জাতিসংঘে তোপের মুখে যুক্তরাষ্ট্র

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে সদস্যরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা। জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বীকৃতির পর এই বৈঠকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ৮ ডিসেম্বর ২০১৭, জাতিসংঘ সদরদপ্তর, নিউইয়র্ক। ছবি: রয়টার্স
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে সদস্যরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা। জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বীকৃতির পর এই বৈঠকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ৮ ডিসেম্বর ২০১৭, জাতিসংঘ সদরদপ্তর, নিউইয়র্ক। ছবি: রয়টার্স

জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বীকৃতির পর শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি মার্কিন মিত্র ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও জাপান এই ঘোষণাকে অসহযোগিতামূলক হিসেবে বর্ণনা করেছে।

নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরাষ্ট্র ১৫টি। শুক্রবারের বৈঠকে ১৪টি রাষ্ট্রের সমালোচনার তিরে বিদ্ধ হয়েছে অপর রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র। তবে মার্কিন কর্তৃপক্ষ এবারই প্রথম মিত্র ইসরায়েলকে রক্ষার চেষ্টা করছে না। এর আগেও বহুবার ইসরায়েলের পক্ষে সাফাই গেয়েছে।

বিবিসি জানিয়েছে, জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি এসব সমালোচনার জবাবে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি পাল্টা অভিযোগ তুলে বলেছেন, জাতিসংঘ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি রক্ষা করার বদলে তা নষ্টের চেষ্টা করছে। তিনি ইসরায়েলের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেছেন, বহু বছর ধরেই জাতিসংঘ ইসরায়েলের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণে অন্যতম কেন্দ্রের ভূমিকা রাখছে। তা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে ক্ষতি ডেকে এনেছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এ দিনে যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনামুখর ছিল মিত্র যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সুইডেন, ইতালি ও জাপান। এক যৌথ বিবৃতিতে দেশগুলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, এই সিদ্ধান্ত নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় এবং ওই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে না।

নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র এমন অবস্থান নিল যখন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণার তীব্র বিরোধিতা ও নিন্দা জানানো হয় বৈঠকে।

ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত কারেন পিয়ার্স তাঁর বক্তব্যে আবারও বিষয়টির মীমাংসায় দুই দেশের আলোচনার প্রতি জোর দেন। ফরাসি রাষ্ট্রদূত ফ্রাসোয়াঁ দেলাত বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এখন ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত কীভাবে দুই-রাষ্ট্র সমাধানের পথে সহায়ক হবে। মিসরের রাষ্ট্রদূত আমর আবদেল লতিফ আবুল আত্তা বলেন, মার্কিন সিদ্ধান্তের ফলাফল হবে ভয়াবহ।

জাতিসংঘে ফিলিস্তিনির প্রতিনিধি রিয়াদ মনসুর আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনে ইসরায়েলকে মদদ দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করেন। তিনি বলেন, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে প্রতীয়মান হচ্ছে, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট নিরসনে যুক্তরাষ্ট্র আর মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় নেই।

ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকি গতকাল শনিবার জানিয়েছেন, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিষয়ে তাঁরা নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব তোলার চেষ্টা করবেন।