাহিনীর দক্ষতা প্রশ্নের মুখে পড়ে। এসব হামলায় মোট ৩৬ জন নিহত হয়।

পুলিশ এবং এম আই ফাইভ সন্ত্রাসী ঘটনাগুলোতে নিজেদের গলদ অনুসন্ধানে অভ্যন্তরীণ তদন্ত করে থাকে। এই তদন্ত যথাযথ হচ্ছে কি-না তা নজরদারিতে সরকারের পক্ষে কাজ করেন আইনজীবী ডেভিড অ্যান্ডারসন। প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছর সন্ত্রাসী হামলার ৯টি সক্রিয় পরিকল্পনা ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে গোয়েন্দারা।

ডেভিড অ্যান্ডারসন তার মন্তব্যে বলেন, আবেদির বিষয়ে তথ্যগুলো যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হলে ম্যানচেস্টারের হামলা হয়তো ঠেকানো যেত।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সালমান আবেদি গোয়েন্দাদের নজরদারিতে ছিলেন। এরপর ২০১৫ অক্টোবরে আবারও তিনি গোয়েন্দাদের জালে ছিলেন। কিন্তু এরপর তাঁর প্রতি আগ্রহ কমিয়ে দেওয়া হয়।

চলতি বছর ২২ মে হামলার চার দিন আগে আবেদি লিবিয়া থেকে ফেরেন। কিন্তু তাঁর প্রতি কোনো সতর্কতা না থাকার কারণে বিনা বাধায় তাকে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, লন্ডন ব্রিজের কাছে বারা মার্কেটে হামলার নেতৃত্বদানকারী খররুম বাট এবং ওয়েস্টমিনস্টারে হামলাকারী খালিদ মাসুদও একসময় গোয়েন্দাদের নজরদারিতে ছিলেন।

মঙ্গলবার সংসদে এই তদন্ত প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (হোম সেক্রেটারি) অ্যাম্বার রাড। তিনি বলেন, চূড়ান্ত বিচারে হামলার দায় কাপুরুষোচিত হামলাকারীদেরই।

ম্যানচেস্টার পুলিশ বলেছে, পেশাগত দক্ষতা অর্জনে তারা শিক্ষা নেওয়ার মানসিকতা অব্যাহত রাখবে।