ভেনেজুয়েলায় পালাতে গিয়ে ৬৮ হাজতি নিহত

হতাহতের খবর পেয়ে হাজতিদের স্বজনেরা ছুটে আসেন। ছবি: রয়টার্স
হতাহতের খবর পেয়ে হাজতিদের স্বজনেরা ছুটে আসেন। ছবি: রয়টার্স

ভেনেজুয়েলায় পুলিশের হাজত থেকে পালাতে গিয়ে আগুন লাগার ঘটনায় ৬৮ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার দেশটির কারাবোবো রাজ্যের পুলিশ সদর দপ্তরে এ ঘটনা ঘটে।

প্রধান কৌঁসুলি তারেক উইলিয়াম সাব টুইটারে বলেছেন, এ ঘটনা তদন্তে চারজন কৌঁসুলি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এ উইনডো অন ফ্রিডমের প্রধান কার্লোস নেইতো বলেন, হাজত ভেঙে পালাতে গিয়ে হাজতিরা মাদুরে আগুন ধরিয়ে দেন এবং নিরাপত্তারক্ষীদের বন্দুক চুরি করেন। পরে এ আগুন ছড়িয়ে পড়ে। অনেক দগ্ধ হয়ে, অনেকে ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মারা গেছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্য থানায় ঘুরতে আসা দুই নারী রয়েছেন।

কারাবোবো রাজ্যের গভর্নর রাফায়েল লাকাভা ‘আতঙ্ক’ প্রকাশ করেছেন। তিনি টুইটারে বলেছেন, এ ঘটনার কারণ ও এর জন্য দায়ী কে বা কারা, তা বের করতে গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হবে।

ঘটনার খবরে হাজতিদের স্বজনেরা ছুটে আসেন। তাঁরা পুলিশ সদর দপ্তরে জোর করে ঢোকার চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁদের ছোড়া পাথরের আঘাতে এক পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তবে রয়টার্সের খবরে বলা হয়, সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।

টুইটারে পোস্ট করা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনাস্থল ঘিরে রাখা পুলিশদের কাছে তথ্য জানতে চাইছেন স্বজনেরা।

স্থানীয় গণমাধ্যমকে দোরা ব্লানকো নামের এক নারী বলছেন, ‘আমি এক অভাগী মা। আমার ছেলে এক সপ্তাহ ধরে এখানে আছে। তারা (পুলিশ) আমাকে কোনো কিছুই বলছে না।’

ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি বন্দী রাখার কারণে ভেনেজুয়েলার কারাগারগুলোর কুখ্যাতি আছে। বন্দীদের কাছে অস্ত্র ও মাদক পাওয়া যায়। সেখানে দাঙ্গার ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে।

সরকারি কর্মকর্তা জেসাস সানতানদার বলেন, এ ঘটনায় কারাবোবো রাজ্যে শোক পালন করা হবে। কতজন নিহত হয়েছেন, তা ফরেনসিক চিকিৎসকেরা নির্ণয় করছেন। একজন পুলিশ কর্মকর্তার পায়ে গুলি লেগেছে। তবে তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। আর ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা আগুন নিভিয়েছেন।

দশকের পর দশক ধরে ভেনেজুয়েলার অনেক কারাগার অরাজক অবস্থার মধ্য দিয়ে চলছে। সেখানে আইন নেই বললেই চলে। কয়েদিরা প্রকাশ্যে মেশিনগান ও গ্রেনেড চালান এবং মাদক নেন। আর নিরাপত্তারক্ষীরা থাকেন ক্ষমতাশূন্য অবস্থায়।