নাগরিকত্ব নিয়ে সোচ্চার বরাকের বাঙালিরা

জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন আসামের বরাক উপত্যকার বুদ্ধিজীবীরা। তাঁদের অভিযোগ, ইচ্ছা করেই নাগরিক পঞ্জি থেকে বাঙালিদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এর পেছনে বিজেপির ইন্ধন রয়েছে বলেও তাঁরা অভিযোগ করেছেন।

শুক্রবার শিলচর বঙ্গভবনে আয়োজন করা হয় এক নাগরিক সম্মেলনের। এনআরসির নামে বাঙালি বিদ্বেষের প্রতিবাদে ওই সম্মেলনে ডাক দেওয়া হয়। সম্মেলনে আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানানো হয়।

আসাম সরকারকে পেছন থেকে আত্মসমর্পণকারী আলফা জঙ্গি এবং সারা আসাম ছাত্র সংস্থা (আসু) চালাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য তপোধীর ভট্টাচার্য। ভাষণে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, বাঙালি বিদ্বেষী ছাত্র আন্দোলনের একসময় নেতৃত্বে ছিলেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ নিজেই। সেই বিদ্বেষ এখনো রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

এনআরসির প্রথম খসড়া তালিকায় আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য তপোধীর ভট্টাচার্যসহ অনেকেরই নাম নেই। বাদ পড়েছে বরাকের চার বিধায়কের নামও। এ প্রসঙ্গে বরাকের বুদ্ধিজীবীরা সভায় মন্তব্য করেন, রাজ্য থেকে অ-আসামিদের বাদ দিতেই এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন এনএরসির কর্তারা। এর বিরুদ্ধে সমবেতভাবে বরাকবাসী আন্দোলনে নামবে বলে জানান তিনি।

সম্মেলন থেকে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ বিশিষ্টজনদের কাছে স্মারক পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নাগরিক সম্মেলনে তপোধীর ভট্টাচার্য ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বরাকের বিশিষ্ট মণিপুরি বুদ্ধিজীবী নয়নচাঁদ সিনহা, সাময়িক প্রসঙ্গ-এর সম্পাদক তৈমুররাজা চৌধুরী, চিকিৎসক কুমারকান্তি দাস, প্রসেনজিত বিশ্বাস, দুলাল মিত্র প্রমুখ।

আসামের রাষ্ট্রীয় নাগরিক পঞ্জিতে নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদন পড়েছিল ৩ কোটি ২৯ লাখ। গত রোববার প্রকাশ করা পঞ্জির খসড়ায় উঠে আসে ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষের নাম। নাম ওঠেনি ১ কোটি ৩৯ লাখ মানুষের। অর্থাৎ আবেদন করা ৪২ দশমিক ৫৯ শতাংশ মানুষের নাম বাদ পড়ে। এই খসড়া প্রকাশের পর তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যের বরাক উপত্যকার বাঙালিদের মধ্যে। বাঙালিরা বলছেন, নাম না ওঠা ব্যক্তিদের মধ্যে বিপুলসংখ্যক বাঙালি রয়েছেন। আসাম থেকে বাঙালিদের বিতাড়নের পাঁয়তারা চলছে বলে বাঙালিরা অভিযোগ করেন এবং ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের হুমকি দেন।