সিরিয়ায় সেনা পাঠাতে চায় সৌদি আরব

আন্তর্জাতিক জোটের অংশ হিসেবে সিরিয়ায় সেনাসদস্য পাঠাতে চায় সৌদি আরব। ছবি:এপি
আন্তর্জাতিক জোটের অংশ হিসেবে সিরিয়ায় সেনাসদস্য পাঠাতে চায় সৌদি আরব। ছবি:এপি

আন্তর্জাতিক জোটের অংশ হিসেবে সিরিয়ায় সেনাসদস্য পাঠাতে চায় সৌদি আরব। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করেছে দেশটি। রিয়াদে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেসের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবায়ের এ কথা জানিয়েছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি আরব বাহিনী গঠন করতে চান। এটি জানার পরই সৌদি আরবের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা এল।

গতকাল মঙ্গলবার আদেল আল জুবায়ের বলেন, ‘সেনা মোতায়েনের এই প্রস্তাব নতুন নয়। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকেও সৌদি আরব একই প্রস্তাব দিয়েছিল। আমরা বিষয়টি নিয়ে এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। সিরিয়ায় সেনা পাঠানোর বিষয়ে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকেই এ নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’

এর আগে ২০১৬ সালে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সিরিয়ায় সেনা পাঠাতে প্রস্তুত বলে ঘোষণা করেছিল সৌদি আরব।

২০১৪ সালের শুরু থেকে আইএসকে হটাতে বিমান হামলায় অংশ নিয়েছিল সৌদি আরব। তবে স্থল অভিযানে সেনা মোতায়েন বন্ধ রেখেছিল দেশটি।

এর আগে ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি আরব বাহিনী গঠন করতে চাচ্ছেন। যাতে সৌদি আরব ও আমিরাতের সেনারাও অংশ নেবেন। মূলত সিরিয়ায় মার্কিন সেনাদের স্থলাভিষিক্ত করতেই তিনি এ বাহিনী গঠন করতে চাচ্ছেন।

তবে ট্রাম্পের নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন আশা করছেন, মিসরও এ বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হবে।

তবে সৌদি পরিকল্পনা নিয়ে খুবই সতর্ক রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। সৌদি বাহিনীর সক্ষমতা নিয়ে তাঁদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে।
এই মুহূর্তে সিরিয়ায় দুই হাজার মার্কিন সৈন্য রয়েছে বলে পেন্টাগন জানিয়েছে।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাহিনীর বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র হামলার অভিযোগ তুলে গত শুক্রবার রাতে দেশটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, হামলায় তিনটি দেশই সর্বাধুনিক প্রযুক্তির অস্ত্র ব্যবহার করেছে। লোহিত সাগরে অবস্থান করা মার্কিন যুদ্ধজাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র বি-১ ল্যান্সার বোমারু উড়োজাহাজও ব্যবহার করেছে। পেন্টাগনের একটি সূত্র জানিয়েছে, সিরিয়ার তিনটি স্থানকে লক্ষ্য করে মোট ১০৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে কমপক্ষে ৫৯টি টমাহক মিসাইল। এ ছাড়া বি-১ ল্যান্সার বোমারু উড়োজাহাজ থেকে নিক্ষেপ করা হয় ১৯টি স্ট্যান্ডঅফ মিসাইল।

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সিরিয়ায় তিন দেশের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনায় বেশির ভাগ মিত্রদেশের সমর্থন পেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাইরের বিশ্বের প্রতিক্রিয়াও মিশ্র। তবে নিজেদের অঞ্চলে এ হামলা নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে আরব বিশ্ব। সম্মেলনে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান ওই অঞ্চলে ইরানের ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের’ তীব্র নিন্দা জানান।

সৌদি আরব ও তার মিত্ররা সিরিয়ায় হামলার ঘটনাকে সমর্থন দিচ্ছে। তবে ইরাক ও লেবানন এর নিন্দা জানিয়েছে। আরব বিশ্বের বাইরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ন্যাটোসহ যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররাও সিরিয়ার হামলাকে সমর্থন করেছে।
তবে সিরিয়ার মিত্র রাশিয়া বলেছে, সিরিয়ার বৈধ সরকারকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে তাদের সহায়তার সময় এ হামলা খুবই নিন্দনীয়।