দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ

মিয়ানমারে রয়টার্সের জন্য কাজ করা সাংবাদিক ওয়া লোন ও কিয়াও সো।
মিয়ানমারে রয়টার্সের জন্য কাজ করা সাংবাদিক ওয়া লোন ও কিয়াও সো।

মিয়ানমারে গ্রেপ্তার হওয়া বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। ঔপনিবেশিক আমলের এই আইনের অধীনে আনা অভিযোগে ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

মিয়ানমারে রয়টার্সের জন্য কাজ করা সাংবাদিক ওয়া লোন (৩১) এবং কিয়াও সোকে গত ১২ ডিসেম্বর অন্যতম বাণিজ্যিক শহর ইয়াঙ্গুন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাঁদের রিমান্ডে নেওয়া হয়। মিয়ানমারের এই দুই নাগরিককে মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা। সর্বশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির কাছে চিঠি লিখেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চলাকালে সেখানে রয়টার্সের হয়ে কাজ করছিলেন ওই দুই সাংবাদিক। নির্যাতনের তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন করার কারণে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

বিচারক বলেন, বুধবার ওই দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের (দাপ্তরিক গোপনীয়তা আইন) অধীনে অভিযোগ আনে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা এমন তথ্য এবং নথি সংগ্রহ করেছেন, যা ‘শত্রুদের কাজে লাগতে পারে’।

গতকাল তাঁদের ইয়াঙ্গুনে আদালতে হাজির করে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দায়ের করে কর্তৃপক্ষ। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। দুই সাংবাদিককে দেখতে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁদের স্বজনেরা।

আদালতে কিয়াও সোকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করুন।’ আর ওয়া লোন আদালতকে জানান, তাঁর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা।

ওই ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন করতে যাওয়া সাংবাদিকেরা আদালতের বাইরে কালো ব্যাজ ধারণ করে প্রতিবাদ জানান। তাঁদের বহন করা ব্যানারে লেখা ছিল, ‘সাংবাদিকতা কোনো অপরাধ নয়’।

পরে দুই সাংবাদিকের স্বজন জানিয়েছেন, পূর্ব থেকে পরিকল্পনা এবং অনুসরণ করে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিয়াও এবং ওয়া লোন একটি রেস্তোরাঁয় দুই পুলিশ সদস্যের সঙ্গে রাতের খাবার খান। সেখান থেকে বের হওয়ার পর তাঁদের তুলে নেওয়া হয়।