পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনে আর হস্তক্ষেপ করবেন না হাইকোর্ট

পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে জটিলতা এখনো কাটেনি। গতকাল মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা আর পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে কোনো হস্তক্ষেপ করতে চান না।

বিরোধী দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য এক দিনের সময় বাড়ায়। এই দিন ছিল সোমবার। সেদিনই বিরোধী দলগুলো মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে ফের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বাধার সম্মুখীন হয়। এ নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ঘটে। প্রাণ হারায় দুজন। এরপরই ফের বিজেপি, কংগ্রেস, বাম দল এবং পিডিএস পৃথক পৃথকভাবে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করলে আদালত জানিয়ে দেন, তাঁরা আর পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে চান না।

তবে পাশাপাশি এ কথাও বলেছেন, নির্বাচন অবাধ করতে বিভিন্ন বিরোধী দলের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করতে হবে। একই সঙ্গে হাইকোর্ট জানিয়ে দেন, হোয়াটসঅ্যাপে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী প্রার্থীদের মনোনয়ন বৈধ করতে হবে। এবং এটা করা না হলে হাইকোর্ট নির্বাচন বাতিল করে দেবে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন ওই মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে।

কবে নির্বাচন হবে, এ ব্যাপারে এখনো দিন-তারিখ ঠিক করে উঠতে পারেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রাজ্য সরকার চাইছে রমজানের আগেই ১৪ কিংবা ১৫ মে একটি তারিখে নির্বাচন সেরে নিতে। কিন্তু রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা ভেবে নির্বাচন কমিশন চাইছে দুটি কিংবা তিনটি তারিখে নির্বাচন সম্পন্ন করতে। ফলে, এ নিয়ে সমঝোতা হতে পারেনি রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের মধ্যে। আজ বুধবার এই তারিখ নির্ধারণের জন্য ফের বৈঠকে বসছে রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন কমিশন রাজ্যে অবাধ নির্বাচন করতে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগের দাবি করলে তাও খারিজ করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকার চাইছে রাজ্যের পুলিশ দিয়ে নির্বাচন করতে।

এই রাজ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪৮ হাজার ৬৫০টি আসন, পঞ্চায়েত সমিতির ৯ হাজার ২১৭টি আসন এবং জেলা পরিষদের ৮২৫টি আসনে নির্বাচন হচ্ছে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে বলা হয়েছে, এর মধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে তৃণমূল মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে ৫৯ হাজার ৭৩৬ জন প্রার্থী। বিজেপি দিয়েছে ২৮ হাজার ৬৯৬ প্রার্থী, সিপিএম দিয়েছে ১৭ হাজার ৯০৪ জন এবং কংগ্রেস দিয়েছে ৭ হাজার ৬৪৯ প্রার্থী।

পঞ্চায়েত সমিতির আসনে তৃণমূল দিয়েছে ১২ হাজার ৮৬০ প্রার্থী, বিজেপি দিয়েছে ৬ হাজার ৩৫১ প্রার্থী, সিপিএম দিয়েছে ৪ হাজার ৫০৯ জন এবং কংগ্রেস দিয়েছে ১ হাজার ৮০৭ জন প্রার্থী।

জেলা পরিষদের আসনের জন্য তৃণমূল দিয়েছে ১ হাজার ৮৫ জন, বিজেপি ৮৩২ জন, সিপিএম ৫৬৮ জন এবং কংগ্রেস দিয়েছে ৪৩০ জন প্রার্থী।