জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন কার্লোস পুজেমন

জার্মানির স্লিসভিগ হলস্টাইন রাজ্যের ছোট শহর নয়ে মুনস্টারের জেলখানার সামনে কাতালোনিয়ার পতাকা হাতে কার্লোস পুজেমনের এক সমর্থক। ছবি: সংগৃহীত
জার্মানির স্লিসভিগ হলস্টাইন রাজ্যের ছোট শহর নয়ে মুনস্টারের জেলখানার সামনে কাতালোনিয়ার পতাকা হাতে কার্লোস পুজেমনের এক সমর্থক। ছবি: সংগৃহীত

স্পেনের কাতালোনিয়ার ‘ক্ষমতাচ্যুত’ ও বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা কার্লোস পুজেমন শর্তসাপেক্ষে জামিনে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন জার্মানির একটি আদালত। আজ শুক্রবার কোনো একসময় তিনি জেল থেকে মুক্তি পাবেন বলে আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

এর আগে গত ২৫ মার্চ ফিনল্যান্ড থেকে সড়কপথে বেলজিয়াম যাওয়ার পথে জার্মানির সর্ব উত্তরের স্লিসভিগ হলস্টাইন রাজ্যে গ্রেপ্তার হন তিনি।

স্লিসভিগ হলস্টাইন রাজ্যের প্রধান সরকারি কৌঁসুলি স্পেন সরকারের হাতে পুজেমনকে তুলে দেওয়ার বিষয়টি নাকচ করে কিছু শর্তে কার্লোস পুজেমনকে জামিনের কথা জানান। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে—আগামী দুই মাসের মধ্য আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার আগে তিনি নয়ে মুনস্টার শহর ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে পারবেন না। প্রতি সপ্তাহে পুলিশের কাছে তাঁকে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে। জার্মান ছেড়ে অন্য দেশে যেতে পারবেন না বা জার্মানিতে অন্য কোথাও গেলে তা পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করতে হবে। বাসস্থান বদল করলেও তা পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করতে হবে এবং পুলিশ প্রশাসন তলব করলে হাজিরা হতে হবে। এসব শর্তের বাইরে কার্লোস পুজেমনকে জামিনের জন্য ৭৫ হাজার ইউরো আদালতে জমা দিতে হবে।

স্পেন সরকার কার্লোস পুজেমনের বিরুদ্ধে যে দুই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল, জার্মানির আদালত তার একটি আমলে নিয়েছেন। দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিলেও কাতালোনিয়ার রাজ্যের স্বাধীনতার প্রশ্নে স্পেনের সংবিধান লঙ্ঘন করে গণভোট আয়োজনের জন্য কার্লোস পুজেমনকে স্পেনে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি নাকচ করে দেন ওই আদালত। তবে আদালত দুই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্পেন সরকারের কাছে আরও তথ্য-প্রমাণ চেয়েছেন।

স্পেন সরকারের আইনমন্ত্রী রাফায়েল কাটালা জার্মানির আদালতে কার্লোসের জামিনের বিষয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও জার্মানির আদালতের এই রায় তাঁরা মেনে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

কাতালোনিয়ার আঞ্চলিক সরকারের প্রধান কার্লোস পুজেমন অনেক আগে থেকেই কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার প্রবক্তা হিসেবে পরিচিত। গত বছর গণভোটে কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার পক্ষে রায় এলে স্পেন কর্তৃপক্ষ পুজেমনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, রাষ্ট্রদ্রোহ ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তোলে। একই সঙ্গে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট ওই গণভোটকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেন।

স্পেন সরকার কার্লোস পুজেমনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে তিনি গত বছর বেলজিয়ামের ওয়াটারলুতে স্বেচ্ছানির্বাসনে যান। পরবর্তী সময়ে স্পেন সরকার এই নেতাকে গ্রেপ্তার করতে ইউরোপীয় আদালতের শরণাপন্ন হন। তবে স্পেন সরকারের সংবিধান লঙ্ঘনের অপরাধে কাতালোনিয়া রাজ্যের স্বাধীনতাকামী এই নেতার ১৫ বছর জেল হতে পারে।