দিনে দেড় লাখ টন খাবার নষ্ট করে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা প্রতিদিন দেড় লাখ টন খাবার নষ্ট করেন। বুধবার এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। প্রতীকী ছবি: রয়টার্স
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা প্রতিদিন দেড় লাখ টন খাবার নষ্ট করেন। বুধবার এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। প্রতীকী ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা প্রতিদিন দেড় লাখ টন খাবার নষ্ট করেন। বুধবার এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের একজন নাগরিক প্রতিদিন ৪২২ গ্রাম বা এক পাউন্ড খাবার নষ্ট করে।

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় তিন কোটি একর জমিতে উৎপাদিত খাদ্য নষ্ট হয়। এই জমির পরিমাণ দেশটির মোট কৃষিজমির ৭ শতাংশ। নষ্ট হয় সেচের প্রায় ৪ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন গ্যালন পানি।

গবেষণাভিত্তিক প্রকাশনা প্লস ওয়ান এই গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, নষ্ট হওয়া মোট খাদ্যের ৩৯ শতাংশই হলো ফলমূল ও শাকসবজি। এ ছাড়া ১৭ শতাংশ হলো দুগ্ধজাত খাবার, ১৪ শতাংশ মাংস ও শস্যদানা আছে ১২ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কিছু খাবার বেশ কম নষ্ট হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে স্ন্যাকস, টেবল অয়েল, ডিম দিয়ে তৈরি খাবার, ক্যানডি ও কোমল পানীয়।

প্রতিবেদনের সহকারী লেখক ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ভারমন্টের সহকারী অধ্যাপক মেরেডিথ নাইলস। তিনি এএফপিকে বলেন, ‘উচ্চ মানের পাঠ্যসূচিতে অবশ্যই ফলমূল ও সবজি থাকতে হয়। অথচ এ ধরনের খাবারই সবচেয়ে বেশি নষ্ট হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং এ ধরনের খাদ্যাভ্যাস মেনে চললেই সবচেয়ে বেশি লাভ হয়। খাবার নষ্টের বিষয়টি নিয়ে আমাদের আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন।’

প্লস ওয়ানের এই প্রতিবেদনটি সরকারি তথ্য-উপাত্ত ও জরিপের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে ২০০৭ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত পাওয়া সরকারি তথ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে পরিমাণ খাবার দেশটিতে নষ্ট করা হয়, তা প্রতিটি মার্কিন নাগরিকের প্রতিদিনের গড় ক্যালরির ৩০ শতাংশের সমান এবং যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ ও কৃষকদের ওপর এর প্রভাব ‘গুরুত্বপূর্ণ’।

গবেষকেরা বলছেন, নষ্ট হওয়া এই খাবার উৎপাদনের জন্য ৭৮০ মিলিয়ন পাউন্ড কীটনাশক ও ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন নাইট্রোজেন সার ব্যবহার করা হচ্ছে। অর্থাৎ এই বিপুল পরিমাণ কীটনাশক ওষুধ ও সারের ব্যবহারে কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

গবেষক দলের প্রধান জাক কনরাড বলেন, ‘খাবার নষ্ট হওয়ার এই বিষয়টির বহুমাত্রিক প্রভাব রয়েছে। এর সামগ্রিক প্রভাব বিবেচনা করলে বোঝা যাবে যে বৈশ্বিক খাদ্যসংকটের ক্ষেত্রে এর প্রভাব কতটুকু।’