৯৬ বছর বয়সী যুদ্ধাপরাধীর দণ্ডাদেশ বহাল

যুদ্ধাপরাধী অসকার গ্রোয়েনিং। ছবি: সংগৃহীত
যুদ্ধাপরাধী অসকার গ্রোয়েনিং। ছবি: সংগৃহীত

জার্মানির সর্বোচ্চ শাসনতান্ত্রিক আদালত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পোল্যান্ডের কুখ্যাত আশউইৎজ বন্দীশিবিরের হিসাবরক্ষক হিসেবে কর্মরত ৯৬ বছর বয়সী অসকার গ্রোয়েনিংয়ের দণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন। 

জার্মানির লুনেবুর্গ শহরের আদালত ২০১৫ সালে আশউইৎজ বন্দীশিবিরের তিন লাখ যুদ্ধবন্দী হত্যায় সহযোগিতার দায়ে অসকার গ্রোয়েনিংয়ের চার বছরের দণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন। লুনেবুর্গ শহরে অসকার গ্রোয়েনিংয়ের বিচার চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা যুদ্ধবন্দীরাসহ মোট চারজন সাবেক যুদ্ধবন্দী আদালতে সাক্ষ্য দেন। চার বছর আগে আদালতে এই সাক্ষীদের মধ্য একজন বলেছিলেন, আমি জানি গ্রোয়েনিং বলবেন, তিনি কিছুই জানতেন না বা একজন সাধারণ কর্মচারী ছিলেন মাত্র। কিন্তু তিনিও আমাদের পরিজনদের হত্যায় পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন।
সাবেক সেই যুদ্ধবন্দীরা গ্রোয়েনিংকে শনাক্ত করে বলেছিলেন, বন্দীশিবিরে আনা মানুষদের বাছাই করার যে মঞ্চ ছিল সেখানে তিনি দাঁড়িয়ে থাকতেন। সেই মঞ্চ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার পর ঠিক করা হতো, কোন বন্দীকে হত্যার জন্য গ্যাস চেম্বারে প্রবেশ করানো হবে এবং কোনো বন্দীদের শ্রমদাস হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
লোয়ার সাক্সেনি প্রদেশের ছোট শহর লুনেবুর্গের কাছে বসবাসরত যুদ্ধাপরাধী ২০১৫ সালে লুনেবুর্গ শহরের আদালতে বলেছিলেন, কাজে যোগ দেওয়ার পূর্বে তিনি আশউইৎজ শিবিরে গ্যাস চেম্বার ও যুদ্ধবন্দীদের গণহত্যার বিষয়টি তিনি জানতেন না। গণহত্যায় সরাসরি সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারটি তিনি অস্বীকার করেন। তবে তিনি যুদ্ধবন্দীদের সঙ্গে থাকা টাকা-পয়সা ও মূল্যবান অলংকার সংগ্রহ ও পরে তা কোষাগারে জমা করতেন বলে স্বীকার করেন।

বার্ধক্যজনিত কারণে অসকার গ্রোয়েনিংয়ের চার বছরের দণ্ডাদেশ মওকুফের জন্য তিনি জার্মানির সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেছিলেন। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আদালত তাঁর আপিল প্রত্যাখ্যান করলে সর্বশেষ আদালত হিসেবে জার্মানির শাসনতান্ত্রিক আদালতে আপিল করেন। কিন্তু কার্লসরুয়ে শহরের জার্মানির শাসনতান্ত্রিক আদালতও আজ বুধবার দণ্ডাদেশ বহাল রাখেন।আদালত তাঁকে লুনেবুর্গের কাছে উলজেন কারাগারে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।