সারকোজির দুর্গতি 'খোদার গজব'

আহমেদ গাদ্দাফ আল-দাম। ছবি: এপি
আহমেদ গাদ্দাফ আল-দাম। ছবি: এপি

ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজির বর্তমান দুর্গতিকে ‘খোদার গজব’ বলে অভিহিত করেছেন লিবিয়ার প্রয়াত নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির চাচাতো ভাই।

গতকাল বৃহস্পতিবার আহমেদ গাদ্দাফ আল-দাম নামে গাদ্দাফির এক চাচাতো ভাই ওই মন্তব্য করেন। বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

অবৈধ নির্বাচনী তহবিল নিয়ে ওঠা অভিযোগের তদন্তে সারকোজিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। ২০০৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণায় অবৈধ তহবিল ব্যবহার করা নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।

মুয়াম্মার গাদ্দাফির ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন গাদ্দাফ আল-দাম। তিনি এখন মিসরের রাজধানী কায়রোতে অবস্থান করছেন।

ন্যাটো-সমর্থিত অভ্যুত্থানে ২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতন হয়। একই বছরের অক্টোবরে তিনি নিহত হন। তাঁর এই করুণ পরিণতির পেছনে ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সারকোজির একটা ভূমিকা ছিল। সেই প্রসঙ্গে উল্লেখ করে সারকোজির বর্তমান দুর্গতি সম্পর্কে গাদ্দাফ আল-দাম বলেন, ‘খোদাকে ধন্যবাদ। এটা খোদার শাস্তি। কারণ, তিনিই (সারকোজি) প্রথম লিবিয়ায় বিমান হামলা শুরু করেছিলেন।’

আরব বসন্তের জেরে ২০১১ সালের শুরুর দিকে লিবীয় জনগণ রাস্তায় নেমে আসে। তাদের দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেন মুয়াম্মার গাদ্দাফি। তিনি দেশটির বেনগাজী শহরে সেনা ও ট্যাংক পাঠান। শহরটি অবরুদ্ধ করে রেখেছিল বিদ্রোহীরা। বিদ্রোহীদের ঘরে ঘরে গিয়ে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন গাদ্দাফি।

গণহত্যার আশঙ্কায় সারকোজি ও অন্য পশ্চিমা নেতারা ন্যাটোকে দিয়ে গাদ্দাফি বাহিনীর ওপর বিমান হামলা শুরু করেন। পরে এই হামলা আরও জোরদার করা হয়। ন্যাটোর হামলার সুবাদে বিদ্রোহীদের হাতে গাদ্দাফির পতন হয়। একপর্যায়ে গাদ্দাফি ধরা পড়েন। তাঁকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।

২০০৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সারকোজির জয়ের পেছনে প্রয়াত লিবীয় নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির অর্থের একটি তহবিল ভূমিকা রেখেছে, এ অভিযোগে ২০১৩ সালে এক বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু করে ফ্রান্স সরকার।

গত জানুয়ারিতে সন্দেহভাজন এক ফরাসি ব্যবসায়ীকে যুক্তরাজ্যে গ্রেপ্তার করা হয়। লন্ডনের এক আদালতে হাজির করার পর জামিনে বেরিয়ে যান তিনি। তাঁর মাধ্যমেই গাদ্দাফির ওই অর্থ সারকোজির নির্বাচনী শিবিরে পৌঁছায় বলে ধারণা করেন তদন্ত কর্মকর্তারা।

২০১২ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট থাকা সারকোজি কোনো অবৈধ নির্বাচনী তহবিল গ্রহণের অভিযোগ বরাবর অস্বীকার করে আসছেন। তিনি লিবিয়ার কাছ থেকে অবৈধ অর্থ পাওয়ার অভিযোগকে অদ্ভুত বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

গাদ্দাফির সরকার লাখ লাখ ইউরো সারকোজিকে দিয়েছে বলে যে অভিযোগ রয়েছে, সে বিষয়ে অবগত থাকার কথা জানিয়েছেন গাদ্দাফ আল-দাম।