আনা ফ্রাঙ্কের দিনলিপির লুকানো সেই দুই পাতা

আনা ফ্রাঙ্ক
আনা ফ্রাঙ্ক

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঘটনায় আলোচিত ইহুদি কিশোরী আনা ফ্রাঙ্ক। ১৯৪৭ সালে প্রকাশিত আনার দিনলিপি বহু দিন আগ থেকেই ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যের নথি। এই দিনলিপি নিয়ে মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। এবার এই দিনলিপির এমন একটি অংশ উন্মোচিত হয়েছে, যাতে আগ্রহ আরও বেড়েছে।

সম্প্রতি আনার দিনলিপির লুকানো দুটি পৃষ্ঠা প্রকাশিত হয়েছে। পৃষ্ঠা দুটি বাদামি কাগজে ঢাকা থাকায় এত দিন জানা যায়নি এখানে কী লেখা আছে। অবশেষে জানা গেল, এখানে আছে ‘অশ্লীল কৌতুক’ আর যৌনতা নিয়ে কিশোরী আনার ভাবনার কথা। এসব লেখা প্রমাণ করে, আনা আর দশটা সাধারণ কিশোর-কিশোরীর মতোই ছিল।

দিনলিপির এই লেখার ওপর তারিখ আছে ১৯৪২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। সে সময় আনার বয়স ছিল ১৩ বছর। কৈশোরে পা দেওয়া এই বয়সীদের মনে যৌনজীবন নিয়ে ভয়ের পাশাপাশি ব্যাপক কৌতূহলের সৃষ্টি হয়। সঙ্গে থাকে ‘নিষিদ্ধ’ বিষয় আড়াল করার প্রবণতা। আনাও তার ব্যতিক্রম ছিল না। ওই লেখাগুলো সম্ভবত সে কারণেই আনা বাদামি কাগজে ঢেকে দিয়েছিল।

২০১৬ সালে ওই লুকানো পৃষ্ঠাগুলোর ছবি তোলা হয়েছিল। নতুন ধরনের ইমেজিং কলাকৌশল ব্যবহার করে গবেষকেরা সেটা পড়েছেন। পাঠোদ্ধারের মূল কাজটি করেন নিওড ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফ্রাঙ্ক ভ্যান ভ্রিয়। তাতে দেখা যায় যে আনা লিখেছেন, ‘আমি এই নষ্ট পাতাগুলো ব্যবহার করব অশ্লীল কৌতুক লেখার জন্য।’ যে চারটি কৌতুক আনা জানত, এখানে সে তা লিখেছে। এ ছাড়া সেখানে যৌনশিক্ষা-বিষয়ক কিছু কথাবার্তা লেখা আছে। অন্য কারও সঙ্গে যৌনতা বিষয়ে তার কথা বলার কল্পনাও এখানে লেখা আছে। বাবা যৌনকর্মীদের নিয়ে যেগুলো বলেছিলেন, সেগুলোও দিনলিপির পাতায় ঠাঁই পেয়েছে।

নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে আনা ফ্রাঙ্ক হাউস জাদুঘরের রোনাল্ড লিওপোল্ড বলেছেন, ‘আনা খুব সাধারণভাবে যৌনতা সম্পর্কে লিখেছে। দিনলিপির পাতায় থাকা কৌতুকগুলো পড়লে হাসি আসবেই।’