ছুটি না নেওয়ায় জরিমানা!

বেকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সারা রাত ধরে কাজ করানোর অভিযোগ আছে ফ্রান্সে। এ কারণে সেই দেশে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বেশ কড়া নজরদারি চালাচ্ছে। এএফপির ছবি প্রতীকী।
বেকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সারা রাত ধরে কাজ করানোর অভিযোগ আছে ফ্রান্সে। এ কারণে সেই দেশে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বেশ কড়া নজরদারি চালাচ্ছে। এএফপির ছবি প্রতীকী।

সপ্তাহের সাত দিনই কি কাজ করা যায়? একটু ছুটি না পেলে কি চলে! চাকরিজীবীরা তো চাতক পাখির মতো বসে থাকেন সপ্তাহান্তের ওই একটি দিনের জন্য। ছুটির দিনের জন্য জমে থাকে নানা কাজ। আবার অনেকে শুধু অবকাশেই কাটিয়ে দেন আকাঙ্ক্ষিত দিনটি।

তবে শুধু চাকরিজীবীরা নন। ব্যবসায়ীরাও ছুটি কাটাতে চান। সারাক্ষণ কাজ করতে কাঁহাতক ভালো লাগে, বলুন? অথচ ফ্রান্সের ব্যবসায়ী সিডরিচ ভাইভার ছুটি চান না! তিনি অবিরত কাজ করে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাদ সেধেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। ছুটি নিতে না চাওয়ায় ৩ হাজার ৬০০ ডলার জরিমানা করা হয়েছে তাঁকে।

দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, ফ্রান্সে নিয়ম আছে, প্রতি সপ্তাহে একদিন ছুটি নিতেই হবে। এমনকি নিজে ব্যবসায়ী হলেও ছুটি নিতে হবে। প্যারিসের ১২০ মাইল দক্ষিণ-পূর্বে লুজিনি-সার-বারসের লেক বেকি এলাকায় থাকেন সিদরিচ ভাইভার। সেটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা। সেখানে তাঁর একটি বেকারি আছে।

গ্রীষ্মকালে লেক বেকিতে পর্যটকের বেশ ভিড় থাকে। এই সময়টাতে সপ্তাহের প্রতি দিনই রমরমা ব্যবসা হয় সিদরিচের। তাঁর প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা সরকারি আইন অনুযায়ী সপ্তাহে একদিন ছুটি নেন। কিন্তু ব্যবসা ভালো চলছিল বলে সম্প্রতি সাত দিনই কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন মালিক সিদরিচ। আর তা করতে গিয়েই কর্তৃপক্ষের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ছুটি না নেওয়ায় জরিমানা দিতে হয় ৩ হাজার ৬০০ ডলার।

বেকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সারা রাত ধরে কাজ করানোর অভিযোগ আছে ফ্রান্সে। এ কারণে সেই দেশে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বেশ কড়া নজরদারি চালাচ্ছে। মূলত শ্রমিকেরা যেন শোষণের শিকার না হোন-সেটি নিশ্চিত করতেই ছুটি না নিলে জরিমানার আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।

ওই শহরের মেয়র ক্রিশ্চিয়ান ব্রানলে বলেন, ‘এ ধরনের আইন আমাদের এলাকার ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত করছে। যখন পর্যটকের ভিড় থাকে তখন এ ধরনের আইন ব্যবসায় বাধা তৈরি করে। পর্যটকেরা যে সময়ে সেবা চান, তখনই তা সরবরাহ করতে দেওয়া উচিত।’

ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে আরও বলা হয়েছে, অনেক ভোক্তা এ ধরনের আইনকে ‘বিরক্তিকর’ বলে অভিহিত করেছেন। এরই মধ্যে সপ্তাহে টানা সাত দিন কাজ করার অধিকার চেয়ে আন্দোলনে নেমেছেন অনেকে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে করা এ ধরনের এক আবেদনে সাক্ষর করেছেন পাঁচ শরও বেশি মানুষ।