সিরিয়ায় সামরিক বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকারী ইসরায়েল

সিরিয়ায় একটি সামরিক বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। এতে অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার জন্য সিরিয়া ও তাদের মিত্র রাশিয়া ইসরায়েলকে দায়ী করেছে। এ নিয়ে ইসরায়েল কোনো মন্তব্য করেনি।

সংবাদ সংস্থা সানা জানায়, গতকাল রোববার দিবাগত গভীর রাতে হোমস শহরের কাছে তাইফুর বিমানঘাঁটিতে কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। ওই ঘাঁটি টি৪ নামে পরিচিত।

সামরিক বাহিনীর একটি সূত্রের বরাত দিয়ে সানা জানায়, সিরিয়ার বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে প্রতিহত করেছে। লেবাননের আকাশসীমা ব্যবহার করে ইসরায়েল এফ১৫ যুদ্ধবিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছোড়ে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েল আটটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি ভূপাতিত করা হয়েছে। আর বাকি তিনটি বিমানঘাঁটির পশ্চিম দিকে পড়ে।

ইসরায়েল খুব কমই আঘাত হানার বিষয়টি স্বীকার করে। তবে ২০১২ সাল থেকে দেশটি বেশ কয়েকবার সিরিয়ায় আঘাত হেনেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে টি৪ বিমানঘাঁটিসহ সিরিয়ায় বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে।

বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত শহর পূর্ব গৌতার দৌমায় রাসায়নিক হামলার অভিযোগ আসার পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ সৃষ্টি হওয়ার পরপরই ক্ষেপণাস্ত্র হামলাটি চালানো হলো। সিরিয়ার স্বেচ্ছাসেবী ত্রাণ সংস্থা হোয়াইট হেলমেটসকে উদ্ধৃত করে বিবিসির খবরে বলা হয়, দৌমায় সরকারি বাহিনীর হামলায় ৭০ জন নিহত হয়েছে 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকালের ঘটনায় সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ‘পশু’ বলে অভিহিত করেন। তিনি হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, সিরিয়া ও তাঁর মিত্র ইরান ও রাশিয়াকে এর জন্য ‘বড় মূল্য দিতে হবে’।

ট্রাম্প ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ ওই দিনই এক যৌথ বিবৃতি দেন। তাঁরা হামলার অভিযোগের বিষয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়ে ‘সমন্বিতভাবে একটি শক্তিশালী, যৌথ প্রতিক্রিয়া’ জানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

সংবাদ সংস্থা সানা তাইফুর বিমানঘাঁটির হামলাকে প্রাথমিকভাবে ‘সন্দেহভাজন মার্কিন হামলা’ বলে উল্লেখ করলেও পরে যুক্তরাষ্ট্রের নাম সরিয়ে নেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পেন্টাগন এক বিবৃতিতে জানায়, এই সময় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সিরিয়ায় কোনো বিমান হামলা চালায়নি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এরই মধ্যে আমরা বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। একই সঙ্গে সিরিয়ায় যারা এই রাসায়নিক হামলা চালিয়েছে, তাদের ধরতে চলমান কূটনৈতিক তৎপরতায় সমর্থন জানাচ্ছি।’

গত বছর সিরিয়ায় বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত খান সেইখৌন শহরে রাসায়নিক হামলার ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার সায়ারাত সামরিক বিমানঘাঁটিতে ৫৯ টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল।