ব্রিটিশদের খাওয়ার সময় নেই

গবেষণা বলছে, ২০ শতাংশ ব্রিটিশ পরিবারে খাবারের টেবিলই নেই
গবেষণা বলছে, ২০ শতাংশ ব্রিটিশ পরিবারে খাবারের টেবিলই নেই

আধুনিক জীবনের বাস্তবতা বড়ই কঠিন হয়ে দেখা দিয়েছে ব্রিটিশদের জন্য। কাজের ব্যস্ততায় খাওয়ার সময়ও পাচ্ছে না তারা! সারা দিনের প্রধান ভোজ, রাতের খাবারে (ডিনার) গড়পড়তা তারা সময় পায় মাত্র ২১ মিনিট। এ সময় পরিবারের অন্য সদস্যদেরও পাচ্ছে না খাবার টেবিলে। পেলেও সেটুকু সময়ে ভাগ বসাচ্ছে মুঠোফোন, কম্পিউটার, টেলিভিশন।

গবেষণাতেই পাওয়া গেছে এসব তথ্য। চলতি মাসের শুরুর দিকে পাঁচ দিন ধরে গবেষণাটি করা হয়েছে ২১৬৪ জন ব্রিটিশ নাগরিকের ওপর। একটি চেইন ফুড শপের জন্য গবেষণাটি করেছে বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ওপিনিয়ন ম্যাটারস’। ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে গত শনিবার।

জরিপে অংশ নেওয়া লোকজন বলেছেন, পরিবারের সদস্যদের ক্রমে বেড়ে যাওয়া ব্যস্ততা আর কাজের ভিন্ন সময়সূচিই নাকি খাবারের টেবিলের এমন চেহারা তৈরি করে দিয়েছে। ৫৭ শতাংশ জানিয়েছেন, প্রতি রাতে তাঁরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খাওয়ার সুযোগ পান না। আর ৫৫ শতাংশ বলেছেন, তাঁদের খাওয়ার সময়টুকুতেও ভাগ বসায় স্মার্টফোন, কম্পিউটার বা টেলিভিশন। খাবার টেবিলই নেই ২০ শতাংশ পরিবারে।

দিনে তিন বেলা বাসায় খাবারের আয়োজন বেশ দুর্লভ হয়ে পড়েছে দেশটিতে। মাত্র ২ শতাংশ পরিবারে নিয়মিত এই ব্যবস্থা থাকে।

তবে এই বাস্তবতায় বেশ হতাশ ব্রিটিশরা। এর পরিবর্তনও চায় তারা। জরিপে অংশ নেওয়া ৪৭ শতাংশ জানিয়েছেন, প্রতিদিন অন্তত একবেলাও যদি পরিবারের অন্যদের সঙ্গে বসে খাওয়ার সময় পাওয়া যেতে, তাহলে তাঁরা খুশি হতেন।

অক্সফোর্ডভিত্তিক সোশ্যাল ইস্যু রিসার্চ সেন্টারের প্যাট্রিক আলেক্সান্ডার বলেন, এই জরিপের মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, একসঙ্গে বসে খাওয়ার সামাজিক গুরুত্ব পরিবারগুলো বুঝতে শুরু করেছে। তারা উপলব্ধি করছে, একসঙ্গে খাওয়ার ব্যাপারটা তাদের জীবনকে সুখী করে তুলতে পারে এবং একাত্মতাবোধের বিকাশ ঘটাতে পারে।

সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রিটিশ নাগরিকদের একটি বড় অংশ একাকিত্ববোধে ভুগছে। তাদের সহায়তা করতে গত বৃহস্পতিবারই একটি মন্ত্রণালয় গড়ার ঘোষণা দিয়ে সেখানে মন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।